কাজ আর ব্যক্তিগত জীবন সামলানোর টোটকা দিলেন প্রিয়ঙ্কা চোপড়া! ছবি : সংগৃহীত।
বাঁধা সময়ে কাজ শেষ করে ক’জন বাড়ি ফিরতে পারেন? আর কারা ভাবেন অতিরিক্ত সময় কর্মক্ষেত্রে থেকে কাজ করলে, তা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে?
বহু প্রতিষ্ঠানেই ঘড়ি দেখে অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়াকে কিছুটা বাঁকা নজরে দেখা হয়। আড়ালে ‘ক্লক ওয়াচার’ বলে সমালোচনারও শিকার হন তাঁরা। সে কাজ শেষ করুন বা না করুন বা যেমন তেমন ভাবে করুন— ছাড় পাওয়া যায় না। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা চোপড়া বলছেন, এই যে অতিরিক্ত সময় কর্মক্ষেত্রে থেকে কাজ শেষ করার প্রবণতা— তাকে অকারণে একটি বড় গুণ বলে দেখানো হয়। আসলে এটা গুণ নয়। আর তা তিনি নিজের জীবন দিয়ে উপলব্ধি করেছেন।
প্রিয়ঙ্কা তাঁর পেশায় তাঁর সমসাময়িকদের তুলনায় অনেক বেশি সফল। চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও তিনি যে ভাবে শিকড় উপড়ে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে নিজেকে চিনিয়েছেন, খ্যাতি অর্জন করেছেন, তা সহজ কাজ নয়। সেই তিনি যদি পেশাদারিত্ব নিয়ে কিছু বলেন, তবে তা শুনতে হয়। প্রিয়ঙ্কা বলেছেন, ‘‘আমিও ভাবতাম কাজই সব! ঘণ্টার ঘণ্টার পর কর্মক্ষেত্রে ব্যয় করতাম। ভাবতাম ওটাই জীবন। কিন্তু যত বয়স হল, অভিজ্ঞতা বাড়ল, তখন বুঝলাম, ওটা ঠিক নয় মোটেই। জীবনকে কখনওই অবহেলা করা উচিত নয়।’’
কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে না পারা বহু পেশাদারই দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন কর্মক্ষেত্রে। কর্তৃপক্ষের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়ার চেষ্টায় সমঝোতা করেন ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে।
দিনের শেষে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন যখন, তখন পরিবারের সঙ্গে কথা বলার, আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার সময়টুকুও পান না। প্রিয়ঙ্কা এ প্রসঙ্গে বলছেন, ‘‘ আমার মনে হয়, এই যে সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করা এবং দিনের শেষে প্রায় নিঃশেষিত হয়ে বাড়ি ফেরা, এটাকে বড্ড বেশি রং চড়িয়ে দেখানো হয়। এমনও ভাবা হয়, যাঁরা এটা করেন, তাঁরাই সফল হবেন!আমি অন্তত তা মানি না। আর আমি এটা শিখেছি আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে।’’
কাজের ব্যাপারে প্রিয়ঙ্কার বক্তব্য, পরিশ্রম করা জরুরি। তিনি বলছেন, ‘‘আমি ফাঁকিবাজি করতে বলছি না। যেটুকু কাজ করতে হবে পরিশ্রম করেই করতে হবে। তবে একটু বুদ্ধি খরচ করে সময়কে নিজের হাতেও রাখতে হবে।‘’ প্রিয়ঙ্কা জানাচ্ছেন, কী ভাবে সময়ে কাজ শেষ করতে হবে সেই দক্ষতা তিনি অভিজ্ঞতা থেকেই অর্জন করেছেন। তবে কাজ শেষের পরে তিনি আর ওই বিষয়ে ভাবেন না। কাজের সময় যেমন সবটুকু দেন, তেমনই কাজ শেষে নিজেকে কাজের জায়গা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে নেন। প্রিয়ঙ্কা বলছেন, ‘‘তখন পরিবারই আমার কাছে অগ্রাধিকার পায়। ওদের প্রাপ্য সময়টুকু আমি দিই। নিজেকেও সময় দিই।“