আপনি কি প্রায়ই সর্দি, কাশি, জ্বরের সমস্যায় ভোগেন? আর তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াটাকে প্রায় অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন? তা হলে এখনই সাবধান হয়ে যান। চিকিত্সকরা বলছেন, যত অ্যান্টিবায়োটিক থেকে দূরে থেকে সময় দিয়ে সমস্যা কমানোর চেষ্টা করবেন ততই ভাল। অল্প বয়সে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ডোজ পরবর্তীকালে ডেকে আনতে পারে ক্যানসারের সমস্যা।
অ্যান্টিবায়োটিক গাট মাইক্রোবায়োমের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেয়। যার ফলে নষ্ট হয়ে যায় প্রতিরোধ ক্ষমতা। ফলে অল্প বয়সে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক খেলে কোলনে পলিপ ও রেক্টামে কোলোরেক্টাল অ্যাডেনোমার ঝুঁকি বাড়ে। এর থেকেই ছড়িয়ে পড়তে পারে পেটের ক্যানসার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নার্সেস হেলথ স্টাডি ১,২১,৭০০ জন নার্সকে নিয়ে এই গবেষণা করে। ১৯৭৬ সালে গবেষণা শুরুর সময় যাদের প্রত্যেকেরই বয়স ছিল ৩০-৫৫ বছরের মধ্যে। গবেষণায় অংশগ্রহণের পর থেকে প্রতি দু’বছর অন্তর তাদের বিভিন্ন লাইফস্টাইল ফ্যাক্টর, মেডিক্যাল হিস্ট্রি, অসুখের রেকর্ড রাখা হয়। প্রতি ৪ বছর অন্তর তাদের ডায়েটের রেকর্ড রাখা হয়।
২০০৪ সালে এদের মধ্যে থেকে ১৬,৬৪২ জন নার্সকে বেছে নেওয়া হয়। যাদের বয়স সেই সময় ৬০ বা তার কিছুটা বেশি ছিল। এদের ২০ থেকে ৫৯ বছর বয়স পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার রেকর্ড নেওয়া হয় এবং ২০০৪ সালে ২০১০ সাল পর্যন্ত অন্তত এক বার কোলোনোস্কপি করানো হয়। এই সময়ের মধ্যে ১১৯৫ জলের অ্যাডেনোমা ধরা পড়েছিল। যারা পরীক্ষার আগের চার বছরের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েছেন তাদের মধ্যে ক্যানসারের সমস্যা দেখা দেয়নি। কিন্তু যারা আগের বছরগুলোতে দীর্ঘ সময় (২০-৩০ বছরের মধ্যে) অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েছেন তাদের মধ্যে ক্যানসারের প্রকোপ লক্ষ্য করা গিয়েছে। বিশেষ করে যারা কোনও দীর্ঘকালীন অসুস্থতার কারণে টানা ২ মাসের বেশি সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েছেন, তারা অ্যাডেনোমায় আক্রান্ত হয়েছেন, ও ক্যানসারের ঝুঁকি ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছে।
অন্য দিকে, যেই মহিলারা ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে একবারও অ্যান্টিবায়োটিক খাননি তাদের তুলনায় যারা ২০-৩৯ বছর ও ৪০-৫৯ বয়সের মধ্যে অন্তত টানা ১৫ দিন অ্যান্টিবায়োটিক খেয়েছেন তাদের অ্যাডেনোমার ঝুঁকি ৭৩ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: খেতে বসে এই ৩ ভুলের কারণেই বদহজম হয়
‘গাট’ অনলাইন জার্নালে এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে।