নবদম্পতি। পিনাকী মিশ্রের সঙ্গে মহুয়া মৈত্র। ছবি : সংগৃহীত।
মাস দু’য়েক আগে বিয়ে করেছেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র। বার্লিনের এক প্রাসাদে বসেছিল সেই বিয়ের আসর। তবে প্রথামাফিক ‘বিয়েবাড়ির আসর’ বসল ৬৫ দিন পরে। দিল্লির এক অভিজাত হোটেলে পরিচিত, বন্ধু এবং সহকর্মীদের রিসেপশন পার্টি দিলেন মহুয়া এবং তাঁর স্বামী পিনাকী মিশ্র। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেখানে মহুয়াকে দেখা গেল নববধূ বেশে। পরনে লাল শাড়ি। কপালে লাল টিপ এবং হাতে শাঁখা-পলা। আর বিয়ের মতো রিসেপশনেও নবদম্পতির সাজে দেখা গেল রংমিলন্তি।
বার্লিনের প্রাসাদে প্রাক্তন সাংসদ পিনাকী মিশ্রের সঙ্গে দু’রকম সাজে দেখা গিয়েছিল মহুয়াকে। একটিতে তিনি পরেছিলেন সাদা গাউন আর পিনাকী কালো টাক্সেডো। অন্য একটি ছবিতে মহুয়াকে দেখা গিয়েছিল দুধেআলতা রঙের বেনারসি শাড়িতে। পুরীর প্রাক্তন সাংসদ পিনাকী সেই রঙের সঙ্গে রং মিলিয়ে পরেছিলেন তসর রঙা চোস্ত-পাজামা এবং দুধেআলতা রঙেরই জওহর কোট। মঙ্গলবার দিল্লিতে রিসেপশন পার্টিতেও মহুয়া আর পিনাকীর সাজের রং মিলল। মিলল ভাবনাও। কারণ দু’জনেই দু’জনের রাজ্যের সংস্কৃতিকে মেলে ধরেছিলেন নিজেদের পোশাকে।
লাল সাদায় রং মেলালেন মহুয়া মৈত্র এবং পিনাকী মিশ্র।
মহুয়ার লাল শাড়িতে ছিল বাংলার জামদানি কাজ। লালের উপর সোনালি সুতোর ঠাসা জামদানি কলকার নকশা। আর একই রঙের ছোট হাতা ব্লাউজ়। সঙ্গে সোনার গয়নাটিও বাংলার পুরনো নকশার গোগো নেকলেস। এর সঙ্গে কপালে টিকলি, হাতে বেশ মোটা বেড়ের লাল পলা এবং সাদা শাঁখা। টেনে বাঁধা চুল, প্রসাধন বলতে কাজল, কপালে টিপ আর ঠোঁটে লাল রঙের ছোঁয়া। ছিমছাম পোশাকেও উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল কৃষ্ণনগরের সাংসদকে। অন্য দিকে পিনাকীর পরনে ছিল ওড়িশার সম্বলপুরী নকশার সাদা-লাল পাঞ্জাবি এবং একই নকশা পাড়ের কোঁচানো ধুতি। আদ্যোপান্ত বাংলার জামাইয়ের পোশাক।
মহুয়া মৈত্র এবং পিনাকী মিশ্রের সঙ্গে যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষ এবং মেদিনীপুরের সাংসদ জুন মাল্য।
অবশ্য মহুয়া-পিনাকীর বিয়ের রিসেপশনে একা তাঁরা নয়, নজর কাড়ার মতো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। ‘বিয়েবাড়ি’তে মহিলা সাংসদদের সাজও ছিল দেখার মতো।
যাদবপুরের সাংসদ তথা টলিউড অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ যেমন পরেছিলেন লাল পাড় কালো কাঞ্জিভরম কালো ব্লাউজ়ের সঙ্গে। গলায় পরেছিলেন সোনার লহরী হার। কানে সোনার কানপাশা আর কপালে বড় লাল টিপ। রাজনৈতিক জগতে এমন বড় টিপ দিয়ে আগে চেনা যেত দীপা দাশমুন্সিকে। এখন সায়নীর বড় টিপও তাঁর সাজের অঙ্গ হয়ে উঠছে।
পার্টিতে কালো শাড়ি পরেছিলেন সায়নী এবং রচনা। ছবিতে তাঁদের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব এবং আপনা দলের সাংসদ অনুপ্রিয়া প্যাটেলকে।
কালো শাড়ি পরেছিলেন টলিউডের অভিনেত্রী এবং হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে শাড়ির পাড়ে ছাই আর সোনালির মিলমিশ। জমিতেও সোনালি পাতার মোটিফ। গলায় সোনার বাহারি নেকলেস। ঘাড় পর্যন্ত ছাঁটা চুলে রচনাকে সব সাজেই অন্য রকম দেখাচ্ছে এখন।
ডিম্পল যাদবের (বাঁ দিক থেকে দ্বিতীয়) সঙ্গে মহুয়া এবং অন্য মহিলা সাংসদেরা।
মেদিনীপুরের সাংসদ জুন মাল্য আবার পরেছিলেন কালোর উপর সোনালি সুতোর বুটিদার বেনারসি। সঙ্গে সোনার নেকলেস। কপালে টিপ। হাজির ছিলেন বাংলার অন্য সাংসদেরাও। মমতাবালা ঠাকুর, প্রতিমা মণ্ডল, শর্মিলা সরকার, সাজদা আহমেদ, সুস্মিতা দেবকেও দেখা গেল মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে।
বাংলার মহিলা সাংসদেরা। রয়েছেন (বাঁ দিক থেকে) রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, শর্মিলা সরকার, সাজদা আহমেদ, প্রতিমা মণ্ডল, জুন মাল্য এবং মমতাবালা ঠাকুর।
এ ছাড়া দিল্লির ওই হোটেলে মঙ্গলবার মহুয়ার রিসেপশনে এসেছিলেন জাতীয় স্তরের রাজনীতিবিদেরাও। মহিলা সাংসদদের মধ্যে সনিয়া গান্ধী থেকে শুরু করে সুপ্রিয়া সুলে, ডিম্পল যাদবের মতো নেত্রীদের দেখা গেল পরিপাটি সাজে।
সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে মহুয়া এবং পিনাকী। নিজস্বীতে শিবসেনার প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী।
এক কালে কংগ্রেসে ছিলেন মহুয়া। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভানেত্রী সনিয়াকে রিসেপশনে দেখা গেল তাঁর চেনা তাঁতের শাড়িতে। বেইজরঙা শাড়িতে হলুদ ফিতে পাড়। আর হালকা রোল করা কাঁচাপাকা চুলে কালো হেয়ার ব্যান্ড।
সুপ্রিয়া সুলের সঙ্গে মহুয়া এবং পিনাকী।
সমাজবাদী পার্টির নেত্রী তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের স্ত্রী ডিম্পল যাদব এসেছিলেন লাল পাড় গঙ্গাজল রঙের একটি শাড়ি পরে। মহারাষ্ট্রের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি(শরদ পওয়ার)-এর সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে পরেছিলেন সাদার উপর রুপোলি সুতোর নকশা আর মেরুন সুতোর মিনে করা পৈঠানি শাড়ি।