flirting

দীর্ঘ সম্পর্কে একঘেয়েমি, শরীর ভাল রাখতে ‘ফ্লার্ট’ করুন অন্য কারও সঙ্গে

চারপাশের চাপ খানিকটা যেন কম মনে হয় কাজের ফাঁকে কোনও মানুষের সঙ্গে খেলার ছলে ক’টা প্রেমপূর্ণ কথা হলে।

Advertisement
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:৪২
Share:

হাসি-ঠাট্টা, কয়েক পেয়ালা চা আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে। ছবি: সংগৃহীত

কখনও চোখে-চোখে। কখনও বাক্যালাপেই। অল্প প্রশংসার ছলে। ঠিক প্রেম নয়। প্রেম-প্রেম ভাব দেখানো মাত্র। কিছু ভাল কথা, একটু দুষ্টুমি। খানিকটা চাঞ্চল্য। আর তার মাধ্যমেই কিছু ক্ষণের জন্য মনটা ভাল করে নেওয়া। মেজাজটা ফুরফুরে রাখা। একে ভাল বলবেন, না মন্দ?

Advertisement

আজ, বৃহস্পতিবার অ-প্রেম সপ্তাহের চতুর্থ দিনটি ‘ফ্লার্ট ডে’ হিসেবে পরিচিত। যাঁকে দূর থেকে দেখে মনটা একটু উড়ু উড়ু বোধ করে, তাঁর কাছে গিয়ে আরও একটু মিষ্টি কথা বলার দিন এটি। মাঝেমাঝে সুযোগ বুঝে আরও একটু বন্ধুত্বপূর্ণ আদানপ্রদান তো মন ভাল করেই। কিন্তু লোকে যে বলেন, ফ্লার্ট করা ভাল নয়? তাতে মনের ভাবটা ঠিক প্রকাশ পায় না। অন্যের অস্বস্তি হতে পারে। তবে কি ‘ফ্লার্ট ডে’ উদ্‌যাপন করবেন, না করবেন না?

দেশ-বিদেশের মনোবিদেরা বলছেন, হাল্কা ফ্লার্টিংয়ে কোনও ক্ষতি নেই। বরং তা শরীরের জন্যও ভাল। চারপাশের চাপ খানিকটা যেন কম মনে হয় কাজের ফাঁকে কোনও মানুষের সঙ্গে খেলার ছলে ক’টা প্রেমপূর্ণ কথা হলে। আর তা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল বলেই মনে করেন বহু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। কোনও বন্ধু কিংবা সহকর্মীর সঙ্গে তেমন হাসি-ঠাট্টা, সঙ্গে কয়েক পেয়ালা চা নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতেও মাঝেমধ্যে সাহায্য করে। অনেক দিন একই সম্পর্কের মধ্যে থাকলে কারও মনে হতেই পারে, গুরুত্ব কমে গিয়েছে। হয়তো আপনার সব কিছু আর ততটা আলাদা ভাবে প্রাধান্য পায় না সঙ্গীর কাছ থেকে। তখন বাইরে কারও সঙ্গে দু’টি চাঞ্চল্যকর আদানপ্রদান একটু আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। এই যে এক জন অন্যদের থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে কাউকে, তা-ই আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।

Advertisement

রোজের নিয়মিত সম্পর্কগুলোর বাইরে আরও কারও কারও নজর টানে এই ধরনের প্রেম-প্রেম আদানপ্রদান। তাতে যেমন নিজের মন উৎফুল্ল থাকে, তেমন আবার আরও একটু ভাল হয়ে ওঠার ইচ্ছেও জন্মায়। কারও সঙ্গে ফ্লার্ট করতে গেলে তিনি আপনাকে ভাল বলছেন কি না, সে দিকটা স্বভাবতই মনের মধ্যে কাজ করে। ফলে কাজের জায়গাই হোক, বা কোনও বন্ধুত্বপূর্ণ জমায়েত— নিজের ভাল দিকগুলো আরও ভাল করে তোলার ইচ্ছে জাগে। তারই সঙ্গে বাড়ে যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষমতা। যখনই দেখবেন নতুন কেউ আপনাকে পাত্তা দিচ্ছেন, তখন এমনিতেই আরও বেশি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করতে ইচ্ছে করবে। যোগাযোগ নির্ভর এই সময়ে তাই ফ্লার্টিংয়ে দক্ষ হলে অনেক কাজেই ভাল হওয়া যায় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা।

তবে সব ভালর মন্দও থাকে! তাই আপনার কোনও কথা যেন অন্যের ক্ষতি না করে ফেলে, সে দিকে খেয়াল রাখা দরকার বলে মনে করেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, এ ধরনের আদানপ্রদানে ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেইটা মোটেই কাম্য নয়। ফলে শুধু নিজের ভাল লাগলেই হল না। যাঁর সঙ্গে সেই আলাপচারিতা হচ্ছে, তাঁর কেমন লাগছে ভাবতে হবে। অনুত্তমা বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, এক জন হয়তো সকলের সঙ্গেই খেলার ছলে প্রেম-প্রেম ভাব করে থাকেন, আর অন্য জন সেই ফ্লার্টিংকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেললেন। তার থেকে আরও গাঢ় সম্পর্কের আশা রাখলেন। তখন সমস্যায় পড়েন অন্য মানুষটি।’’

মনোবিদের আরও বক্তব্য, অনেক সময়ে এমন আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে দেখা যায়, দুই ব্যক্তির মধ্যে সম্পর্কটি অসম। কাজের জায়গায় ঊর্ধ্বতন পদের কেউ, কিংবা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কারও সঙ্গে ও রকম ‘ঢলে পড়ে’ কথা বলেন। সে সব ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন অপর জন। কারণ, সেই আচরণ তাঁর ভাল না লাগলেও, অনেকে তা প্রকাশ করতে পারেন না। ভয়ে পেয়ে চুপ করে থাকেন হয়তো। ফ্লার্টিংয়ের ক্ষেত্রে সম্মতি দু’দিক থেকে আসা জরুরি বলে মত অনুত্তমার।

ফলে ‘ফ্লার্ট ডে’ নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করার আগে খেয়াল রাখা ভাল অপর মানুষটির মনের দিকে। দু’তরফের সম্মতি যদি থাকে, তবেই ভাল কিছু মিলতে পারে এর থেকে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন