Jeff Bezos And Lauren Sanchez Marriage

৬১ পেরিয়ে বিয়ে করলেন আমাজ়ন প্রতিষ্ঠাতা জেফ, পাত্রীর বয়স ৫৫, বার্ধক্যে পৌঁছে বিয়ের কী সুবিধা?

৬০ বছর বয়স পেরিয়ে বিয়ে করলেন আমাজ়ন প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজ়োস। স্ত্রী, সাংবাদিক লরেন সানচেজ়, বয়স ৫৫। জীবনের শেষবেলায় বিয়ে করা নিয়ে সমাজের ছুতমার্গ থাকলেও তার নানাবিধ উপকারিতাও রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৫ ১৭:১৩
Share:

জেফ বেজ়োস এবং লরেন সানচেজ়ের বিয়ে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

৬১ বছর আর ৫৫ বছর। সমাজ নির্ধারিত ‘বিয়ের বয়স’-এর থেকে অনেক বেশি হয়তো, কিন্তু প্রেমের যে কোনও বয়স হয় না। তা হলে প্রেমের বন্ধনেরই বা বয়সের মাপকাঠি কেন থাকবে? প্রমাণ করে দিলেন আমাজ়ন প্ল্যাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজ়োস। ৬১ বছর বয়সে বিয়ে করলেন সাংবাদিক লরেন সানচেজ়কে। যাঁর বয়স ৫৫ বছর। ২০২৩ সালে বাগ্‌দান সেরেছিলেন জেফ ও লরেন। বছর দু’য়েক পরে রূপকথার মতো সেই বিবাহ অনুষ্ঠানের দিকে নজর রেখেছিলেন বিশ্ববাসী। ২৭ জুন, শুক্রবার, ইটালির ভেনিসের সান জর্জিয়ো আইল্যান্ডে বিয়ে সারলেন যুগল। ২৬ জুন থেকে টানা তিন দিনের বিলাসী, রাজকীয় বিবাহ অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে। ২৮ জুন রিসেপশন অনুষ্ঠিত হবে।

Advertisement

জীবনের শেষবেলায় বিয়ে করা নিয়ে সমাজের ছুতমার্গ থাকলেও তার নানাবিধ উপকারিতাও রয়েছে। চিনের এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, কম বয়সে বিয়ে করলে বিবাহবিচ্ছেদের ঝুঁকি বেশি থাকে। সেই গবেষণাতেই দেখা যায়, আমেরিকায় যাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ বেশি হয়, তাঁদের মধ্যে কম বয়সে বিয়ে করা যুগলদেরই সংখ্যা বেশি। তরুণদের অভিজ্ঞতার অভাব থাকায় এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। তা ছাড়া অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তাও বড় ভূমিকা পালন করে এ ক্ষেত্রে। যদিও এই গবেষণা করা হয় ২৫ বা তার কম বয়সের দম্পতিদের নিয়ে। উল্টো দিকে ৫০-৬০ বছর পেরিয়ে বিয়ে করে এই সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না খুব বেশি। ৬০ বছর বয়সে বিয়ে করা এক দিকে যেমন নানা অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে, আবার কিছু সুফলও রয়েছে।

কিছু দিন আগে বাংলার রাজনৈতিক নেতা দিলীপ ঘোষও ৬০ বছর বয়সে বিয়ে সেরেছিলেন বলে নানা কটাক্ষ ধেয়ে এসেছিল তাঁর দিকে। অনেকের মতে, ‘‘৬০ বছরে বিয়ে করা মানায় না। সব কিছুরই নির্দিষ্ট বয়স থাকে, তেমনই বিয়েরও বয়স রয়েছে।’’ এ প্রসঙ্গে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, মানসিক ভাবে ও শারীরিক ভাবে ভাল থাকা যায় বেশি বয়সে বিয়ে করলে। মনোবিদ বলেছিলেন, ‘‘ভারতে বয়স্কদের নানা অসুস্থতার একটা বড় কারণ হিসেবে একাকিত্বকে গণ্য করা হয়। ৫০, ৬০ কিংবা ৭০-এর কোঠায় পৌঁছে বিয়ে করাটা তাই এক দিক থেকে খুব ভাল। কারণ বার্ধক্যে পৌঁছে সময় কাটানোর মানুষ পাওয়া যায়। এই বয়সে দু’জনেই পরিণতমনস্ক। তাই ঝগড়াঝাঁটির ঝুঁকি কম। বরং পরস্পরের সঙ্গলাভে তাঁরা মানসিক ভাবে ভাল থাকবেন।’’

Advertisement

৬০ পেরিয়ে বিয়ে করেন দিলীপ ঘোষ এবং রিঙ্কু মজুমদার। — নিজস্ব চিত্র।

‘ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিক’-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বয়স্ক দম্পতিরা সাধারণত নিজেদের চাহিদা সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা রাখেন। অনেকেই এই বয়সে পেশাগত ভাবে প্রতিষ্ঠিত বলে আর্থিক ভাবে অন্যের উপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। বার্ধক্যে একাকিত্বে ভোগা মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাই এমন বয়সে বিয়ে করলে এক জন সঙ্গীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় মানসিক সমর্থন পাওয়া যায়। ফলে সামগ্রিক ভাবে সুস্থ থাকে মানুষ। তবে, পেনশন, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়, চিকিৎসা বা পারিবারিক অশান্তি, ইত্যাদি কারণে জটিল হতে পারে বৈবাহিক জীবন।তাই বার্ধক্যে পৌঁছে বিয়ে করলে সে সব নিয়ে আগে কথা বলে নেওয়া দরকার যুগলের।

২৫ বছর বয়সে প্রেম করে বিয়ে করা আর ৬০ বছর বয়সে প্রেমের টানে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্যে আলাদা কিছুই নেই। দু’জনের জন্য কী ভাল হবে এবং কী ভাবে কম ঝগড়া হবে, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা সব বয়সের বিয়েতেই থাকে। বিয়ে মানেই তো অন্য এক মানুষের হাত ধরে জীবনের পথে চলা। ভালবাসায় সেই উত্তেজনা থাকলে, বয়স কখনওই সম্পর্ককে ম্লান হতে দেবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement