রাতভর ত্বকে কাজ করবে মাস্ক। ফল মিলবে সকালেই। ছবি: সংগৃহীত।
দিনভরের ক্লান্তি, ধুলো, দূষণের ছাপ পড়ে চোখেমুখেও। সেই ক্লান্তি উধাও হয় কয়েক ঘণ্টা ভাল করে ঘুমোলেই। ঘুমের সময় শরীর বিশ্রাম পায়। ক্ষতিগ্রস্ত কোষও পুনরুজ্জীবিত হয় এই সময়। ত্বকের চিকিৎসকেরাও বলেন, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে দিনের শেষে ভাল করে ঘুমোনো জরুরি। তবে ঘুমের পাশাপাশি এই সময়ে যদি ত্বকের একটু খেয়াল রাখা যায়, তা হলেই মুখ দেখাতে পারে আরও সুন্দর। কারণ, ঘুমের সময়ে ত্বকের পক্ষে প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ সহজ হয়।
সেই কারণেই বলিরেখা, ব্রণ, চোখের নীচের কালি কমাতে রাতভর ব্যবহারের মাস্কের কদর বাড়ছে। নাইট ক্রিম বা সিরামও ত্বকের জন্য ভাল। রাতে মেখে শোয়া যায়। কিন্তু যদি বাজারচলতি প্রসাধনী ব্যবহার করতে না চান, ত্বকের যত্নে বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন মাস্ক।
গ্রিন টি এবং আলুর রস: মুখে অকালবার্ধক্যের ছাপ? বলিরেখা পড়ছে কপালে, ঠোঁটের পাশে? গ্রিন টির গুণেই এমন সমস্যার সমাধান হতে পারে। এতে মেলে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মের ফলে ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরি হয় শরীরে। যা কোষকলার জন্য ক্ষতিকর। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এর হাত থেকেই শরীর এবং ত্বককে বাঁচায়। ত্বক হয়ে ওঠে সুন্দর। চোখের নীচের কালি হোক বা রোদে পোড়া কালচে ভাব—আলুর রস হতে পারে সমাধান। গ্রিন টি এবং আলুর রসের মিশ্রণে থাকা ভিটামিন বি ত্বকের প্রয়োজনীয় কোলাজেন নামক প্রোটিন উৎপাদনে সাহায্য করে। গ্রিন টি-তে রয়েছে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান। ব্রণ, র্যাশের মতো সমস্যা থেকে মুক্তি দিতেও তা উপযোগী।
১ টেবিল চামচ আলুর রসের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ ঠান্ডা বা ঘরের তাপমাত্রায় থাকা গ্রিন টি মিশিয়ে নিন। উষ্ণ জলে গ্রিন টি ব্যাগ ডুবিয়ে আগে থেকে সেটি বানিয়ে রাখতে হবে। রাতে মৃদু ফেশওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করার পর এই মিশ্রণ মুখে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল।
অ্যালো ভেরা এবং গ্লিসারিন: ত্বকের জন্য অ্যালো ভেরা ভাল। এতে রয়েছে প্রদাহনাশক উপাদান। এটি অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ, বি, সি, ই এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর। প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজ়ারের উৎস হিসেবে এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা নিরাময়ের জন্য বহু কাল ধরে সুপরিচিত অ্যালোভেরা। গ্লিসারিন ত্বককে গভীর ভাবে আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে। যাঁদের ত্বকের ধরন রুক্ষ বা বলিরেখার সমস্যা রয়েছে, তাঁরা এটি মাখতে পারেন। ১ টেবিল চামচ অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে আধ চা-চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে নিন। পরিষ্কার মুখে মিশ্রণটি লাগিয়ে হালকা হাতে মাসাজ করে নিন।
ওট্সের দুধ এবং মধু: ত্বকের জন্য ওট্স খুব ভাল। ময়েশ্চারাইজ়ার হিসাবে কাজ করে এটি। ত্বকের জ্বালা ভাব কমাতেও ওট্সের ঠান্ডা দুধ কার্যকর। পাশাপাশি, ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কারেও এটি সাহায্য করে। মধুও ত্বককে আর্দ্র রাখে, কালচে ভাব দূর করে ঔজ্জ্বল্য ফেরাতে সাহায্য করে। মিক্সারে ওট্স এবং জল দিয়ে ৩০ সেকেন্ড ঘুরিয়ে নিন। মিশ্রণটি পরিষ্কার সুতির কাপড়ে ছেঁকে নিলেই পাওয়া যাবে ওট্সের দুধ। সেটি কাচের শিশিতে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। ফ্রিজে ৩-৪দিন ভালই থাকবে। ২ টেবিল চামচ ওট্সের দুধের সঙ্গে আধ চা-চামচ মধু মিশিয়ে মুখে মেখে সারা রাত রাখুন। সকালে উঠে মুখ ধুয়ে নিন। ত্বক হবে শিশুদের মতো কোমল।