বড়দিনের আনন্দে মাতুন, রইল শহরের কিছু ক্যাফে ও রেস্তরাঁর খোঁজ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বড়দিন মানে আড্ডা, বড়দিন মানে আনন্দ। আর চাই পছন্দের খাওয়া। ঝলমলে আলোয় সেজে উঠেছে কলকাতা। জনস্রোতে ভেসে যাওয়া শহরে তাই কোমর বেঁধে তৈরি হোটেল-রেস্তরাঁগুলোও। রেস্তরাঁ মহল ভালই জানে, বড়দিনের কলকাতায় হুল্লোড়ের পাশাপাশি পেটপুজোও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই আড্ডার সঙ্গী মুখরোচক নানা খাবার প্রাধান্য পাচ্ছে রেস্তরাঁগুলিতে। রয়েছে ফিউশন খাবারও। রেস্তরাঁর পাশাপাশি এ শহরে এখন প্রাধান্য পাচ্ছে নানা ক্য়াফেও। নয়া ক্যাফেগুলির ঠান্ডা ঘরের মেজাজ, টুকিটাকি ফিউশন খাবার এখন বেশি পছন্দের। পকেট থেকে একটু বেশি খসলেই বা ক্ষতি কী? কফির স্বাদ আর পরিবেশটাও তো দেখতে হবে!তাই ক্যাফেগুলিও এখন সেজেছে নানা রকম থিমে। বড়দিন ও নববর্ষ উদ্যাপনে স্বাদবদলের ইচ্ছা থাকলে কলকাতার কিছু ক্যাফে ও রেস্তরাঁয় ঢুঁ দিয়ে দেখতে পারেন।
ট্রাইব ক্যাফে
বড়দিনের মেনু সাজিয়েছে ট্রাইব ক্যাফে। ফাইল চিত্র।
বড়দিন ও নতুন বছর উপলক্ষে মেনু সাজিয়েছে গোলপার্কের এই ক্যাফে। ৩১ তারিখ অবধি চলবে উদ্যাপন। স্টার্টারে চিকেন চাউডার স্যুপ থেকে ক্রিস্পি ফিশ, সঙ্গে চিপস ও টার্টার সস বেশ জমে যাবে। ভাতের সঙ্গে মরোক্কান বেকড ফিশ ও গ্রিলড ফিশের আয়োজনও আছে। একঘেয়ে মুরগির পদের বদলে চিকেন টেট্রাজ়িনি ও পর্ক ভিন্দালু এই ক্যাফের অন্যতম আকর্ষণ। বড়দিনে কেকের সঙ্গে হট চকোলেটের ব্যবস্থাও থাকবে। দু’জনের জন্য খরচ হবে সাকুল্যে ৮০০ টাকা।
কিমলি রেস্তরাঁ
সাবেক চিনা খাবারের স্বাদ পাওয়া যাবে কিমলিতে। ফাইল চিত্র।
হিন্দুস্তান পার্কে একটুকরো ট্যাংরাকে তুলে এনেছে কিমলি রেস্তরাঁ। ট্যাংরা এলাকায় কলকাতার চিনে পাড়া বরাবরই ভোজনরসিকদের কাছে এক আলাদা আকর্ষণ। সেখানে যদি একটি রেস্তরাঁয় ঢুকেই সে সব পদ পাওয়া যায়, তা হলে ক্ষতি কী! বাঙালিকে সাবেক চিনা খাবারের স্বাদ চাখাতে কিমলির মেনুতে রয়েছে টেরিয়াকি ফিশ, চিলি ডাক, খাও সুয়ে, ইয়াকিটোরি ডাক, স্মোকি বারবিকিউ ল্যাম্ব এবং করিয়েন্ডার চিকেন। তা ছাড়া চকোলেট ওয়ান্টন, লেমন চিজ় কেকও চেখে দেখতে পারেন। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ৬০০ টাকার মতো।
ক্যাফে কোর্টইয়ার্ড
ক্যাফে কোর্টইয়ার্ড। ফাইল চিত্র।
বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে বসে নির্ভেজাল আড্ডার খাস জায়গা। নিউটাউনের ক্যাফে কোর্টইয়ার্ডও সাজছে বড়দিন ও নতুন বছরের জন্য। মেনুতেও রয়েছে তার ছোঁয়া। অভেন-বেকড ফিশ, পর্ক চপের সঙ্গে চিজ়ে মাখামাখি চিকেন ড্রামস্টিক, ক্রিস্পি হানি বাটার প্রন ইত্যাদিতে বড়দিনের সন্ধ্যা জমে যাবে। শেষ পাতে মিষ্টিমুখের জন্য রেড টার্টল ও বেরি কিসও রয়েছে। খরচ পড়বে দু’জনের জন্য ৮০০ টাকার কিছু বেশি।
কালদি বিন ক্যাফে
বড়দিনের স্পেশাল মেনু কালদি বিন ক্যাফেতে। ফাইল চিত্র।
ল্যাম্ব শ্যাঙ্ক, পর্ক রিব, ব্লুবেরি চিজ়কেকের স্বাদ চাখতে হলে বড়দিনে গড়িয়াহাটের কালদি বিন ক্যাফেতে একবার ঢুঁ মারতেই হবে। এই ক্যাফের তিরামিসু বেশ জনপ্রিয়। হট চকোলেট, প্যানকেকের অঢেল সম্ভারও রয়েছে। নানা রকম কুকি তৈরি করেন এখানকার শেফরা। বড়দিনের জন্য স্পেশ্যাল মিক্সড ফ্রুট কেক ও চকোলেট চিপ কুকিজ়ও থাকছে এ বারের মেনুতে। খরচ পড়বে কর ছাড়া ৮০০ টাকার কিছু বেশি।
প্যাপরিকা গুরমে
বড়দিনের সন্ধ্যায় মুখরোচক খাবার খেতে ইচ্ছা করলে ঘুরে আসুন প্যাপরিকা গুরমে থেকে। এখানে থাকছে অ্যালিয়ো ওলিয়ো ব্রুসেল স্প্রাউটস, চিজ় ফনডিউ, গ্রিন পিজ় হামাস স্পুনস। টোম্যাটো রিকোটা টার্ট, সফট্ ব্যাগেলস উইথ ক্রিম চিজ়, জ্যাকেট পোট্যাটো ফিলড্ উইথ কর্ন অ্যান্ড চিজ়-এর মতো খাবারও পেয়ে যাবেন এখানে।
খানাপিনায় জমে উঠবে বড়দিন। ফাইল চিত্র।
বন ফেম
শীতের তাজা সব্জির সঙ্গে চিকেন-মটনের মেলবন্ধন ঘটিয়েছে বন ফেম। খাবার নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁরা বড়দিনে এক বার যেতেই পারেন কলকাতার রাসবিহারী এলাকার এই রেস্তরাঁয়। ভোজনবিলাসী বঙ্গসন্তানদের পাতে রীতিমতো সাবেকি স্বাদের টার্কি রোস্ট, টার্কি স্যালাড সাজিয়ে দেওয়া হবে টেবিলে। পারদপতনের সঙ্গে মাংসপ্রেমীদের বচ্ছরকার টার্কি-বিলাস জমে উঠবে।
দেশি থেকে কন্টিনেন্টাল খাবারের হরেক সম্ভার। ফাইল চিত্র।
ল্যা ম্যাকারিও ক্যাফে
এলগিন রোডের এই ক্যাফেতে গেলে হার্ট শেপ্ড পিৎজ়া, স্ট্রবেরি চিজ় কেক, চিজ় প্ল্যাটার, সিজ়লিং কিনোয়া উইথ ফরেস্ট মাশরুম ক্রিম চেখে দেখতেই পারেন। শেষ পাতে গোল্ডেন অ্যাপ্ল পাই, ডার্ক চকোলেট মাগ কেক, উইন্টার বেলজ়িয়ান ডার্ক হট চকলেট খেতে ভুলবেন না।
অলিভ ক্যাফে অ্যান্ড বার
কলকাতায় বসে খাস ভূমধ্যসাগরীয় খাবারের স্বাদ চাখতে এই রেস্তরাঁয় যেতে পারেন। পিৎজ়া, গ্রিল্ড খাবার, নানা রকম স্যালাড, ককটেল ও মকটেলে বড়দিনের সন্ধ্যা জমে যাবে। স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্য এই ক্যাফে আদর্শ।
নভোটেল কলকাতা
বড়দিনের ভূরিভোজের জন্য বেছে নিতেই পারেন নিউ টাউনের ‘হোটেল নভোটেল’কে। স্পেশ্যাল মেনুতে থাকছে রোস্টেড টার্কি থেকে হানি গ্লেজ়ড পর্ক বেলি, শীতের সব্জি দিয়ে জ়ুকিনি রোস্টেড ফিশ-সহ আরও অনেক কিছু। বড়দিনের জন্য রয়েছে স্পেশ্যাল ক্রিসমাস ব্রাঞ্চ বুফে, ২৪ থেকে ১ তারিখ অবধি প্রতি দিনই নানা রকম মেনু সাজিয়েছে নভোটেল।
হায়াত সেন্ট্রিক
বড়দিনের দুপুর কিংবা রাতের ভোজটা সারতে পারেন বালিগঞ্জের ‘হায়াত সেন্ট্রিক’-এ। সেখানকার বিশেষ দিনের ভোজের মেনুতে থাকছে পনির খুরচন, লোটাস স্টেম ঘস্সি, চিকেন পাতা-পোড়া, সাগ মিট, প্যারাডাইস মাকি সুসি রোল, ইয়াকিতোরি জাম্বো চিংড়ি, লক্ষ্ণৌ টুন্ডে কবাব, স্মোকি জাপানিজ় গ্লেজ়। সেচুয়ান পেপার সস ও ইয়াসমিন রাইস-সহ আরও অনেক কিছু। শুধুমাত্র ২৪, ২৫ ও ৩১ তারিখের জন্যই স্পেশ্যাল মেনু সাজানো হয়েছে।