ঘরের বাতাস শুদ্ধ রাখবে, মনও ভাল করবে একটি বিশেষ গাছ। ছবি: ফ্রিপিক।
অন্দরসজ্জায় সবুজের ছোঁয়া দিতে চান অবশ্যই। তা হলে এমন কিছু গাছ বেছে নিন যা গরমের দিনে ঘর ঠান্ডা রাখতে পারবে। শুধু তাই নয়, ঘরের ভিতরের দূষণও দূর করবে। তা ছাড়া ভ্যাপসা গরমে মনও ভাল থাকে না। গ্রীষ্মকালীন মনখারাপ কাটিয়ে দিতে পারে কিছু গাছ। অনেকের বাড়ির অন্দরেই বাহারি গাছেদের সারি রয়েছে। এই গরমে শারীরিক এবং মানসিক স্বস্তি পেতে একটি বিশেষ গাছ অবশ্যই রাখতে পারেন বাড়িতে। কম যত্নেও দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এই গাছ।
ঘর সাজাতে যে সব গাছ কেনেন, তার মধ্যে একটি হল স্নেক প্ল্যান্ট। ঘরের বাতাস থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। বাতাস ফুরফুরে রাখে। ফলে অস্বস্তি কম হয়। খুব কম জলে বেঁচে থাকে এই গাছগুলি। খুব বেশি আলোরও প্রয়োজন নেই এদের। তাই ঘরের কোণে, যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো পৌঁছোয় না, সেখানেও দিব্যি রাখা যায়। সপ্তাহে এক দিন বা কোনও কোনও সময়ে দশ দিনে এক বার জল দিলেও চলে।
স্নেক প্ল্যান্ট কী কী কাজে লাগতে পারে, তা জানলে অবাক হবেন। ঘরের ভিতরের কার্বন-ডাই অক্সাইড শুষে নিতে পারে এই গাছ। দূষণ প্রতিরোধক গাছ হিসাবে স্নেক প্ল্যান্টকে বহু আগেই স্বীকৃতি দিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসা। ঘরের ভিতরে যে সব দূষিত পদার্থ জমে থাকে, তা দূর করতে পারে এই গাছ। জানলে অবাক হবেন, বাইরের পরিবেশে যে মাত্রায় দূষিত পদার্থ ছড়িয়ে থাকে, তার চেয়ে ঘরের ভিতরে দূষণের মাত্রা কিন্তু বেশি বই কম থাকে না। শহরের রাস্তাঘাটে বাড়তে থাকা যানবাহন এবং তজ্জনিত বাতাসের বিষাক্ত পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম কণা ঘরের ভিতরেও ছড়িয়ে থাকে। বাড়ির আশপাশের পরিবেশ অবশ্যই দূষণের ক্ষেত্রে একটা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ব্যস্ত রাস্তা বা কোনও রেস্তরাঁর রান্নাঘরের কাছাকাছি থাকা বাড়িতে স্বাভাবিক ভাবেই দূষণ বেশি হয়। তা ছাড়া ধূমপান, এসি থেকে বেরোনো রাসায়নিক, রান্নাঘরে তেল-মশলার গন্ধ, ধোঁয়া বাইরে বেরোতে না পারলে ঘরের ভিতরের বাতাসকে দূষিত করে দেয়। শ্বাসের সঙ্গে সেই সব দূষিত কণা শরীরে ঢুকে শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের রোগ, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা তৈরি করে। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, স্নেক প্ল্যান্ট ঘরের ভিতরে থাকা টক্সিন যেমন ফর্মালডিহাইড, বেঞ্জিন, জ়াইলিন, টলুইনের মতো রাসায়নিক শুষে নিতে পারে। এই ভাবে ঘরকে দূষণমুক্ত করতে পারে।
স্নেক প্ল্যান্ট। ছবি: ফ্রিপিক।
স্নেক প্ল্যান্টের আরও একটা সুবিধা হল, মাটি ছাড়াই ভাল থাকতে পারে এই গাছ। কাচের জারে জল দিয়েও ঘরে রাখে অনেকে। এই গাছ এত বেশি অক্সিজেনের জোগান দেয় যে, ঘরের ভিতরের হাওয়া খুব একটা অশুদ্ধ হতে পারে না।