চুলের জন্য কোন চা ভাল? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
শীতের দিনে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা যেমন যেমন শরীর-মন তরতাজা করে তেমনই হাল ফেরাতে পারে চুলেরও। তবে ধোঁয়া ওঠা নয়, ব্যবহার করতে হবে ঠান্ডা চা। চা যে শুধুই মৃদু উত্তেজক পানীয় তা নয়, এর অনেক গুণাগুণও আছে।
চায়ে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ক্যাফিন, পলিফেলনের মতো উপাদান। যা চুলের স্বাস্থ্যরক্ষায় নানা ভাবে কাজে আসে। তা ছাড়া, কেশচর্চায় চা-পাতার ব্যবহার মোটেও নতুন নয়।
কিন্তু চায়েরও তো ধরন রয়েছে। গ্রিট টি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ভাল। তা কি চুলের জন্য ভাল, না কালো চা চুলে মাখলেই হবে?
গ্রিন টি
অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর গ্রিন টি। কালো চায়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং পুষ্টিগুণ মেলে এতে। এতে রয়েছে পলিফেনলসের মতো অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট যা দূষণ বা সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মির হাত থেকে চুল বাঁচায়। এতে রয়েছে প্রদাহনাশক উপাদান। চুলের বৃদ্ধির জন্য গ্রিন টি অত্যন্ত ভাল।
• গ্রিন টি-তে থাকা ক্যাটেচিন চুলের ক্ষতি আটকায়। ফলিকলগুলিতে বেশি পরিমাণে পুষ্টি এবং অক্সিজেন সরবরাহ করে, ফলে নতুন চুল গজায়। চুলের বৃদ্ধিও ভাল হয়।
• এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বা প্রদাহনাশক এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী রয়েছে যা মাথার ত্বকের জ্বালা, খুশকি এবং অতিরিক্ত তেল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
• গ্রিন টি-তে ভিটামিন বি২ এবং ভিটামিন ই থাকে, যা চুলের গোড়া মজবুত করে, ডগা ফাটা কমায় এবং রুক্ষ-নির্জীব চুলে প্রাকৃতিক জেল্লা ফেরাতে সাহায্য করে।
• এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট চুলের কোষগুলিকে রক্ষা করে, যা চুল অকালে সাদা হওয়ার প্রবণতা কমাতে পারে।
কালো চা
সবুজ চা–পাতা নানা রকম প্রক্রিয়াকরণের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর কালো বর্ণ ধারণ করে। প্রক্রিয়াকরণের ফলে এই চা-পাতার অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট কিছুটা কমে যায়, তবে এতেও বেশ কিছু গুণ থাকে। বিশেষত সাদা বা ধূসর চুল রং করতে কালো চায়ের লিকার ব্যবহার হয়।
• ডিএইচটি বা ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে চুল ঝরতে পারে। হরমোনটির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রেখে চুল ঝরা কমাতে সাহায্য করে চায়ে থাকা উপাদান।
• কালো চায়েও মেলে ক্যাফিন, যা চুলের ফলিকল উদ্দীপিত করে চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
ঈষদুষ্ণ জলে চা-পাতা ভিজিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। তার পর চা ছেঁকে নিন। শ্যাম্পু করার পর চুল ধুয়ে মুছে নিন। ভিজে চুল চা ঢেলে হালকা মাসাজ করুন। তার পরে আবার ভাল করে চুল ধুয়ে নিন। সপ্তাহে একদিন করলেও রুক্ষ চুলের শ্রী ফিরবে।
বেছে নেবেন কোনটি?
সবুজ চায়ে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট বেশি মেলে। চুল ঝরার সমস্যা থাকলে এটি ব্যবহার করুন। আবার চুলের বর্ণ ধূসর হয়ে গেলে, লালচে ভাব আনতে চাইলে, বাড়তি ঔজ্জ্বল্য আনতে হলে কালো চা ভাল।
তবে মনে রাখা দরকার, চুলের যত্নে চা শেষ কথা নয়। নিয়মিত মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখা দরকার। সপ্তাহে ২-৩ বার মাথার ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী শ্যাম্পু ব্যবহার এবং কন্ডিশনার লাগানো জরুরি। সপ্তাহে ২-৩ দিন তেল মালিশ করলেও চুল নরম, মসৃণ থাকবে।