লম্বা, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল চান? ভিটামিন বাদ পড়লে চলবে না কিন্তু। ছবি: সংগৃহীত।
নিয়ম করে শ্যাম্পু করছেন, কন্ডিশনারও দিচ্ছেন। তবু যেন চুল দেখলে মনে হচ্ছে ‘কাকের বাসা’। রুক্ষ চুল, কিছু ক্ষণের মধ্যেই জট পড়ে। আর সেই জট ছাড়াতে গেলেই চুল উঠছে গোছা গোছা।
ভাবছেন, বাড়তি যত্ন নিলেই লাভ হবে? ভাবনা ভুল নয়, তবে শুধু বাইরে থেকে যত্নও যথেষ্ট নয়। এ জন্য দরকার সঠিক পুষ্টি। ২০১৮ সালে ‘ডার্মাটোলজি অ্যান্ড থেরাপি’ নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণালব্ধ ফলাফল বলছে, উপযুক্ত পুষ্টির অভাব হলে চুল ঝরতে পারে।
ভিটামিন এ: রুক্ষ চুলের সমস্যা যাঁদের, তাঁদের ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার খেতেই হবে। ভিটামিনটি সেবামের ক্ষরণ বাড়িয়ে চুল স্বাভাবিক ভাবে নরম, মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। সেবাম গ্রন্থি নিঃসৃত প্রাকৃতিক তেল চুল আর্দ্র ও নরম রাখতে এবং রুক্ষ ভাব দূর করতে সাহায্য করে। সেই কারণেই খাদ্যতালিকায় যুক্ত করা প্রয়োজন গাজর, ডিম, রাঙাআলু, ক্যাপসিকাম।
ভিটামিন সি: রোগ প্রতিরোধে সাহায্যকারী ভিটামিনটি চুল এবং ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখতে জরুরি। চুলের অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান হল কোলাজেন নামক প্রোটিন। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, দূষণ, সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগনি রশ্মির প্রভাবে এবং বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কোলাজেনের মাত্রা কমতে থাকে। ঘাটতি পূরণেই জরুরি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া। যে কোনও লেবু, বেলপেপার, ব্রকোলি, টম্যাটো এবং বেরি জাতীয় ফলে ভিটামিনটি মেলে।
ভিটামিন ডি: চুল ঝরার কারণ কিন্তু দুর্বল হেয়ার ফলিকলও হতে পারে। ভিটামিন ডি চুলের ফলিকল মজবুত করতে সাহায্য করে। হাড় মজবুত রাখার জন্যই এই ভিটামিনের গুণাগুণের কথা সকলে জানেন। তবে চুল গজাতেও এই ভিটামিন জরুরি। একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে, অ্যালোপেসিয়া এরিয়েটার মতো অবস্থায় যখন চুল উঠে যায়, ভিটামিন ডি চুল গজাতে সাহায্য করে। ডিমের কুসুম, তৈলাক্ত মাছ, দুধে মেলে ভিটামিন ডি। সূর্যালোকের উপস্থিতিতেও ত্বকে ভিটামিনটি তৈরি হয়।
ভিটামিন ই: চুলের সুরক্ষাবর্ম হিসাবে কাজ করে ভিটামিন ই। শরীরে তৈরি হওয়া ফ্রি র্যাডিক্যালের কারণে অক্সডেটিভ স্ট্রেস হয়। ভিটামিন ই তা কমাতে, কোষ পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করে। ক্ষতিগ্রস্ত চুল মেরামত করে। বিভিন্ন রকম বাদাম, ব্রকোলি, আম, রাঙাআলু, সবুজ সব্জিতে ভিটামিনটি মেলে।
ভিটামিন বি৭: চুলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল কেরাটিন নামে এক ধরনের প্রোটিন। বায়োটিন বা ভিটামিন বি৭-এর অভাব কেরাটিনের উৎপাদনে প্রভাব ফেলে। এই ভিটামিন গ্লুকোজ়, ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যামাইনো অ্যাসিডের বিপাকে সাহায্য করে। এক জন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৩০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিনের প্রয়োজন পড়ে। বাদাম, শাক, বীজ, রাঙাআলু, দুধ, দই নিয়মিত খেলে ভিটামিনটির অভাব হবে না।