রাসায়নিক সার নয়, জৈব সারে বাড়িতেই ফলাতে পারেন পালং। ছবি: সংগৃহীত।
পুষ্টিগুণে ভরপুর। ভিটামিন, খনিজের কমতি নেই। সে কারণে অমলেট থেকে স্মুদিতেও এখন মেশানো হচ্ছে পালং শাক। বাঙালি হেঁশেলের চিরপরচিত পালং শাকের ঘণ্ট তো আছেই, নয়া প্রজন্মের পছন্দের তালিকাতেও জায়গা করে নিয়েছে পালং চিকেন, পালং পনির।
চিকিৎসকেরা বলছেন, রোগব্যাধি দূরে রেখে সুস্থ থাকতে চাইলে টাটকা শাকপাতা খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু তাতেই যদি মেশে রাসায়নিক, কৃত্রিম রং তা হলে কি আর পুষ্টিগুণ বজায় থাকে? তার চেয়ে বরং বাড়িতেই ফলাতে পারেন পালং শাক। নিয়ম জানলে ঝক্কি মনে হবে না মোটেই।
আলো-হাওয়া: চ়়ড়া রোদ নয় বরং সূর্যের তাপ আসে এমন খোলামেলা জায়গাই পালংশাক চাষের জন্য আদর্শ। বারান্দার এক কোনেও বড়সড় টবে পালং ফলানো যায়। তবে দেখতে হবে সেখানে যেন সকালের রোদ এসে পড়ে। দুপুরে রোদে গাছের পাতা শুকিয়ে যেতে পারে। তাই ছায়া রয়েছে এমন স্থানে সেটি রাখতে হবে।
মাটি: ১৫-২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত গাছের শিকড় বিস্তৃত হয়। সেই বুঝে টব বেছে নিতে হবে। গাছের জন্য মাটি হবে একটু আলগা। যাতে জল জমতে না পারে। বাগানের সাধারণ মাটির সঙ্গে জৈব সার মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টবের জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা যেন উপযুক্ত হয়।
বীজ বপন: মাটি অন্তত দেড় সেন্টিমিটারের মতো খুঁড়ে বীজ ছড়াতে পারে। গায়ে গায়ে নয়, বীজ ছড়ানোর সময় অন্তত ৫ সেন্টিমিটার দূরত্ব থাকা আবশ্যক। বীজ ফেলার পর মাটি আলগা করে ঢাকা দিতে হবে। অল্প করে জল দেওয়াও জরুরি। তবে মাটিতে আলো-হাওয়া চলাচল করতে না পারলে আবার ছত্রাক ধরে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে ১৪-২৫ দিনের মধ্যে চারা গজাবে।
মাটি যেন হালকা আর্দ্র থাকে: মাটি শুকিয়ে গেলে গাছ ঠিকমতো বৃদ্ধি পাবে না। তাই হালকা ভিজে ভাব থাকা দরকার। তবে মাটিতে জল বসলে ছত্রাক সংক্রমণের ভয় থাকবে, গোড়াও পচে যেতে পারে।
একসঙ্গে বেশি চারা নয়: গাছের চারা ৫-৭ সেন্টিমিটার বেড়ে উঠলেই দুর্বল পাতা ছেঁটে দিতে হবে। একসঙ্গে প্রচুর পাতা বেড়ে উঠলে গাছের বৃদ্ধি ঠিকমতো হবে না। গাছ অতিরিক্ত ঘেঁষাঘেষি হয়ে থাকলে সেগুলি তুলে অন্যত্র রোপণ করতে পারেন। এতে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি এড়ানো যাবে।
পোকামাকড়: বর্ষার স্যাঁতসেতে আবহাওয়ায় গাছে নানা রকম পোকার হামলা হতে পারে। গাছ বাঁচাতে নিম তেল স্প্রে করা যেতে পারে।
উৎপাদন: পাতা কচি থাকতেই কেটে নেওয়া ভাল। দীর্ঘ সময় ফল পেতে প্রথমে বাইরের দিকের পাতা তার পর ভিতরের দিকের পাতা কেটে নিন।