ক্রিম-লোশনের থেকে বেশি কাজের ঘরোয়া টোটকা! ছবি : সংগৃহীত।
শীতে ত্বকের যে কত রকমের পরিবর্তন চোখে পড়ে, তার হিসাব রাখা মুশকিল। দিব্যি মসৃণ ত্বক, আচমকা দেখলেন তাতে ফুটে উঠছে সাদা সাদা ছালের মতো মৃতকোষ। তেলা ভাব কমে যাওয়ায় চোখের নীচে কালি পড়ে। গালে ওপেন পোরের সমস্যা। ফলে দু’দিনেই ত্বক উজ্জ্বল থেকে নিষ্প্রভ! সমস্যা— ত্বকের আর্দ্রতার অভাব। কিন্তু সমাধানের চেষ্টারও তো কমতি নেই। দামি ক্রিম, লোশন, সিরাম নিত্য মাখা হচ্ছে। তাদের কেউ বলে ইনস্ট্যান্ট গ্লো তো কারও দাবি নরম-মসৃণ ত্বক। কাজ না হলেও তারাই ভরসা। অথচ ত্বকের আসল রক্ষাকর্তারা হয়তো যুগ যুগ ধরে পড়ে রয়েছে রান্নাঘরেই। হাতের কাছে। অনাদরে। নামি ব্র্যান্ডের লেবেল, নাটুকে প্রচার নেই বলে তাদের গুরুত্বও নেই।
শীতের ত্বকের জেল্লার সেই দুই হোতা হল দুধের সর আর মধু। যখন ক্রিম-লোশন-সিরাম আসেনি বাজারে, সেই সময়ে এই দিয়েই ত্বকের যত্ন নিতেন পূর্বসূরিরা। হয়তো আজও ঠাকুমা বা দিদিমাস্থানীয়দের প্রশ্ন করলে, তাঁরা এই টোটকাই বলবেন। কারণ, শীতে ত্বকের শুষ্ক ভাব কমাতে তাঁরা ভরসা করেছেন এবং সুফলও পেয়েছেন রান্নাঘরে হাতের কাছে থাকা এই দুই উপকরণ ব্যবহার করে।
শীতে কেন এই দুই উপাদান কার্যকরী?
শীতে ত্বকের সমস্যার কারণ শুধু রুক্ষ আবহাওয়া আর বাইরের দূষণ বেড়ে যাওয়া নয়। শীতে জল কম খাওয়া হয়। শীতে গরম জলে স্নানও করা হয়। ঠান্ডা আবহাওয়া এবং জল কম খাওয়ার ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালনও কম হয়। এই সবক’টি কারণেই ত্বকের রুক্ষ ভাব বাড়তে পারে। কারণ, প্রথমত গরম জল ত্বকের স্বাভাবিক তৈলাক্ত ভাব নষ্ট করে দেয়। জল কম খাওয়ায় ত্বকে আর্দ্রতা নষ্ট হয় এবং রক্ত সঞ্চালন কমে। আর রক্ত সঞ্চালন কম হওয়ায় ত্বকের কোষে পুষ্টি পৌঁছোয় না। দুধের সর আর মধু সেই পুষ্টির অভাব পূরণ করে। পাশাপাশি, ত্বককে আর্দ্রতাও জোগায়, যা ত্বকের স্বাভাবিক ঔজ্জ্বল্য এবং আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। ত্বককে নরম এবং মসৃণ রাখতেও সাহায্য করে।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
এক চামচ ভাল মধুর সঙ্গে এক চামচ দুধ থেকে তোলা সর ভাল ভাবে মিশিয়ে নিন। মুখ ভাল ভাবে ধুয়ে নিয়ে ওই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন। তার পরে ঈষদুষ্ণ জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন। নরম তোয়ালে দিয়ে আলতো করে মুখ মুছে নিন। সঙ্গে সঙ্গে সাবান বা ফেসওয়াশ ব্যবহার করবেন না। সপ্তাহে ২-৩ বার এটি ব্যবহার করুন। পারলে সন্ধ্যায় ব্যবহার করুন। এক সপ্তাহেই ত্বকে ঔজ্জ্বল্য এবং নরম ভাব ফিরে পাবেন।