লাগামছাড়া আদার ব্যবহার ডেকে আনছে নানা ক্ষতি। ছবি: শাটারস্টক।
আদার নানা রকমের গুণ সম্পর্কে মোটামুটি সকলেই ওয়াকিবহাল। রান্নায় আলাদা স্বাদ আনতে যে এর কোনও ব্যতিক্রম নেই তা তো সকলেই জানি। আবার ঠান্ডা লেগে গলা ব্যথা বা কাশি হোক, কিংবা বমি ভাব, এক টুকরো আদা খেলেই বেশ উপশম পাওয়া যায়।
আবার এই আদাই চায়ের মধ্যে মিশিয়ে খেলে তা এক আলাদা মাত্রা এনে দেয়। গলা খুশখুশ করলে এককাপ আদা চা খেলেই মিটতে পারে সমস্যা। তবে এই আদার মধ্যেও এমন অনেক কিছু আছে যা শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়াও দেখায়। বিশেষ করে রান্নায় অতিরিক্ত আদা ব্যবহার বা শুকোনো আদা খাওয়ার নেশা শরীরে ক্ষতি ডেকে আনে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ‘‘আমরা না জেনেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে যথেচ্ছ আদা ব্যবহার করি। অতিরিক্ত যে কোনও জিনিসই খারাপ, আদাও তার ব্যতিক্রমী নয়। বেশ কিছু রোগ থাকলেও আদা এড়িয়ে চলা উচিত। তাই খুব বেশি আদা খাওয়ার আগে একটু সচেতন হোন।’’ জানেন কেন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে আদার ব্যবহার?
আরও পড়ুন: ভাবছেন মেদ ঝরছে, উল্টে এই সব ভুলই মেদ বাড়াচ্ছে আপনার
আদা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে। তাই কারও যদি শরীরের ওজন কম হয়, সে ক্ষেত্রে আদার খুবই কম খাওয়া উচিত। কারণ, আদায় ফাইবার থাকে প্রচুর পরিমাণে, যা শরীরের পিএইচ লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে হজমের প্রক্রিয়া খুবই ভাল হয়। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় পিএইচ লেভেল বাড়লে ওজন আরও কমতে থাকে। ওজন বাড়াতে চাইলে আদা না খাওয়াই ভাল। শরীরে রক্ত চলাচল করতে সাহায্য করে আদা। ফলে, যাঁদের ওজন বেশি ও ডায়াবিটিস রয়েছে, তাঁদের জন্য আদা উপকারী। কিন্তু, যাঁদের হিমোফিলিয়া রয়েছে, তাঁদের জন্য আদা প্রায় বিষের সমান। তাই আদা কতটা খাবেন, সেটা বুঝে খান।
চায়েও ঘন ঘন আদার ব্যবহার করেন অনেকেই।
যখন কোনও বিশেষ ধরনের ওষুধ খেতে হয়, তখন এর সঙ্গে আদার কোনও শত্রুতা আছে কি না তা জেনে নিন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের থেকে। যাঁরা ডায়াবিটিস বা ব্লাড প্রেশারের ওষুধ খান, তাঁদের জন্য আদা বেশ ক্ষতিকর। কারণ, এই দুই অসুখের জন্য যে ওষুধ ব্যবহৃত হয়, তার সঙ্গে আদার রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটলে খারাপ প্রভাব পড়ে। তাই সেই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আরও পড়ুন: এ সব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হোন, রক্তাল্পতার হাত ধরে অন্য অসুখ বাসা বাঁধছে না তো?
অতিরিক্ত আদা খেতে বুকে ব্যথাও হতে পারে। গর্ভাবস্থায় আদা না খাওয়াই ভাল। আদায় বেশ কয়েক ধরনের স্টিম্যুলেট রয়েছে যা শরীরের পেশী মজবুত করে। ফলে অন্তঃসত্তা মহিলাদের আদা এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস।