সজনের গুণেই ফিরবে চুলের জেল্লা। কিন্তু কী ভাবে তা খেতে হবে? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পাতা, ফুল, ডাঁটা— ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর এই গাছের প্রতিটি অংশ। ভারতীয় হেঁশেলের চিরকালীন খাবার সজনের গুণাগুণ জানার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে তার কদর বেড়েছে।সজনেপাতা শুকিয়ে গুঁড়ো করে কৌটোজাত করে বিক্রি হয় দোকানে দোকানে। গুণের বহর জানার পর থেকেই নানা রকম প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হচ্ছে সজনের তেলও।
পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ভিটামিন এ, সি-সমৃদ্ধ এই ভেষজে আয়রন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, জ়িঙ্কের মতো খনিজও রয়েছে ভরপুর মাত্রায়। এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদানও রয়েছে। এই সব উপাদান শরীরের পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল। রূপটানশিল্পীরা বলছেন, চুলের যত্নে সজনে কিন্তু মাখাও যায়।
এতে থাকা ভিটামিন-এ মাথার ত্বকের যত্ন নিতে সাহায্য করে। জ়িঙ্ক এবং আয়রন চুলের গোড়া মজবুত করতে এবং বৃদ্ধিতে সহায়ক। সেই কারণে নিয়মিত ডায়েটে সজনেপাতা থাকলে— শরীর চুলের বৃদ্ধির উপযোগী পুষ্টির জোগানে সমস্যা হবে না।
তবে সজনেপাতার গুঁড়ো না রস স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে কী ভাবে খাবেন সজনেপাতা? ব্যস্ততা বেশি থাকলে সুবিধা হবে সজনেপাতার গুঁড়োয়। স্মুদির মধ্যে এক টেবিল চামচ সজনেপাতার গুঁড়ো মিশিয়ে নিলেই হবে। এ ছাড়া ঈষদুষ্ণ জলেও সজনেপাতার গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া যায়। এতে রয়েছে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন। চুলের জন্য প্রোটিন খুবই জরুরি।
সজনেপাতা বেটে রস বের করে ছেঁকে সেটিও খাওয়া চলে। এর সঙ্গে অল্প একটু আমলকির রস এবং মধুও যোগ করা যায়। নিয়মিত সকালে আমলকির শট (৩০-৪০ মিলিলিটার) খেলে শুধু চুল ভাল থাকবে না, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। সজনেপাতা বা মোরিঙ্গার রস খালিপেটে খেলে তা ডিটক্স পানীয়ের কাজ করে। শারীরবৃত্তীয় কাজের ফলে শরীরে নানা রকম দূষিত পদার্থ উৎপন্ন হয় এবং তা জমতে থাকে। সজনেপাতার রস একেই শরীর থেকে বের করতে সাহায্য করে।
কেশচর্চায় ব্যবহার
সজনেপাতার রস সরাসরি মাথার ত্বকেও মাখা চলে। নারকেল তেল বা ক্যাস্টর অয়েলের সঙ্গে সজনেপাতার রস মিশিয়ে মাথায় মাসাজ করলে চুলের গোড়া মজবুত হবে। মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়বে। খুশকি দূর করতেও তা কাজে আসবে।
সজনেপাতা বেটে তা মাথায় মাখার চল বহুদিনের। তেলে সজনেপাতা ফুটিয়েও তা মাখা যায়।
গুঁড়ো না সজনেপাতার রস
পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে দু’ রকমই খাওয়া চলে। রস তৈরি করা একটু ঝক্কির। ফলে সকালে উঠে কেউ সজনেপাতার গুঁড়ো স্মুদি বা জলে মিশিয়ে খেতে পারেন। আবার তা যদি রস করে খাওয়া যায় তা ডিটক্স পানীয়ের কাজ করবে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। সজনেপাতা উপকারী হলেও তা খাওয়ার মাত্রা থাকা প্রয়োজন। নিয়মিত ডায়েটে জুড়তে হলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া ভাল।