হাতের শুষ্কতা কমাবেন কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
শীতের সঙ্গে শুষ্কতার আত্মিক যোগাযোগ। মাথার ত্বক থেকে শুরু করে ঠোঁট, কনুই, হাত, পা, পায়ের আঙুল পর্যন্ত শুষ্ক হয়ে ওঠে এ সময়ে। কখনও কখনও ছাল ওঠার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়। কারও কারও হাতের তালুও শুষ্ক হয়ে ওঠে। ছাল উঠতে শুরু করে, ফাটল ধরে যায়, খসখসে হয়ে যায় হাত।
এ সময়ে বেশি বার হাত ধুলে ত্বকের আবরণ নষ্ট হয়ে শুষ্কতার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখার জন্য হাত ধোয়া বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব নয়। দীর্ঘ দিন ধরে এই সমস্যায় ভুগতে থাকলে হাত জ্বালা, লালচে ভাব, অস্বস্তি ইত্যাদি হতে পারে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ফাটল দিয়ে ব্যাক্টেরিয়ার প্রবেশ ঘটে সংক্রমণও হয়ে যেতে পারে।
হাতের ত্বকের একেবারে উপরের স্তরটি ত্বককে সুরক্ষা দেয়। ত্বকের ভিতরের জল ধরে রাখে। শীতের শুষ্ক বাতাস এই আবরণকে ভেদ করতে সক্ষম হয়ে গেলেই ত্বক থেকে দ্রুত জল বেরিয়ে আসে। উপরন্তু যদি বার বার জল বা সাবান দিয়ে হাত ধুতে থাকেন, তা হলে ত্বকের ওই আবরণ আরও দুর্বল হয়ে ওঠে। ফলে হাত খসখসে, ত্বক ফেটে লালচে হতে শুরু করে, অনেক সময়ে চুলকানি বা ব্যথাও হতে পারে। তাই সঠিক উপায়ে হাতের সুরক্ষা নেওয়া প্রয়োজন।
শীতের সময়ে হাত ধোয়ার সঠিক উপায়
হাত ধোয়ার সময়ে গরম জলের বদলে স্বাভাবিক তাপমাত্রার জল ব্যবহার করুন। খুব গরম জল ত্বকের স্বাভাবিক তেল কমিয়ে দিতে পারে। হাত ধোয়ার জন্য এমন সাবান বেছে নিন, যা ক্রিম জাতীয়, মৃদু এবং গন্ধহীন। কঠিন, রসায়নিক সাবান ত্বককে আরও শুষ্ক করে ফেলে। ধোয়ার পরেই গ্লিসারিন, ময়েশ্চারাইজ়ার, শিয়া বাটার ইত্যাদি হাতে মেখে নিন। কাপড়ে ঘষে শুকোনোর বদলে হালকা চাপ দিয়ে নিন নরম কাপড়ে। নয়তো, অতিরিক্ত ঘর্ষণে ত্বকের আবরণ ছিঁড়ে যেতে পারে। সারা দিন ধরে অল্প অল্প করে ক্রিম মাখতে থাকুন হাতে। রাতে ঘুমোনোর আগে ভারী ময়েশ্চারাইদজ়ার মেখে নিন, যাতে সারা রাত ধরে আর্দ্রতা ত্বকের ভিতরে বিনা বাধায় প্রবেশ করতে পারে। সকালে উঠে হাত নরম হয়ে উঠবে।
শীতের সময়ে হাতকে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করুন
১. ঠান্ডার সময়ে বাইরে বেরোলে গ্লাভস পরে রাখা ভাল, যাতে ঠান্ডা, শুষ্ক হাওয়া বার বার হাতের সংস্পর্শে না আসে। ঘরের কাজ যেমন বাসন মাজা, কাপড় কাচার সময়ে রাবারের গ্লাভস পরে রাখা উচিত। নয়তো, ত্বক সরাসরি রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২. ঘরের ভিতর শুষ্কতা কমাতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা যায়।
৩. জামাকাপড় কাচার ডিটারজেন্ট এবং বাসন মাজার সাবান বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। মৃদু এবং কম রাসায়নিক যুক্ত পণ্য ব্যবহার করলে হাত সুরক্ষিত থাকবে।