জন্মানোর বছর তিনের মধ্যেই সুস্মিতা কয়ালের পরিবার জেনে গিয়েছিল যে মেয়ের শ্রবণক্ষমতা প্রায় নেই। যন্ত্রের প্রয়োজন। একই সমস্যায় ভুগছিলেন জয়দেব হালদারের পরিবারও। ছেলে জন্মানোর কয়েক মাস পরে চিকিৎসক জানান, জয়দেব বধির।
দুই ক্ষেত্রেই পরিবারের লোক জনকে বলা হয় ছেলে-মেয়েকে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর দি হিয়ারিং হ্যান্ডিক্যাপড’ (এনআইএইচএইচ)-এ নিয়ে যেতে। সেখানে পরীক্ষার পরে জানানো হয়, দু’টি বাচ্চাই বধির। শ্রবণ যন্ত্র ছাড়া তারা কিছু শুনতে তো পারবে না। ভাষাও বুঝতে পারবে না। ফলে স্বাভাবিক জীবন যাপনে সমস্যা হবে।
সুস্মিতা এবং জয়দেবের পরিবার এনআইএইচএইচ থেকে শ্রবণযন্ত্রও নিলেও কী ভাবে ব্যবহার করতে হয় তা জানত না। ফলে নিয়মিত ব্যবহার না করানোয় দু’টি শিশুরই মানসিক বিকাশ হচ্ছিল না। শেষে এক দিন দুই পরিবার এক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দ্বারস্থ হয়। সেখানেই তাঁরা জানতে পারেন তিন বছর বয়সের আগেই প্রতিটি শিশুর শ্রবণ যন্ত্র ঠিক রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করানো জরুরি। শুধু তাই নয়। কোনও সমস্যা থাকলে নিয়মিত যন্ত্র ব্যবহারেরও প্রয়োজন রয়েছে।
শুধু সুস্মিতা বা জয়দেবের পরিবার নয়। বৃহস্পতিবার বধিরতা নিয়ে এক সচেতনতা শিবিরে জানা গেল, প্রতি বছর এ দেশে ২৫ হাজারের মতো শিশু বধিরতা নিয়ে জন্মাচ্ছে। কিন্তু বাবা-মায়ের সচেতনতার অভাবে আর জন্মানোর সঙ্গে সঙ্গেই সদ্যোজাতদের পরীক্ষা না করানোয় সমস্যা বেড়েই চলেছে। তাই সদ্যোজাতেরা শুনতে পাচ্ছে কি না, তা জন্মানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে বা হাসপাতালে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। আর যদি বধিরতা ধরাও পড়ে, তাতে অবসাদগ্রস্থ না হয়ে শ্রবণ-যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে ছেলে-মেয়েদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার কথাই জানানো হল শিবিরে।
আরও পড়ুন: হাউজ হাজব্যান্ড হওয়ার চার সুপার সুবিধা