hair care

লকডাউন আর বর্ষার যুগলবন্দিতে চুলের যত্নের দফারফা? রইল ঘরোয়া উপায়ে সমাধান

অতিমারির সময় হলেও চুলের যত্ন নিতে ভুলবেন না। এতে চুলের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ঝলমল করবে আপনার মন-ও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ১৫:৩৬
Share:

অতিমারির সময় হলেও চুলের যত্ন নিতে ভুলবেন না—ছবি:শাটারস্টক

বর্ষাকালে চুলের সমস্যায় জেরবার হন না, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এমন বাঙালি বিরল। খাতায়কলমে শ্রাবণ বিদায় নিলেও বর্ষা এখনও পাততাড়ি গুটিয়ে ফেলেনি। বরং, মাঝে মাঝেই মুখ ভার করছে আকাশ। আর, সময়ের মন তো অনেকদিন ধরেই গম্ভীর। অতিমারির সময় হলেও চুলের যত্ন নিতে ভুলবেন না। এতে চুলের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি ঝলমল করবে আপনার মন-ও।

Advertisement

বাড়িতে সময় পান না বলে অনেকেই বিউটি পার্লারের যত্নের উপরেই নির্ভর করেন। কিন্তু এখন করোনা ও লকডাউনের জেরে সে পথ-ও প্রায় বন্ধ। বেশির ভাগ পার্লার খোলেনি। কিছু পার্লার নির্দিষ্ট নিয়মবিধি মেনে খুললেও অনেকেই ভয় পাচ্ছেন সেখানে যেতে। আপনি কিন্তু বাড়িতে বসেই পার্লারের মতো যত্নআত্তি করতে পারেন নিজের চুলের, বলছেন রূপ বিশেষজ্ঞ পৌষালী সেন বরাট। তাঁর কথায়, আমাদের ঘরেই মজুত থাকে সমস্যার মুশকিল আসান। শুধু হাত বাড়িয়ে তাদের তুলে নেওয়ার অপেক্ষা। বাড়িতে বসে কী ভাবে চুলের যত্ন নেবেন, সেই টোটকা জানালেন পৌষালী।

চুলের জেল্লা ধরে রাখতে হলে বাইরের মতো যত্ন নিতে হবে ভিতর থেকেও, বলছেন পৌষালী। তাঁর কথায়, ডায়েটে অন্য যা-ই থাকুক না কেন, রাখতেই হবে ১২ থেকে ১৪ গ্লাস জল। চুল ভাল রাখার প্রথম শর্ত এটাই।

Advertisement

তাজা ফলমূল এবং শাকসব্জির সঙ্গে রোজ আমলকিও খান। চুলে লাগানোর পাশাপাশি আমলকি বা আমলা খেলেও চুলের ক্ষেত্রে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। চুল পড়া বন্ধ হওয়ার সঙ্গে নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে ত্রিফলার অন্যতম এই ফলটি।

ডায়েট তো হল। এ বার চুলে কী লাগাবেন? বাড়িতেই অনুসরণ করুন প্রি কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট। তার জন্য আগে তুলে নিন সরষের তেল। যদি ঘানির তেল পান, খুব ভাল। না পেলেও চিন্তার কিছু নেই। রান্নাঘরের তেলের শিশি থেকে ঢেলে নিন। তার পর হাল্কা হাতে মাসাজ করুন। তবে মনে রাখবেন, মালিশের আগে কিছুটা ভিজিয়ে নেবেন চুল। অন্তত ৭০ শতাংশ ভিজে চুলে মালিশ করুন সর্ষের তেল।

চুল ভাল রাখতে সর্ষের তেল জুড়িহীন—ছবি:শাটারস্টক

তবে শুধুই চুলে মালিশ করুন। স্ক্যাল্পে সর্ষের তেল না লাগানোই ভাল। চুলে ভাল করে মাসাজ হয়ে গেলে ২০ মিনিট মতো অপেক্ষা করুন। তার পর ভাল করে শ্যাম্পু করে নিন। শ্যাম্পু হয়ে গেলে কন্ডিশনার লাগান। পাঁচ মিনিট পরে ভাল করে চুল ধুয়ে ফেলুন। সবার শেষে চুলে লাগান সিরাম।

তবে স্ক্যাল্পে যেন কন্ডিশনার লেগে না থাকে, দেখতে হবে সেটাও। কারণ নোংরা স্ক্যাল্পও চুল ওঠার অন্যতম কারণ। সেইসঙ্গে নতুন চুল উঠতে সমস্যা হয়। তাই সবসময়, বিশেষত বর্ষাকালে স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখা একান্ত জরুরি। মত সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ পৌষালীর।

আধভেজা চুলে সরষের তেল লাগানো থেকে সিরামের প্রলেপ, এই পুরো প্রক্রিয়াকেই বলে প্রি কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট। সপ্তাহে অন্তত তিন বার এই রুটিন ফলো করলে বর্ষার স্যাঁতসেতে মরসুমেও চুল থাকবে প্রাণবন্ত।

এ ছাড়াও স্ক্যাল্পে লাগানো যেতে পারে পেঁয়াজ এবং অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর রস। পেঁয়াজ তো পাওয়া যাবে রান্নাঘরেই। অ্যালোভেরা গাছও কিন্তু সহজেই বড় হয় বারান্দার টবে, বিশেষ যত্নআত্তি ছাড়াই। সে সময়টুকুও না থাকলে বাজারের বোতলবন্দি অ্যালোভেরা রসের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া উপায় নেই।

অনেকেই রাতভর চুলে তেল লাগিয়ে রাখেন। সে ক্ষেত্রে সরষের বদলে ভাল নারকেল তেল-ই। বলছেন পৌষালী। চাইলে ব্যবহার করা যেতে পারে অলিভ অয়েলও। তবে খুসকির সমস্যা থাকলে সারা রাত চুলে তেল মেখে থাকা নৈব নৈব চ।

এই নিয়মগুলি মানলেই ঘোর বর্ষাতেও আপনার চুল থাকবে ঝকঝকে শরতের আকাশের মতো। তবে করোনা আবহে লকডাউনের জন্য বাড়িতে বেশি সময় কাটলেও মনে রাখবেন নিয়মিত শ্যাম্পু করে চুল পরিষ্কার রাখা খুব প্রয়োজন। বাড়িতে থাকলেও রোজ শ্যাম্পু করতে পারলে ভাল। না হলে এক দিন পর পর চুলে শ্যাম্পু দিতেই হবে। একইসঙ্গে করতে হবে কন্ডিশনিংও। না হলে কিন্তু হিতে বিপরীত। চুল রুক্ষ হয়ে পড়বে। চুলকে ভালবাসার তালিকায় শেষ সংযোজন নিয়মিত ট্রিমিং। দেড় মাস অন্তর ট্রিমিং না করলে কিন্তু সব আয়োজনই মাটি।

আরও পড়ুন: অশ্বগন্ধা, আমলকি, কালমেঘ, গুলঞ্চ, কোন ভেষজ উপাদান কখন খাবেন, কেন

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন