বাসন্তী পোলাও ঝরঝরে হবে কী ভাবে? ছবি: শাটারস্টক।
উৎসব হোক বা অতিথি আপ্যায়ন, বাঙালি হেঁশেলে বাসন্তী পোলাও থাকবেই। আলুরদম, ফুলকপির রোস্ট দিয়ে নিরামিষের দিনেও তা যেমন খাওয়া যায়, তেমন বাসন্তী পোলাও আর কষা মাংসর জুটিও অনবদ্য।
তবে পোলাও যদি ঝরঝরে না হয়— তা যেমন দেখনদারিতে পিছিয়ে যাবে, তেমনই যাবে স্বাদেও। অনেক সময়ই পোলাও বানাতে গেলে তা দলা পাকিয়ে যায়। কিন্তু ভাল পোলাওয়ের আসল কথাই হল— প্রতিটি চাল সুসিদ্ধ হবে, একটির থেকে অন্যটি আলাদা হয়ে থাকবে। পোলাও বানানোর নানা রকম পন্থাই রয়েছে। তবে কী ভাবে বাসন্তী পোলাও ঝরঝরে করবেন?
কৌশল ১: অন্যান্য পোলাও বাসমতী চালে হলেও, বাসন্তী পোলাও ভাল হয় গোবিন্দভোগ চালেই। পরিমাণ মতো চাল ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে চালের ময়লার সঙ্গে কিছুটা স্টার্চ বেরিয়ে যাবে। চাল ধুয়ে নেওয়ার পর জল ঝরিয়ে নিন। তার পর সেটি থালায় চারিয়ে দিন। যাতে খুব ভাল করে জল শুকিয়ে যায়।
কৌশল ২: চালের জল শুকিয়ে গেল ঘি হালকা গরম করে তা চালে মাখিয়ে নিন। তবে এই পর্যায়ে যদি কেউ চান, গরম ঘিয়ে হলুদ দিয়ে দিতে পারেন। সেটি চালে মাখালে রং ভাল আসবে, বলছেন রন্ধনশিল্পী।
কৌশল ৩: কড়াইয়ে পরিমাণ মতো ঘি গরম করে গরমমশলা ফোড়ন দিন। কাঁচালঙ্কা চেরা এবং আদাবাটা দিয়ে দিন। একটু নাড়াচাড়া করার পর ঘি মাখানো গোবিন্দভোগ চাল দিয়ে আঁচ কমিয়ে কিছু ক্ষণ ভাজতে হবে। এই ধাপগুলি সঠিক ভাবে মানলে পোলাও ঝরঝরে হবে। চাল না ভাজলে, দলা পাকিয়ে যেতে পারে। এই পর্যায়ে দিয়ে দিন নুন, প্রয়োজন হলে একটু হলুদও। কারণ, পোলাওয়ের বাসন্তী রং হলুদেই আসে।
কৌশল ৪: জলের মাপটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। বেশি হলে চাল গলে মণ্ড পাকিয়ে যাবে। খুব কম হলে আবার চাল সেদ্ধ হবে না। সহজ হিসাব হল, যত কাপ চাল নেবেন, তার দ্বিগুণ জল নিতে হবে। গোবিন্দভোগ চাল সেদ্ধ হতে বেশি সময় লাগে না। জল ফুটে গেলে আঁচ কমিয়ে ঢাকা দিন। ভাপেই রান্না হবে। মিনিট ৭-৮ পরে এক বার ঢাকা খুলে দেখে নিন, নীচটা যেন ধরে না যায়। এই পর্যায়ে চিনি যোগ করুন। শুরুতে চিনি না দেওয়াই ভাল, এতে চাল ঠিক মতো সেদ্ধ হতে চায় না।
কৌশল ৫: জল শুকিয়ে এলে নীচের অংশের চাল খুন্তির সাহায্যে নাড়িয়ে দিন। তবে সাবধানে, তা যেন ভেঙে না যায়। জল শুকিয়ে যাওয়া অবস্থায় আঁচ বন্ধ করে মিনিট ৫-৭ ভাপে রাখলেই চাল পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে যাবে।
কৌশল ৬: বাসন্তী পোলাও কড়াইয়ে না রেখে থালার মধ্যে ছড়িয়ে দিন। এতে তা দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যাবে এবং জমাট বাঁধার ঝুঁকি থাকবে না। পরিবেশনের আগে আবার এক বার তা গরম করে নিতে পারেন।
কৌশল ৭: কোনও কারণে চাল গলে গিয়েছে মনে হলে একই কায়দায় তা দ্রুত ঠান্ডা করে নিন। পোলাও ঘরের তাপমাত্রায় এলে ফ্রিজে ভরে রাখুন আধ থেকে এক ঘণ্টা। ফ্রিজ থেকে বার করে মাইক্রোঅয়েভ অভেনে মিনিট ২ গরম করে নিলেই পোলাও ঝরঝরে হয়ে যাবে।
কৌশল ৮: বাসন্তী পোলাওয়ে কাজু, কিশমিশ ঘিয়ে ভেজে তার পর মেশালে খেতে ভাল হবে।