ছবি : সংগৃহীত।
অপছন্দের কথা শুনলে খারাপ লাগে? সেটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। কিন্তু সেই কথাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ ভেবে নিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় রাগে ফেটে পড়া আর তা করতে গিয়ে নিজের ক্ষতি করা কাম্য নয় কখনওই।
ক্রোধ নাশের কারণ। ক্রোধের বশে নেওয়া সিদ্ধান্ত পতনের কারণ হয়েছে— এমন উদাহরণ নেহাত কম নয়। মহাভারতেও আছে। তাই মানসিক শান্তির জন্য আবেগ সামলানো জরুরি। কঠিন পরিস্থিতিতেও মাথা ঠান্ডা রাখা দরকার। আর তার জন্য অপছন্দের কথা গায়ে মাখলে চলবে না। বরং শিখতে হবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও শান্ত থাকবেন কী ভাবে? কী ভাবেই বা তার জন্য নিজের মস্তিষ্ককে বা ভাবনাচিন্তার ধারাকে প্রস্তুত করবেন।
১। সব সময়ে মনে রাখবেন, উল্টো দিকের মানুষটি যা করছেন, তা আপনার মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারে না। কেউ দুর্ব্যবহার করছেন মানেই, তা আপনার চরিত্রের দোষ নয়। বরং মনে রাখবেন, যে মানুষটি আপনার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁর জীবনেই কোনও না কোনও সমস্যা আছে। তাঁর দুর্ব্যবহার বা কাউকে অসম্মান করার প্রবণতা সেই সমস্যার কারণেও হতে পারে।
২। তাই ওই ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হলে প্রথমেই ক্রোধে ফেটে পড়বেন না। সব সময় প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আগে এক মিনিট অপেক্ষা করুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন। জানতে চান, যা করতে ইচ্ছে করছে, তা কি সত্যিই করা খুব জরুরি। একটু থামুন। একটু ভাবুন। ওই মিনিটখানেকের অপেক্ষা অনেক কিছু বদলে দিতে পারে।
৩। যিনি দুর্বব্যবহার করছেন, তিনি কেন তা করছেন, তা বোঝার চেষ্টা করুন। তিনি বিষয়টি কোন দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখছেন, তা বোঝা জরুরি। তাঁর কথা মন দিয়ে শুনুন। বিশ্লেষণ করুন, তিনি ঠিক কী চাইছেন। সব সময় বিষয়টি শত্রুতামূলক না-ও হতে পারে। তাঁর জায়গায় দাঁড়িয়ে বিষয়টি দেখার অভ্যাস করলে সমস্যা কোথায়, তা বুঝতে সুবিধা হতে পারে।
৪। আপনাকে যে কেউ যা খুশি যাতে বলতে না পারেন, তার জন্য একটি গণ্ডি তৈরি করুন। নিজের কথাবার্তা, কাজ-কর্মের ধরন দিয়েই ওই সীমারেখা টানতে হবে। মনে রাখবেন, আপনি বলার জায়গা দিলে, তবেই মানুষটি দুর্ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। নিজের ব্যক্তিত্ব এবং কাজের মাধ্যমে সীমারেখা টানুন।
৫। এক বললে একই ভাবুন। দশ ভাববেন না। অতিরিক্ত ভাবার অভ্যাস থাকে অনেকের। তাঁরা ছোটখাট বিষয়কেও বড় করে দেখেন। নিজেকে শান্ত রাখার জন্য এবং আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ধ্যানের অভ্যাস কাজে দিতে পারে।
৬। সমালোচনাকে শুধুমাত্র সমালোচনা হিসাবে না দেখে নিজের ভুল বা খামতি চিহ্নিত করুন এবং তা শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আখেরে আপনারই লাভ হবে।
৭। কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত রাখার জন্য ‘ডিফেন্স মেকানিজ়ম’ তৈরি করুন। তা নানা রকম হতে পারে। কেউ কঠিন পরিস্থিতিতে পরলে ঘরের বাইরে খোলা হাওয়ায় চলে আসেন। কেউ হাঁটেন। কেউ একা কোনও স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গায় সময় কাটান। আপনিও তেমনই কোনও অভ্যাস তৈরি করুন। তাতেও ভুল পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বাঁচতে পারেন।