সাধারণ ভাবে বিশ্বাস করা হয়, ঈশ্বরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনই উপোস করার প্রধান কারণ। উপোস করার ফলে আমাদের শরীর পরিষ্কার হয়। স্বাস্থ্য ভাল থাকলে মনোসংযোগ বাড়ে। রমজানের সময় কিন্তু সারা দিন খাবার বা জল একেবারেই না খাওয়ার নিয়ম নয়। সূর্যোদয়ের আগে খাবার ও জল খাওয়ার পর সারা দিন উপোস করে আবার সূর্যাস্তের পর খাবার ও জলের মাধ্যমে উপোস ভাঙার নিয়ম। উপোসের পাশাপাশি এই সময় রাগ, হিংসা, লোভ সংবরণেরও রেওয়াজ রয়েছে। বছরের এক বিশেষ তিথি মেনে রমজান মাস পালন করা হলেও এর পিছনে সামাজিক কারণ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
সংযম
বদভ্যাস, নেশা ছাড়তে চাইছেন? রমজান আপনাকে সাহায্য করবে। কারণ, রমজানের উপোসের অন্যতম প্রধান শিক্ষা আত্মসংযম। এই এক মাস নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ আনার মাধ্যমে ধূমপান, মদ্যপান, বেশি খাওয়া, কামাসক্তি কাটিয়ে উঠতে পারেন।
মনুষ্যত্ব
জীবনে প্রতিযোগিতা, নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদে আমরা অনেক সময়ই মনুষ্যত্ব থেকে দূরে সরে যাই। ভালবাসা, অন্যদের সম্মান করা, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো মানবিক গুণগুলো আমাদের কাছে গুরুত্ব হারাতে থাকে। রমজানের সময় উপোস করার পাশাপাশি এই এক মাস গুণগুলোও সতর্ক ভাবে চর্চা করার নিয়ম। যা আমাদের ভাল মানুষ হতে সাহায্য করে।
আধ্যাত্মিকতা
উপোস আমাদের সংযম বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে নিজের অন্তরাত্মার সঙ্গে সংযোগ গভীর হয়। না খেয়ে থাকলে খাবারের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতাও বাড়ে।
আরও পড়ুন: কেন রমজানের ইফতারে খেজুর খাওয়ার রীতি?
নির্দিষ্ট সময় মেনে উপোস করা ও খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যকর। উপোস আমাদের ক্লান্ত পৌষ্টিকতন্ত্রকে কিছুটা বিশ্রাম দেয়। হজম ক্ষমতা বাড়ায় ও খাবারের প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর উপাদান শোষণে সাহায্য করে। সেই সঙ্গেই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, কোলেস্টেরল ও সিস্টোলিক ব্লাড প্রেশার কমে যাওয়ার কারণে ওজন কমাতেও সাহায্য করে। আবার, রাগ সংবরণ ও শান্ত থাকা স্ট্রেস কমাতেও সাহায্য করে।
সবচেয়ে ভাল ফল পেতে সেহরি ও ইফতারের সময় (ভোর বেলা উপোস শুরু করার আগে ও সন্ধেবেলা উপোস ভাঙার সময়) হালকা খাবার খান। পকোড়া, সিঙারা, জিলিপি জাতীয় ভারী ভাজা খাবার এড়িয়ে চলুন। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার অন্তত ২ ঘণ্টা আগে খান।