oral health

Oral Health: ওরাল হাইজিন বজায় রাখলে পেরিডনটাইটিসের সমস্যা দূরে রাখা সম্ভব

এটিকেই আগে বলা হত পায়োরিয়া। এটি একবার হলে, তা থেকে পূর্ববর্তী অবস্থায় ফেরা যায় না। তাই ওই অবস্থায় পৌঁছনোর আগে সতর্ক হওয়া বাঞ্ছনীয়।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২১ ০৭:১০
Share:

মুখের ভিতরে সব সময়ে ব্যাকটিরিয়া থাকে। তার মধ্যে কিছু ভাল ব্যাকটিরিয়া, কিছু খারাপ। পেরিডনটাইটিস হল দাঁতের ব্যাকটিরিয়াঘটিত সংক্রমণ। এটিকেই আগে বলা হত পায়োরিয়া। এটি একবার হলে, তা থেকে পূর্ববর্তী অবস্থায় ফেরা যায় না। তাই ওই অবস্থায় পৌঁছনোর আগে সতর্ক হওয়া বাঞ্ছনীয়।

Advertisement

পেরিডনটাইটিস কী?

Advertisement

ভাল করে দাঁত ব্রাশ না করলে, দাঁতের হাইজিন সম্পর্কে সচেতন না হলে দাঁতের উপরে একটি নরম আস্তরণ (পেলিকল) তৈরি হয়। ধীরে ধীরে তা শক্ত হতে থাকে। এবং মাড়ি সংলগ্ন অঞ্চল থেকে শুরু করে হাড়েরও ক্ষতি করতে থাকে। পেরিডনটাইটিসের পূর্ববর্তী পর্যায় জিঞ্জিবাইটিস। এই পর্যায়ে সতর্ক হলে রোগটি ঠেকিয়ে রাখা যায়। অর্থাৎ তা পেরিডনটাইটিসের পর্যায়ে পৌঁছয় না। জিঞ্জিবাইটিসের উপসর্গ হল মাড়ি হালকা ফুলে যাওয়া, রক্ত পড়া এবং মুখ থেকে দুর্গন্ধ বার হওয়া।

উপসর্গ

দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ পারমিতা গঙ্গোপাধ্যায় এ বিষয়ে সচেতন করে দিলেন:

 মুখে দুর্গন্ধ হওয়া।

 মাড়ি ফুলে যাওয়া।

 শক্ত কোনও খাবার খেলে, জোরে ব্রাশ করলে মাড়ি থেকে রক্ত পড়া।

 খাবার খেলে যেন দাঁতে জোর পাওয়া যাচ্ছে না মনে হয়।

 মনে হয়, দাঁতগুলো নড়ে গিয়েছে।

 অনেকের মনে হয়, দাঁত লম্বা হয়ে গিয়েছে। আসলে এর বৈজ্ঞানিক কারণ হল, মাড়ি সরে যায়। সেই জন্যই রোগীর এরকম মনে হতে থাকে।

কোন বয়সে হয়?

সাধারণত পেরিডনটাইটিস পুরো মাড়ি জুড়ে হয়। জুভেনাইল পেরিডনটাইটিস একটি বা একাধিক দাঁতে হয়। সাধারণত ছোটদের এই রোগ হয় না। তবে ডা.গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘যে সব শিশু ঠিকমতো ব্রাশ করে না, বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা (যাদের ব্রাশ করায় অসুবিধে রয়েছে) বা শরীরের অনাক্রম্যতা (ইমিউনিটি) কম থাকলে তাদের হতে পারে। কিন্তু মূলত এটি প্রাপ্তবয়স্কদের হয়। যত দিন দাঁত আছে, তত দিন হতে পারে।’’

কেন হয় পেরিডনটাইটিস?

এই রোগের মূল কারণ হচ্ছে, ওরাল হাইজিনের অভাব। ডা. গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে শুরু করলে অনেকেই ব্রাশ করা বন্ধ করে দেন বা হালকা করে ব্রাশ করেন। যার ফলে ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ বাড়তেই থাকে।

 ধূমপানের কারণে এই রোগ বাড়তে থাকে।

 কারও দাঁত অসমান থাকলে বা এবড়োখেবড়ো হলে, ব্রাশ করার সময়ে ব্রাশটি সব জায়গায় ভাল ভাবে পৌঁছয় না।

 এ ছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবিটিস, প্রেগন্যান্সি, রেনাল অসুখ, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, যাঁরা মুখ দিয়ে শ্বাসগ্রহণ করেন (নাক বন্ধ থাকে), তাঁদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। রেসপিরেটরি ডিজ়অর্ডার থাকলেও এই রোগ বাড়তে পারে।

 লিউকোমিয়া, আপ্লাস্টিক অ্যানিমিয়া, হিমোফিলিয়া, ব্লাড ডিজ়অর্ডারের ক্ষেত্রে, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন কে-এর অভাবে পেরিডনটাইটিস হতে পারে।

চিকিৎসা

এই রোগ সারানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ প্রয়োজন। ঘরোয়া টোটকায় ভরসা না করলেই ভাল।

ডা.গঙ্গোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘প্রথমেই ঠিক ডায়গনোসিস প্রয়োজন। অর্থাৎ রোগটি জিঞ্জিবাইটিস পর্যায়ে রয়েছে না কি পেরিডনটাইটিস পর্যায়ে চলে গিয়েছে, বুঝতে হবে।’’

তার পরে রোগীর স্কেলিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। এই রোগের জন্য দাঁতের মাঝখান দিয়ে পাস ডিসচার্জও (ফ্লুয়িড জাতীয় পদার্থের নিঃসরণ) হয়। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ, মেডিকেটেড টুথপেস্ট এবং মাউথওয়াশ ব্যবহার করাও এই রোগের চিকিৎসার অঙ্গ।

ওরাল হাইজিন বজায় রাখলে এই রোগকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়। বাড়াবাড়ি হওয়ার আগে সতর্ক হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন