Herbal Tea for Hair

অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা মেটাতে পারে ভেষজ চা! কী ভাবে তা সম্ভব?

চুলে পাক ধরা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু তা হয় একটি বয়সে পৌঁছোনোর পর। কিন্তু তিরিশ বছর বয়সে চুল পাকতে শুরু করলে তা অনেকের কাছেই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২৮
Share:

ছবি : সংগৃহীত।

বয়স সবে ৩০-এর মাঝামাঝি, অথচ এরই মধ্যে মাথায় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে পাকা চুল। সিঁথির দু’পাশে তো রয়েছেই, চুল বাঁধলে কানের পাশেও প্রকট হচ্ছে তাদের উপস্থিতি। চুলে পাক ধরা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু তা হয় একটি বয়স পেরোনোর পরে। তিরিশ বছর বয়সে চুল পাকতে শুরু করলে, তা অনেকের কাছেই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা চুলে র‌ং করা পছন্দ করেন না বা চুলে রাসায়নিক দেওয়া রং দিতে ভয় পান, তাঁদের কাছে অল্প বয়সে পাকা চুলের সমস্যার কোনও স্থায়ী সমাধান নেই। মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ মনপ্রীত কালরা অবশ্য জানাচ্ছেন, চুলে পাক ধরার সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধানও সম্ভব।

Advertisement

মনপ্রীত বলছেন, ‘‘চুলে পাক ধরার একটি বড় কারণ মেলানিনের উৎপাদন কমে যাওয়া। মেলানিন উৎপাদন ঠিক রাখার জন্য একটি ভেষজ চা নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, তাতে সময়ের আগে চুলে পাক ধরার সমস্যা নতুন করে বাড়বে না। পাশপাশি, চুলের গোড়া মজবুত হবে, ভাল থাকবে মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যও।

চায়ে কী ভাবে ভাল থাকবে চুল?

Advertisement

মনপ্রীত যে চায়ের কথা বলছেন, সেটি অবশ্য প্রকৃত অর্থে চা নয়, অর্থাৎ তাতে চা পাতা পড়ে না। বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানকে জলে ভিজিয়ে তৈরি হয় ওই পানীয়। তাতে থাকে জবা, মেথি, হলুদ, লেবু এবং বিটনুন। পুষ্টিবিদ বলছেন, ‘‘রাসায়নিকে যেমন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, এতে তা নেই। বরং এই ভেষজ চায়ের প্রতিটি উপাদানই শরীরকে ভিতর থেকে পুষ্টি জুগিয়ে চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করবে।’’

কী কী উপকার?

১। জবা : চুলের স্বাস্থ্যরক্ষায় জবার উপকারিতার কথা নানা জনে নানা ভাবে বলে আসছেন। আসলে জবার পাপড়িতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন সি, যা মেলানিন উৎপাদনে সহায়ক। এ ছাড়া জবায় থাকা পুষ্টিকর উপাদান রক্ত সঞ্চালনেও সাহায্য করে। ফলে চুলের গোড়া পর্যন্ত পুষ্টি পৌঁছোয়।

২। মেথির দানা : চুলের গোড়া মজবুত করার পাশাপাশি চুলকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে প্রোটিন এবং আয়রন। মেথিতে এই দুই উপাদান তো রয়েছেই, পাশপাশি রয়েছে হরমোন নিয়ন্ত্রণের কিছু উপাদান, যা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রেখে চুলের পাক ধরা রোধ করে।

৩। হলুদ : চুলে পাক ধরা থেকে শুরু করে চুল পাতলা হয়ে যাওয়া— সবই হতে পারে প্রদাহের কারণে। হলুদে আছে সেই প্রদাহনাশক উপাদান। এ ছাড়া হলুদে থাকা উপকারী কারকিউমিন এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস চুলের ক্ষতিগ্রস্ত কোষকে মেরামত করে। ফ্রি র‌্যাডিক্যালস, যা শরীরের নানা রোগের জন্য দায়ী, তার প্রভাব থেকেও মুক্ত রাখে মাথার ত্বককে।

৪। পাতিলেবু : চুলের রঙের জন্য জরুরি হল আয়রন। যে কোনও খাবার থেকে শরীরের আয়রন গ্রহণের ক্ষমতা অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে পাতিলেবু। এ ছাড়া লেবুতে থাকা ভিটামিন সি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। ত্বক এবং চুলের তারুণ্য ধরে রাখার জন্য জরুরি কোলাজেন।

৫। বিটনুন: বিটনুনে আছে চুলের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু খনিজ। যেমন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম ইত্যাদি। সব ক’টি উপাদানই চুলের গোড়া মজবুত করতে কাজে লাগে। শরীরকে দূষণমূক্ত করতেও কাজে লাগে।

কী ভাবে বানাবেন?

১। একটি পাত্রে, মেথির গুঁড়ো, হলুদগুঁড়ো, বিটনুন এবং জবার পাপড়ির গুঁড়ো (বাজারে হিবিসকাস পাউডার নামে পাওয়া যায়) সম পরিমাণে মিশিয়ে নিন।

২। এক গ্লাস জলে আধ চা-চামচ এই পাউডার মেশান। তাতে দিয়ে দিন অল্প লেবুর রস। ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে পান করুন। প্রতি দিন সন্ধ্যায় এই চা খেলে চুলের অকালপক্বতার সমস্যা কমবে বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ মনপ্রীত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement