—প্রতীকী চিত্র।
আপনি কি জানেন হাঁচির গতিবেগ কত? না, কোনও হেঁয়ালি নয়।
জানলে হয়তো অবাক হবেন, হাঁচির সময় যে হাওয়া আমাদের নাক-মুখ দিয়ে বেরোয় তার গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১৬০ কিলোমিটারেরও বেশি!
এ কথা হয়তো কম-বেশি সকলেই মানবেন যে, হাঁচি চেপে রাখা বেজায় মুশকিল। যখন তখন, যেখানে সেখানে প্রায় বিনা নোটিসে এসে পড়ে হাঁচি। আচমকা তার আবির্ভাবে যে শুধু আপনিই চমকে ওঠেন, তা কিন্তু নয়। হাঁচির দমকে অনেক ক্ষেত্রে চমকে ওঠেন আসপাশের মানুষও।
সেই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা অনেকেই একটা পন্থা নিয়ে থাকি। আমাদের সেই অতি পরিচিত পন্থাটি হল, দু’আঙুলে নাক চেপে ধরে মুখ বন্ধ করে রাখা। এ ভাবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হাঁচি চাপা সম্ভব হয়। কিন্তু জানেন কি এ ভাবে হাঁচি চাপার চেষ্টা মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে?
আরও পড়ুন: ঠান্ডা থেকে সাবধান
ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি হসপিটাল অব লিসেস্টার-এর এক চিকিত্সক একটি পত্রিকায় তাঁর সাম্প্রতিক একটি অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে সকলকে সতর্ক করেছেন। ‘বিএমজে কেস রিপোর্ট’ পত্রিকার ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি বছর চৌত্রিশের এক ভদ্রলোক গলায় অসহ্য ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে চিকিত্সকরা জানতে পারেন, তিনি দু’ আঙুলে নাক চেপে মুখ বন্ধ করে হাঁচি চাপার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এর পর থেকেই তিনি গলায় অসম্ভব যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকেন। বুঝতে পারেন যে, ঢোক গিলতে গেলে বেশ কষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বদলে গিয়েছে কণ্ঠস্বরও।
আরও পড়ুন: মুঠো মুঠো ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট ডেকে আনতে পারে বিপদ
স্ক্যান করে চিকিত্সকেরা দেখেন, ওই ব্যক্তির গলবিল (খাদ্যনালি ও শ্বাসনালির সংযোগকারী অংশ) মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফুসফুস সংলগ্ন পেশিগুলিতে বাতাসের বুদবুদ জমে গিয়েছে। ফলে ফুসফুসের স্বাভাবিক কাজ ব্যহত হচ্ছে। একটুও ঝুঁকি না নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, দিন সাতেক হাসপাতালে কাটিয়ে সুস্থ হয়েই বাড়ি ফেরেন ওই ব্যক্তি। যদিও হাসপাতালে শুরুর ক’টা দিন নলের মাধ্যমেই তাঁকে খাওয়ানো হয়েছিল।
‘বিএমজে কেস রিপোর্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ভাবে হাঁচি চাপার ফলে হাঁচির সময় নির্গত বাতাসের যা গতিবেগ তার চেয়ে বহু গুণ বেশি চাপ পড়ে আমাদের ফুসফুসের উপর। এর জেরে, ব্যহত হতে পারে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়াও। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে!