সামান্থার বিয়ের পোশাকের এই ভোলবদলের কারণ প্রকাশ্যে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
ছিল বিয়ের পোশাক, হয়ে গেল প্রতিশোধের পোশাক। গত বছর পোশাকের আমূল পরিবর্তনের কারণে শিরোনামে এসেছিলেন অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। ২০২১ সালে দক্ষিণী অভিনেতা নাগা চৈতন্যের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর ২০২৪-এ নিজের বিয়ের পোশাক আবার গায়ে তুলেছিলেন ‘ফ্যামিলি ম্যান ২’-এর অভিনেত্রী। কিন্তু বিয়ের সময়ে যে পোশাক ছিল মায়াবী, রূপকথার মতো, ফুলেল সাদা গাউন, সে পোশাকই রং বদলে হয়ে যায় কালো। গাউনের হাতা উধাও হয়ে গিয়ে অফ-শোল্ডার হয়ে যায়। যেন তখন যা বলার ছিল, তার উল্টো কিছু বলতে চাইছে নতুন এই পোশাক। একই পোশাকে সামান্থার দুই পোজ়ও যেন ছিল বিপরীতধর্মী। ‘ওয়েডিং ড্রেস’ হয়ে যায় ‘রিভেঞ্জ ড্রেস’।
সে সময়ে এই ড্রেস নিয়ে নানাবিধ চর্চা চলে। পরের গাউনটি ডিজ়াইন করেছিলেন পোশাকশিল্পী ক্রেশা বাজাজ। সম্প্রতি দু’জনেই এই পোশাকের নেপথ্য কাহিনি, উদ্দেশ্য নিয়ে কথা বলেন। যে গল্পটি সময়ের, যে গল্পটি ক্ষমতায়নের, যে গল্পটি শক্তির, যে গল্পটি নতুন পথচলার।
‘ওয়েডিং ড্রেস’ হয়ে যায় ‘রিভেঞ্জ ড্রেস’। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
২০১৭ সালে বিয়ে হয় নাগা-সামান্থার। বিয়ের ছবিতে গাউন পরে নায়িকাকে হাসিমুখে ছবি তুলতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু ২০২১ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের। এবং তিক্ততায় পরিণত হয় একদা প্রেমের সম্পর্ক। দু’জনে দু’জনের মুখোমুখি হন না বলেই জানা যায়। তার পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অভিনেত্রী শোভিতা ধুলিপালার সঙ্গে বিয়ে হয় নাগার। কিন্তু এই পোশাক তৈরি হয় অনেক আগেই। বিবাহবিচ্ছেদের পরই। কিন্তু কেন এমন রূপান্তর, জানালেন ক্রেশা।
ক্রেশার বক্তব্য, এ পোশাক কেবল একটি জামা নয়। যা আগে ছিল স্মৃতিমেদুর, আবেগঘন যাত্রাপথের চিহ্ন, পরে হয়ে ওঠে নতুন কিছুর সূচনা। এই গোটা যাত্রাপথের গল্পকে অন্য মোড়ক বলতে চেয়েছিলেন সামান্থা। অতীতকে মুছে ফেলা এর উদ্দেশ্য ছিল না। বরং নতুন ভাবে আলিঙ্গন করতে চেয়েছিলেন নায়িকা। ক্রেশা সে দায়িত্ব পালন করে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে করেন। অতীতের চিহ্ন বদলে ফেলা নিয়ে সামান্থার ভাবনা নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে।
সামান্থার মতে, বিবাহবিচ্ছেদের পর মহিলাদের যে ভাবে ‘ব্যবহৃত’ তকমা দিয়ে দেওয়া হয়, যে ভাবে মহিলাদের মনে করানো হয়, তাঁরা ব্যর্থ, তাঁদের লজ্জা পাওয়া উচিত, সেই গোটা বক্তব্যের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিবাদ ছিল পোশাকের এই ভোলবদল। যে পোশাক আসলে ‘ব্যবহৃত’। সামান্থা তাঁর কালো গাউনটিকে প্রতিশোধের পোশাক বলতে চান না। অনেকে সে সময়ে ওই পোশাকটিকে ‘রিভেঞ্জ ড্রেস’ তকমা দিয়েছিল বটে, কিন্তু অভিনেত্রী জানাচ্ছেন, আপাত ভাবে তেমন মনে হলেও আসলে এর উদ্দেশ্য খুব ব্যক্তিগত। তাঁর রূপকথার গল্পের শেষটা যেমনটি কল্পনা করেছিলেন, তেমন ছিল না। কিন্তু তা নিয়ে দুঃখ করার পক্ষপাতী নন সামান্থা। বিচ্ছেদের যন্ত্রণাকে আলিঙ্গন করে নতুন পথে চলতে চেয়েছেন। অর্থাৎ, শেষ থেকে শুরুর বার্তা দিতে চেয়েছিলেন অভিনেত্রী।