খুশকির সমস্যায় জেরবার। সমাধান হবে কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
মনের মতো পোশাক পরলেন। কিছু ক্ষণ পরেই দেখা গেল কাঁধ জুড়ে সাদা গুঁড়ো। বিশেষত কালো রঙের পোশাক হলে সেই গুঁড়ো চোখে পড়ে স্পষ্ট। এগুলি হল খুশকি। তবে শুধু খুশকি নয়, ত্বকের অনেক সমস্যাতেই এমন সাদা গুঁড়োর মতো জিনিস মাথার ত্বক থেকে উঠে আসে।
কিন্তু ঠিক এ রকম নয়, আবার মাথার ত্বকে অন্য রকম সাদা গুঁড়োর মতো কিছু একটা কি আপনার চুলেও রয়েছে? যে দিন শ্যাম্পু করেন, তার পরের দিনটি ঠিক থাকে। কিন্তু ঠিক দু’দিনের মাথায় তা ফিরে আসে? সেটি কিন্তু এক ধরনের খুশকিও হতে পারে। তবে তা ঝরে পড়ে না। মাথার ত্বকের উপর চেপে বসে থাকে। খুব জোরে নখ দিয়ে খুঁটলে চামড়ার স্তরের মতো উঠতে থাকে। একেই বলে ‘স্টিকি' বা 'অয়েলি ড্যানড্রফ’।
‘মেডিক্যাল মাইকোলজি’ জার্নালে ২০২৪ সালে প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র জানাচ্ছে, এই ধরনের খুশকি মালাসেজিয়া ইস্টের বাড়বাড়ন্তের ফলে হয়। এই ধরনের খুশকি তাঁদের মাথাতেই হয়, যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত।
মাথার ত্বকের অপরিচ্ছন্নতা শুধু এর কারণ নয়। বরং অতিরিক্ত তেল নিঃসৃত হলেই এই ধরনের ইস্টের বাড়বাড়ন্ত হয়। এই ধরনের ইস্ট সেবামকে ফ্যাটি অ্যাসিডে রূপান্তরিত করে। যার ফলে চুলকানি, অস্বস্তি হয়।
কেন সাধারণ খুশকির শ্যাম্পু কাজ করে না?
এক ধরনের খুশকি হয়, যা সহজে ঝরে পড়ে। এটি কিন্তু ঠিক উল্টো। দেখা যায়, খুশকি নাশক শ্যাম্পু ব্যবহারের এক থেকে দু'দিনের মধ্যে মাথার ত্বক ফের তৈলাক্ত হয়ে যাচ্ছে। খুশকি ফিরে আসছে। কারণ, ইস্ট নির্মূল করা সম্ভব হলে, ফের মাথার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব ফিরবেই। সে কারণেই দরকার চিকিৎসকের পরামর্শ। কারও কারও মাথায় আবার বিশ্রী গন্ধও হয় খুশকি থেকে।
সমাধান কী
এমন ধরনের খুশকি তাড়াতে হলে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে। কার ত্বকে, কোন শ্যাম্পু প্রয়োজন, তা ত্বকের রোগের চিকিৎসকেরাই বলতে পারবেন। তাই ঘরোয়া টোটকা, এটা-সেটা না মেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। এক বা দু’দিন অন্তর নির্দিষ্ট শ্যাম্পুর ব্যবহার, স্ক্রাব করে মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখলে এমন সমস্যার সমাধান হবে।
ক্রমাগত উদ্বেগ, অবসাদও কিন্তু সেবামের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। তাই যতটা সম্ভব নিজেকে নেতিবাচক চিন্তা থেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। শরীরচর্চা, প্রাণায়াম এই সমস্যার কিছুটা সমাধান করতে সক্ষম।
একই সঙ্গে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুলের জন্য দরকার সঠিক ডায়েট। এ ক্ষেত্রে জ়িঙ্ক, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন, প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরি।