Bird Flu Death

বার্ড ফ্লু-তে মৃত্যু হয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের এক শিশুর, মানুষের জন্য কতটা ভয়ের এই ভাইরাস?

ওই শিশু আধকাঁচা মুরগির মাংস খেয়েছিল। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষা করে তার শরীরে এইচ৫এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের স্ট্রেন পাওয়া যায়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৩৫
Share:

বার্ড ফ্লু-তে মৃত্যু অন্ধ্রপ্রদেশের এক শিশুকন্যার।

বার্ড ফ্লু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল বছর দুয়েকের শিশুকন্যার। অন্ধ্রপ্রদেশের পালনাড়ু জেলার বালাইয়া নগরে এই ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে, মেয়েটি আধকাঁচা মুরগির মাংস খেয়েছিল। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরীক্ষা করে তার শরীরে এইচ৫এন১ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের স্ট্রেন পাওয়া যায়। চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় শিশুটির।

Advertisement

ধুম জ্বর নিয়ে ৪ মার্চ শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বলে খবর। সেই সঙ্গেই ডায়েরিয়া ও শ্বাসকষ্টেও ভুগছিল শিশুটি। ১৬ মার্চ তার মৃত্যু হয়। যদিও তার পরিবারের সদস্যদের শরীরে বার্ড ফ্লু ভাইরাস পাওয়া যায়নি।

মেয়েটির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আধকাঁচা মুরগির মাংস খেয়ে ফেলেছিল শিশুটি। রান্না হওয়ার সময়েই একটি টুকরো সে খেয়ে নেয়। তার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশুটির শরীর থেকে নেওয়া নমুনা পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (এনআইভি)-তে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। সেখানেই ধরা পড়ে, মেয়েটি অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়েছিল।

Advertisement

অন্ধ্রপ্রদেশে গত কয়েক মাস ধরে বার্ড ফ্লু-র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এলুরু, এনটিআর, পশ্চিম গোদাবরী-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় হাজার হাজার মুরগির মৃত্যু হয়েছে ভাইরাসের সংক্রমণে। কুর্নুলে হাঁসের খামারেও ধরা পড়েছে বার্ড ফ্লু-র সংক্রমণ। অন্ধ্রের বেশ কিছু এলাকাকে ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল স্থানীয় প্রশাসনের তরফে। যদিও আধিকারিকেরা দাবি করেছিলেন, বার্ড ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ কমেছে অন্ধ্রের জেলাগুলিতে। তবে এর মধ্যেই এক শিশুর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এল।

বার্ড ফ্লু মানুষের জন্য কতটা ভয়ের?

‘বার্ড ফ্লু’ ভাইরাস যে প্রচণ্ড ছোঁয়াচে, তাতে কোনও সন্দেহই নেই। একটি খামারে একটি হাঁস বা মুরগির শরীরে ভাইরাস ঢুকলে কিছু দিনেই খামারের পর খামারে মড়ক লেগে যায়। আবার পরিযায়ী পাখিরাও সেই দূর দেশ থেকে ভাইরাস বয়ে নিয়ে আসে। তাদের সংস্পর্শে এসেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। বার্ড ফ্লু-কে বলা হয় ‘অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা’। অর্থাৎ, পাখিদের থেকে যে ভাইরাস ছড়ায়। পাখিরা এই ভাইরাসের বাহক। কিন্তু মানুষের শরীরেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

এক জন মানুষের শরীরে ভাইরাস ঢুকলে, তার থেকে আরও পাঁচ জনের মধ্যে তা ছড়াতে পারে। আক্রান্তের হাঁচি, কাশি, থুতু-লালা, মলমূত্রের মাধ্যমে সুস্থ মানুষের শরীরেও চট করে ঢুকে যেতে পারে ভাইরাস। ভারতে এখনও পর্যন্ত দুই ধরনের বার্ড ফ্লু তথা অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে— এইচ৫এন১ এবং এইচ৭এন৯। মানুষের শরীরে ভাইরাস ঢুকলে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতোই উপসর্গ দেখা দেবে। নাক-মুখ দিয়ে জল পড়া, হাঁচি-কাশি, গায়ে, হাত, পায়ে ব্যথা হবে। জ্বর আসবে। শ্বাসের সমস্যা হতে পারে। গলায় ব্যথাও হতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে নিউমোনিয়ার লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এই সব লক্ষণ যদি দেখা দেয়, তা হলে ভাইরাল প্যানেল টেস্ট করিয়ে নিতে হবে। চিকিৎসক যদি বোঝেন, শরীরে ভাইরাসের স্ট্রেন রয়েছে, তা হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা শুরু হবে। শ্বাসের কষ্ট হলে অক্সিজেন দিতে হবে। তা ছাড়া, রোগীকে নিভৃতবাসে রাখা জরুরি। রোগীর পরিবারের লোকজনকেও নিভৃতবাসে রেখে পরীক্ষা করিয়ে দেখতে হবে সংক্রমণ কারও মধ্যে ছড়িয়েছে কি না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement