প্রসাধনীর লেবেলে কী কী লেখা থাকলে সেটি কিনবেন? ফাইল চিত্র।
দোকানে গিয়ে দেখেশুনে, বেছে কেনার চল কমেছে। সময় বাঁচাতে অনলাইনেই অর্ডার করছেন বেশির ভাগই। শপিং মলে বা দোকানে দেখা লিপস্টিকের দাম বেশি হলে, সস্তায় অনলাইনে অর্ডার দিয়ে দিলেই হল। আর উৎসবের মরসুমে তো কথাই নেই। ই-কমার্স সাইটগুলিতে এত বেশি ছাড় দেওয়া হয়, যে আসল না নকল যাচাই না করেই তা কিনে ফেলার ধুম পড়ে যায়। পাড়ার ছোট-বড় দোকানে, ফুটপাতে ঢেলে বিকোচ্ছে নকল আইলাইনার, সুগন্ধী, ক্রিম, আরও কত কী! কম দামের সেই প্রসাধন সামগ্রী ব্যবহারের ফল কতটা মারাত্মক হতে পারে তা না জেনেই অবাধে কেনাকাটি চলছে। আসলে সমস্যা হল, কেনার আগে প্যাকেটে সাঁটা লেবেল পড়ার অভ্যাস নেই অনেকেরই। লেবেল কী ভাবে পড়তে হয়, কোন লেখার কী মানে, তা ঠিকমতো জানা না থাকায় কেবল দাম বা ব্র্যান্ডের দাম দেখেই কিনে নেওয়া হয়।
প্রসাধন সামগ্রীতে অনেক সময়েই স্টেরয়েড, হাইড্রোকুইনিন, টেট্রানোইনের মতো তীব্র রাসায়নিক থাকে। এদের প্রভাবে মুখ পুড়ে যেতে পারে। র্যাশ, ব্রণ, মুখে অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা বাড়তে পারে। তাই লেবেল পড়ে প্রসাধনী কেনা একান্ত জরুরি। কী ভাবে লেবেল পড়তে হয়, তার সহজ উপায় জেনে নিন।
উপকরণের তালিকা
যে কোনও প্রসাধনী কেনার সময়ে দেখে নিতে হবে উপকরণের তালিকায় কী কী লেখা রয়েছে। ধরুন, শ্যাম্পু বা ক্রিম কিনলেন। এ বার শ্যাম্পু বা ক্রিমের বোতলের পিছনে ‘ইনগ্রেডিয়েন্ট’-এর জায়গায় গিয়ে প্রথম পাঁচটি উপকরণ আগে পড়বেন। ভারতের মতো দেশে, যেখানে গরম ও আর্দ্রতা বেশি সেখানে প্রসাধনীতে অ্যালো ভেরা, নিয়াসিনামাইড, হায়ালুরোনিক অ্যাসিডের মতো উপাদান প্রথমেই থাকা উচিত। সেগুলি আছে কি না দেখে তবে কিনবেন।
মূল উপকরণ কী কী
এর পর দেখতে হবে, প্রসাধনীতে ভিটামিন সি, রেটিনল, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড রয়েছে কি না। এই উপাদানগুলি কতটা পরিমাণে আছে, তা-ও দেখে নিতে হবে। ভিটামিন সি ও রেটিনল ত্বকের কোলাজেন তৈরিতে ভূমিকা নেয়। যে কোনও প্রসাধনীতে ভিটামিন সি ১০-২০ শতাংশ থাকতেই হবে। অনেক সময়েই কেবল উপকরণের তালিকায় নামগুলি লেখা থাকে, কত পরিমাণে আছে, সেই শতাংশের উল্লেখ থাকে না। তাই দেখে কিনতে হবে। লেবেলে যদি কোনও কিছুরই উল্লেখ ঠিকমতো না থাকে, তা হলে সেটি না কেনাই বাঞ্ছনীয়।
কী কী থাকলে কিনবেন না
সালফেট, প্যারাবেন, মিনারেল অয়েল থাকলে সেই প্রসাধনী কিনবেন না। প্রসাধনী ব্যবহারের মেয়াদ দীর্ঘতর করার জন্য নানা রকম সিন্থেটিক প্রিজ়ারভেটিভ দেওয়া হয়। নেল পলিশ, চুলের স্প্রে-সহ বিভিন্ন সুগন্ধী ও প্রসাধনীতে থাকে ফ্যালেট, ফর্ম্যালডিহাইড, যা হরমোনের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। শুধু তা-ই নয়, ক্যানসারেরও কারণ হতে পারে। তাই তাই ‘প্যারাবেন ফ্রি’, ‘প্যাথলেট্স ফ্রি’ লেখা থাকলেও তা আসলেই রাসায়নিকমুক্ত কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত হয়ে তবেই কিনবেন।
শংসাপত্র দেখে নেবেন
কেনার আগে প্রসাধনীটি ‘ডার্মাটোলজিক্যালি টেস্টেড’, ‘নন-কোমেডোজেনিক’ বা ‘ক্লিনিকালি প্রুভেন’ কি না দেখে নেবেন।