চুলকানি থেকে পোষ্যের ত্বকে একাধিক সমস্যা হতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।
সারমেয়দের মাঝেমধ্যেই পা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ চুলকোতে দেখা যায়। অনেকে বিষয়টাকে বিশেষ পাত্তা দেন না। কিন্তু পোষ্যদের এই স্বভাবের নেপথ্যে নানা কারণ থাকতে পারে। তাই পোষ্য যদি বার বার গা চুলকোয়, তা হলে সতর্ক হওয়া উচিত।
১) পোকার সমস্যা: যত্নের অভাবে পোষ্যের গায়ে পোকা হতে পারে। অনেক সময়ে পোকার কামড় বা লালা থেকে পোষ্যের ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে মূলত লেজ এবং পিছনের দুই পায়ের মাঝের অংশ পোষ্য বার বার চুলকোতে থাকে।
২) পরিবেশের অ্যালার্জি: মানুষের মতোই বাতাসের বিভিন্ন উপাদান থেকে পোষ্যের অ্যালার্জি হতে পারে। ঋতুভেদে ধুলোবালি, ফুলের পরাগ বা অন্যান্য অ্যালার্জেন থেকে তাদের ত্বকে অ্যালার্জি হতে পারে। তার ফলে সে সারা শরীর চুলকোতে শুরু করে। অনেক সময়ে ত্বক লাল হয়ে যেতেও পারে।
৩) খাবার থেকে অ্যালার্জি: নির্দিষ্ট কোনও খাবার থেকে পোষ্যের অ্যালার্জি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে মুখ, কান এবং পায়ুদ্বারে চুলকানির প্রবণতা বাড়ে। অনেক সময়ে খাবার থেকে অ্যালার্জির সমস্যা সারা বছর চলতে পারে। কখনও কখনও তা পোষ্যের পেটের স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলে।
৪) শুষ্ক ত্বক: শীতকাল ছা়ড়াও বিভিন্ন ঋতুতে পোষ্যের ত্বক খসখসে হয়ে যায়। তার ফলে সেখানে চুলকানি শুরু হয়। অনেক সময়ে পুষ্টিগুণের অভাবেও পোষ্যের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।
৫) টেনশন এবং ক্লান্তি: মানুষের মতো সারমেয়ও অবসাদ বা ক্লান্তিতে ভুগতে পারে। মানসিক স্বাস্থ্য ভাল না থাকলে, পোষ্য দেহের বিভিন্ন অংশ চুলকাতে পারে। অনেক সময়ে তারা জিব দিয়ে দেহের বিভিন্ন অংশ চাটতে থাকে।
সমস্যা এড়াতে কী কী করা উচিত
পোষ্যের চুলকানির সমস্যা যে ক্ষতিকারক হতে পারে, তার জন্য আগাম কতকগুলি লক্ষণকে বিচার করা যেতে পারে। পশুরোগ চিকিৎসক চন্দ্রকান্ত চক্রবর্তী বললেন, ‘‘গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলে গত কয়েক বছরে দূষণের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে বলে কুকুরদের ক্ষেত্রে চুলকানির সমস্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।’’ কলকাতা বা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আবহাওয়া বড় লোম যুক্ত কুকুরদের ক্ষেত্রে আদর্শ নয় বলেই তিনি জানালেন। তবে পোষ্যের যত্নে তিনি কয়েকটি পরামর্শ দিলেন—
১) অন্য কুকুরের থেকেও পোষ্যের ত্বকে কোনও সংক্রমণ হতে পারে। তাই এ রকম পোষ্যকে রাস্তার খুব বেশি বের করা উচিত নয়।
২) বাড়িতে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন জায়গায় (যেমন ছাদ) পোষ্যকে রাখলে তার চলাফেরায় অসুবিধা হয় না। কোনও রকম ছোঁয়াচে রোগ থেকেও তাকে সেখানে দূরে রাখা সম্ভব।
৩) পোষ্যকে পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ খাবার দিলে, তার দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ফলে ত্বকের একাধিক সমস্যাও শুধুমাত্র পোষ্যের সুষম আহারের কারণে দূর হতে পারে।
৪) সারমেয়দের জন্য নির্দিষ্ট সাবান এবং শ্যাম্পু কিনতে পাওয়া যায়। তা দিয়ে নিয়মিত তাদের স্নান করানো উচিত। মানুষ এবং পোষ্যের ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য সমান নয়। মানুষের তৈরি সাবান বা শ্যাম্পু দিয়ে পোষ্যকে স্নান করালে তার ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে, যা চুলকানির অন্যতম কারণ।
৫) নিয়মিত পোষ্যের দেহ মাসাজ করলে বা চিরুনি দিয়ে লোম আঁচড়ে দিলে সেখানে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। তার ফলে সিবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে তৈলাক্ত উপাদানের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। সে কারণে ত্বক আরও ভাল থাকে।