অনুষ্ঠানে উপস্থিত ( বাঁ দিক থেকে) সোহম গুপ্ত এবং পূর্বাশা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের জীবনের বড় অংশ জুড়ে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রয়াত পরিচালকের একাধিক ছবি এবং শিল্পেও বার বার ফিরে এসেছে রবীন্দ্রদর্শন। সম্প্রতি ঋতুপর্ণের ৬২তম জন্মদিনে এই যোগসূত্রকে ফিরে দেখা হল ‘রবিবার-এ ঋতু’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে। উদ্যোগে ‘সেইজাকু’ এবং ‘ডেল্টা লাইভস’।
ঋতুপর্ণ নিজে আড্ডা দিতে পছন্দ করতেন। খাদ্যরসিকও ছিলেন। ‘দেশজ স্টোর অ্যান্ড ক্যাফে’তে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে সে কথাই মনে করিয়ে দেন পরিচালকের দীর্ঘ দিনের বন্ধু এবং সম্পাদক অর্ঘ্যকমল মিত্র। তাঁর কথায়, ‘‘ওর বাড়িতে নিজে খাবার অর্ডার করে আমাদের খাওয়াত। আবার একসঙ্গে আমরা বাইরে রেস্তরাঁতেও খেতে গিয়েছি।’’ ঋতুপর্ণের একাধিক ছবি রবীন্দ্রসাহিত্য থেকে উঠে এসেছে। সেখানে খাওয়াদাওয়ার নানা প্রসঙ্গও এসেছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত শ্রোতাদের সে কথাই মনে করিয়ে দেয় ‘চোখের বালি’, ‘নৌকাডুবি’ বা ‘চিঙ্গাঙ্গদা’ ছবির নির্বাচিত ক্লিপিং।
অনুষ্ঠানে পরিবেশিত চারটি খাবারের পদ। ছবি: সংগৃহীত।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল চারটি খাবারের পদ— যার সঙ্গে কখনও রবীন্দ্রসাহিত্য, কখনও আবার ঋতুপর্ণের নানা দর্শন মিলে যায়। নেপথ্য কারিগর শেফ শাক্যসিংহ চক্রবর্তী। যেমন ‘ট্যাঙ্গি ব্লু পি’ চায়ে লেবুর রসের সংযোজন এবং রং পরিবর্তন চিত্রাঙ্গদার মনের দ্বন্দ্বকে ফুটিয়ে তোলে। আবার ‘ব্যান্ডেল ফিশ চপ’-এর ভিতরের তুলতুলে ব্যান্ডেল চিজ় যেন ঋতুপর্ণের দৃঢ়চেতা চরিত্রের আড়ালে লুকিয়ে থাকা নরম মনটিকে শ্রদ্ধা জানায়। ‘নৌকাডুবি’র কথা মনে পড়ায় ‘ক্যাফে আম ব্রিউ’— কোল্ড ব্রিউ কফি এবং বাংলার আমের পানার মিশ্রণ। এ ছাড়াও ছিল ‘বুরাংশ চকোলেট ডেসার্ট’, যেখানে অর্ধগোলাকৃতি হোয়াইট চকোলেটের আস্তরণ ভেঙে বেরিয়ে আসে রডোডেনড্রনের রক্তিম আভা।
অনুষ্ঠানে ঋতুপর্ণের নির্বাচিত লেখা পাঠ করেন পূর্বাশা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সোহম গুপ্ত। লাইভ পেইন্টিং-এর অংশ হিসেবে ঋতুপর্ণের একটি প্রতিকৃতি আঁকেন ইন্দ্রাণী আচার্য। এ ছাড়াও উপস্থিত শ্রোতারা ঋতুপর্ণ স্মরণে অংশ নেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সমালি চক্রবর্তী এবং বর্ণমালা রায়।