বর্ষার সময়ের সুরক্ষাবিধি, পরামর্শ দিল এফএসএসএআই। ছবি: ফ্রিপিক।
অপরিচ্ছন্ন রান্নাঘরই পেটের রোগের কারণ নয় তো? বৃষ্টির দিন এলে জীবাণুঘটিত রোগ বেড়ে যায়। খাবার বা জল থেকে ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাকের সংক্রমণ ঘটে। দেখা যায়, বর্ষার সময়ে পেটের গোলমাল, ডায়েরিয়ার প্রকোপ বাড়ে। এর জন্য রাস্তার খাবার, দূষিত জলকেই দায়ী করা হয়। কিন্তু আদতে দেখা যায়, বাড়ির রান্নাঘর থেকেই হয়তো রোগজীবাণু বেশি ছড়াচ্ছে। অপরিষ্কার রান্নাঘর সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকের আঁতুড়ঘর। কী ভাবে তা পরিচ্ছন্ন রাখবেন, কী উপায়ে খাবারদাবার সংরক্ষণ করলে অসুখবিসুখ হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না, সে নিয়ে কিছু নির্দেশিকা দিয়েছে খাদ্যের গুণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফএসএসএআই (ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া)।
বর্ষার সময়ের সুরক্ষিবিধি
রান্নাঘর পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন
রান্নার আগে ও পরে রান্নাঘর ভাল করে পরিষ্কার করে নিতে হবে। রান্নার গ্যাস অভেন থেকে কাটিং বোর্ড, থালা-বাসন, রান্নায় ব্যবহৃত সরঞ্জাম ব্যবহারের আগে ও পরে নুন-গরম জলে পরিষ্কার করতে হবে। রান্নাঘরের তাক ও মেঝে সাবান জল দিয়ে ধুতে হবে। ধোয়ার পরে শুকনো করে মুছেও নিতে হবে। কারণ, ভিজে ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ রোগজীবাণুর বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ।
সপ্তাহে দু’বার ফ্রিজ পরিষ্কার
ফ্রিজ পরিষ্কার না করলে তাতে রাখা রান্না খাবার ও কাঁচা আনাজ থেকেও বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। বিশেষ করে কাঁচা মাছ বা মাংস রাখার পরে সেই জায়গাটি পরিষ্কার না করলে, সেখান থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে। ফ্রিজে অনেক সময়ে পুরনো সব্জি বা খাবার পড়ে থাকে। সেগুলি থেকে দুর্গন্ধও ছড়ায়। সে সব বার করে একটি প্লাস্টিকের প্যাকেটে ফেলে দিন। অন্যান্য খাবার বা সব্জি বার করে পুরো ফ্রিজ খালি করে ফেলুন। ফ্রিজ পরিষ্কারের জন্য বাড়িতেই তৈরি করতে পারেন তরল সাবান। এক বালতি জলে ১ কাপ অ্যামোনিয়া, ১/২ কাপ ভিনিগার ও ১/৪ কাপ বেকিং সোডা মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। ফ্রিজ পরিষ্কার করার জন্য এটি একটি স্প্রে বোতলে ভরে ব্যবহার করতে পারেন।
বর্জ্য ফেলার জায়গা
রান্নাঘরের যত্রতত্র আনাজপাতির খোসা ছড়িয়ে রাখবেন না। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বর্জ্য ফেলার বালতি বা পাত্র রাখুন। সেটি সব সময়ে ঢাকা দিয়ে রাখতে হবে। সব্জির খোসা, ডিমের খোলা, মাছের আঁশ ইত্যাদি রান্নাঘরে জমিয়ে রাখবেন না। এগুলি দ্রুত পচে গিয়ে জীবাণু ছড়াতে পারে।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা
রান্না করার আগে অবশ্যই হাত ধুতে হবে। স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করলে ভাল হয়। পরিষ্কার জামাকাপড় পরুন, অ্যাপ্রন চাপিয়ে নিলে ভাল হয়। চুল ভাল করে আঁচড়ে বেঁধে নিতে হবে। মাথা ঢেকে রাখতে পারলে ভাল হয়। হাতের নখ ছোট করে কাটা থাকলে ভাল এবং নখ পরিষ্কার রাখতে হবে। রান্নার সময়ে রান্নাঘরে মোবাইল, ট্যাব বা কোনও গ্যাজেট নিয়ে যাবেন না। এর থেকেও জীবাণু রান্নাঘরে ঢুকতে পারে।