ত্রিপুরায় ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়ে রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলল প্রদেশ কংগ্রেস। দলের অভিযোগ, রোগ নিয়ন্ত্রণে আগে থেকে কোনও প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হয়নি।
প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক সিনহা অভিযোগ করেছেন, ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরে ম্যালেরিয়ার ওষুধ কিনতে বরাদ্দ ৮ কোটি ৭০ লক্ষ টাকার মধ্যে, মাত্র ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিষেধক কেনা হয়েছে মাত্র ৫০০টি। বাকি টাকায় ক্লোরোকুইন জাতীয় ওষুধ কেনা হয়। তা ছাড়া, রাজ্যে ওই ওষুধের ব্যবহার নিষিদ্ধ। ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক ব্যর্থতা এবং ত্রিপুরায় ম্যালেরিয়াকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করার দাবিও তুলেছে কংগ্রেস। ৭ জুলাই রাজ্যে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের কথা জানানো হয়েছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ মানতে চাননি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী। তিনি বলেন, “ম্যালেরিয়া মোকাবিলায় উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকার ওষুধ সরবরাহ করেছে। কেন্দ্রের নির্দেশিকা (ট্রিটমেন্ট প্রোটোকল) মেনেই এ রাজ্যে রোগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।” তিনি জানান, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা রাজ্যের ম্যালেরিয়া-কবলিত কয়েকটি জায়গা পরিদর্শন করেন। চিকিৎসায় নিম্নমানের ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগও বাদলবাবু উড়িয়ে দেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, “ম্যালেরিয়া আক্রান্ত কোনও রোগী নিজে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছতে না-পারলে, তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা হচ্ছে।” সরকারি হিসেবে, মাস দেড়েকের মধ্যে রাজ্যে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা ৬০।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিক (স্টেট সার্ভিলেন্স অফিসার) প্রণব চট্টোপাধ্যায় জানান, ধলাই, গোমতী ও দক্ষিণ ত্রিপুরায় প্রায় ১৭০০ রোগী ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্থিতিশীল। প্রয়োজনীয় ওষুধেরও কোনও অভাব নেই। তবে, পার্বত্য ও দুর্গম এলাকার রোগীদের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে।
এ দিকে, ত্রিপুরায় ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন ওই রাজ্যের লাগোয়া বরাক উপত্যকার বাসিন্দারা। করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি জেলায় নজরদারি বাড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, সেখানে এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিকই রয়েছে।