দু’জনের সদ্য সিজার করে সন্তান হয়েছে, এক জনের গলব্লাডারে অস্ত্রোপচার হয়েছে এবং আর এক জন তলপেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি। হাওড়া জেলা হাসপাতালের এই চার রোগীকে ঘটনাচক্রে একই সংস্থার তৈরি একই ব্যাচের স্যালাইন দেওয়া হয়েছিল। এর পরে চার জনেরই জ্বর আসে , কাঁপুনি শুরু হয়। যদিও এ জন্য স্যালাইন-ই দায়ী কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন চিকিৎসকেরা। কিন্তু শুক্রবার রাতের এই ঘটনার পরেই রাজ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাচের স্যালাইন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, অন্য হাসপাতালে আগে ওই ব্যাচের স্যালাইন ব্যবহার করে কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে অসুস্থ হওয়া রোগীদের অবস্থা এখন স্থিতিশীল বলেই জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
হাওড়া হাসপাতালে মজুত ওই ব্যাচের প্রায় ১০ হাজার স্যালাইন বন্ধ করে আমতা হাসপাতাল থেকে স্যালাইন আনিয়ে রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যে ওই ব্যাচের প্রায় দু’লক্ষ স্যালাইন বিতরণ হয়েছিল। আপাতত সেগুলির ব্যবহার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ওই স্যালাইনের নমুনা রাজ্য ড্রাগ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর কথায়, “আগেও ওই সংস্থার ওই ব্যাচের স্যালাইন ব্যবহৃত হয়েছে। অসুবিধা হয়নি। তবু ঝুঁকি নিতে চাইনি বলে সব স্যালাইনের ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। রোগীদের কোনও ওষুধ বা অস্ত্রোপচারের ত্রুটি থেকে শরীর খারাপ হয়েছে কি না, হাওড়া হাসপাতালে স্যালাইন ঠিক ভাবে সংরক্ষিত ছিল কি না, তা দেখতে তদন্তাদেশ দেওয়া হয়েছে।”
হাওড়া হাসপাতালের কিছু চিকিৎসকের অবশ্য দাবি, হাসপাতালে রাখা কিছু স্যালাইনের বোতলে ছত্রাক জন্মেছিল। ঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না-করলে এটা হতে পারে। ওই বোতল থেকে যাঁদের স্যালাইন দেওয়া হয়, তাঁরাই অসুস্থ হন। যদিও এই দাবির সত্যতা এখনও প্রমাণিত নয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আমদাবাদের এক বিখ্যাত ওষুধ ও স্যালাইন প্রস্তুতকারক সংস্থার থেকে সেগুলি কেনা হয়েছিল। আগেও স্বাস্থ্য দফতর তাদের স্যালাইন কিনেছে। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, ওই একই ব্যাচের স্যালাইন একাধিক হাসপাতালে ব্যবহার হলেও কোনও অভিযোগ আসেনি। ওই ব্যাচের স্যালাইনের মেয়াদ ফুরনোর তারিখ (এক্সপায়ারি ডেট) ছিল জুন, ২০১৭।