থাকুন ট্রাভেল ফিট

বেড়াতে যাওয়ার আগে প্রয়োজন ন্যূনতম ফিটনেস। নইলে কিন্তু বেড়ানোই মাটিঅনেকে ভাবেন, তিনি সারা দিন বাড়িতে এবং বাইরে কাজ করেন। তা হলে তাঁর আলাদা করে ফিটনেস বাড়ানোর কী প্রয়োজন?

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:০১
Share:

আপনি হয়তো পরিকল্পনা করেছেন লাদাখ বেড়াতে যাবেন কিংবা সিল্ক রুট ধরে ট্রেক করবেন... নিদেনপক্ষে রাজস্থান টুর। কিন্তু ফিটনেস লেভেল যদি কম হয়, তা হলে বেড়াতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন। সহজে হাঁপ ধরবে। অল্প হাঁটাহাঁটিতেই পায়ে ব্যথা হবে। বেড়ানোর মজা উপভোগ করতে ফিটনেসের উপরে জোর দিন।

Advertisement

অনেকে ভাবেন, তিনি সারা দিন বাড়িতে এবং বাইরে কাজ করেন। তা হলে তাঁর আলাদা করে ফিটনেস বাড়ানোর কী প্রয়োজন? প্রয়োজন আছে। বাড়ি বা অফিসের চৌহদ্দির মধ্যে হাঁটা আর টানা একঘণ্টা হেঁটে বেড়ানোর মধ্যে বিস্তর ফারাক। ট্রাভেল ফিট হওয়ার জন্য বেড়ানোর আগের এক মাসই যথেষ্ট।

Advertisement

চলতে চলতে ঠিক পৌঁছে যাব

শুধু হাঁটাহাঁটি করেই কিন্তু ফিটনেস লেভেল বাড়ানো যায়। ফাঁকা রাস্তা বা পার্ক বেছে নিন। টানা পনেরো মিনিট নির্দিষ্ট গতিতে হাঁটতে থাকুন। বয়স অনুযায়ী গতি নির্ধারণ করতে হবে। যদি দেখেন হাঁপ ধরছে, তা হলে বুঝবেন ফিটনেসে ঘাটতি আছে। পরপর কয়েক দিন হাঁটার পরে দেখবেন আর সমস্যা হচ্ছে না। ধীরে ধীরে সময় বা দূরত্ব বাড়ান। তবে এমন ভাবে হাঁটবেন, যাতে পায়ের উপরে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে। যাঁদের বয়স কম বা শারীরিক সমস্যা নেই, তাঁরা জগিং করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন, ঠিক ক’মিনিট পরে আপনার হাঁপ ধরছে। এক সপ্তাহ টানা জগিং করার পরে নিশ্চিত ভাবে সেই সময়টা বাড়বে।

ব্যায়ামে বাড়ুক ফিটনেস

কিছু ব্যায়াম পায়ের জোর বাড়ায়। এগুলো টানা এক মাস করলে, বেড়ানোর সময়ে অতিরিক্ত হাঁটাহাঁটিতে সমস্যা হবে না। গায়ের জোর, সহনক্ষমতা বাড়ানোর জন্যও কিছু ব্যায়াম রয়েছে।

• পায়ের জোর বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর ব্যায়াম স্কোয়াট। প্রথম দিন ১৫টা করুন। তার পরে ধীরে ধীরে বাড়ান। মাসের শেষে সংখ্যাটা একশোয় নিয়ে যেতে পারলে তা হবে আপনার অ্যাচিভমেন্ট। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে হিপ পিছনের দিকে ঠেলুন। তার পর বসার চেষ্টা করুন। পুরোপুরি বসবেন না। ঊর্ধ্বাংশ সোজা থাকবে। নিচু হওয়ার সময়ে জোর পড়বে থাইয়ের উপরে, হাঁটুতে নয়। ইন্টারনেটে স্কোয়াটের ভিডিয়ো-ইনস্ট্রাকশন দেখে নিতে পারেন।

• পায়ের স্ট্রেংথ বাড়ানোর আর একটি ব্যায়াম লাঞ্জেস। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে একটা পা সামনে এগিয়ে দিন। পায়ের ভঙ্গি হবে উল্টো ওয়াইয়ের মতো। এ বার পিছনের পা মুড়ে মাটির কাছাকাছি নিয়ে যান। সামনের পা স্বাভাবিক ভাবেই ভাঁজ হয়ে যাবে। ডান ও বাঁ পায়ে ১০ বার করে করুন। সংখ্যাটা ক্রমশ বাড়ান।

• লেগ স্ট্রেচিংও ভাল এক্সারসাইজ়। একটা ছোট চৌকি নিয়ে দেওয়ালের দিকে ঠেলে দিন। পায়ের সামনের অংশে ভর দিয়ে চৌকিতে উঠুন। গোড়ালির অংশ বাইরে থাকবে। এ বার ওঠা-নামা করুন। ১০টা করে তিনটি সেট করুন। এতে পায়ের পেশিও আরাম পাবে। সিঁড়ির প্রথম ধাপেও এটা করতে পারেন।

• ওয়াল প্রেস এমন একটি ব্যায়াম যাতে বডি স্ট্রেংথ বাড়ে। তার সঙ্গে চেস্ট এক্সারসাইজ়ও হয়। দেওয়ালের সমান্তরালে দাঁড়িয়ে দুটো হাত দেওয়ালে রাখুন। দেওয়াল থেকে শরীর কিছুটা দূরত্বে থাকবে। হাতের জোরে নয়, শরীরটা দেওয়ালের দিকে ঠেলুন। কয়েক বার করার পরে বুঝতে পারবেন, চাপটা চেস্টের উপরে পড়ছে।

• শারীরিক শক্তি, পা, পেট, কোমরের জোর, এই তিনটি উপকার হবে এই একটি ব্যায়ামে— বার্ড ডগ। মেঝেতে হাঁটু এবং হাতের তালু রেখে ভর দিয়ে সামনে তাকাবেন। এ বার ডান পা আর বাঁ হাত তুলতে হবে। পরের বার উল্টোটা করবেন। পা পিছনের দিকে একদম সোজা ভাবে তুলবেন। ১৫টি করে তিনটি সেট করুন।

• বাড়িতেই কিছু কার্ডিয়ো এক্সারসাইজ় করে নেওয়া যায়। জাম্পিং জ্যাক যেমন ওজন কমানো, শারীরিক ক্ষমতা বাড়ানোর অব্যর্থ ব্যায়াম। ৩০টি করে তিন সেট করুন।

• স্টেপিং করতে পারেন। ছোট চৌকি নিয়ে দেওয়ালের দিকে ঠেলে দিন। এ বার পায়ের সামনে অংশ দিয়ে সিঁড়িতে ওঠা-নামার মতো করতে থাকুন। যত দ্রুত করবেন তত ভাল। সিঁড়ির প্রথম ধাপেও এটা করতে পারেন।

এক মাস এই ব্যায়ামগুলি করলে নিজেই বুঝতে পারবেন, শারীরিক ক্ষমতা কতটা বেড়েছে। প্রথম দিকে ব্যায়ামের পরে পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হবে। দিন কয়েক পরে দেখবেন, শরীর আগের চেয়ে অনেক ঝরঝরে লাগছে। বেড়াতে যাওয়ার আগে তো বটেই, ফিরে এসেও এক্সারসাইজ়গুলি চালিয়ে গেলে লাভবান হবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন