কোন ধরনের অভিভাবকত্ব সন্তানের জন্য আদর্শ? ছবি: এআই।
ঠিক যে সময়ে সন্তানদের লালনপালনে খোলামেলা পরিবেশ রাখার চেষ্টা করছেন বাবা-মায়েরা, তখনই একটি গবেষণা নতুন করে ভাবার কথা বলছে। নতুন যুগে ছেলেমেয়েদের সঙ্গে অভিভাবকেরা বন্ধুত্ব মাখা সম্পর্ক তৈরি করছেন। স্কুল-কলেজেও শিক্ষকেরা শাসন করা নিয়ে আগের থেকে অনেক বেশি সতর্ক। এমনই সময়ে ব্রিটিশ সরকারের ‘স্টাডি অফ আরলি এডুকেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ (এসইইডি)-এর তরফে হওয়া একটি গবেষণায় দাবি উঠল, অভিভাবকত্বের ক্ষেত্রে কঠরতা, নিয়মানুবর্তিতা প্রয়োজনীয়।
কঠরতা, কর্তৃত্ব ফলানোর অভ্যাস এবং সময় মতো স্বাধীনতা দেওয়ার প্রবণতা, এই দুইয়ের সঠিক মিশ্রণে সবচেয়ে বেশি সফল হচ্ছে শিশুরা। ছবি: এআই।
এসইইডি-র এই গবেষণার জন্য গত ২০১৩ সাল থেকে ইংল্যান্ড জুড়ে প্রায় ৬ হাজার শিশুর উপর নজর রাখা হচ্ছে। গবেষণার লক্ষ্য, প্রাথমিক শিক্ষা এবং লালনপালনের ধরন ও পরিবেশ কেমন ভাবে শিশুর উন্নয়নের উপর প্রভাব ফেলছে, তা দেখা। এক এক ধরনের অভিভাবকত্বে এক এক ধরনের ফলাফল। সব বিচার করে দেখা গিয়েছে, বাবা-মায়ের কঠরতা, কর্তৃত্ব ফলানোর অভ্যাস এবং সময় মতো স্বাধীনতা দেওয়ার প্রবণতা, এই দুইয়ের সঠিক মিশ্রণে সবচেয়ে বেশি সফল হচ্ছে শিশুরা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঠিক সময়ে ‘না’ বলতে পারলে এবং নিয়মশৃঙ্খলায় ভরা রুটিন থাকলে, সন্তানেরা জীবনে সঠিক পথে হাঁটতে পারছে। মূলত ৭ থেকে ১১ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে এমন প্রভাব দেখা গিয়েছে। এই গবেষণা চলবে ২০২৯ সাল পর্যন্ত। তার পর চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ করবেন গবেষকেরা।
এখনও পর্যন্ত যা বোঝা গিয়েছে, স্কুলের পরীক্ষায় কেমন নম্বর পাচ্ছে, তা-ও নির্ভর করছে অভিভাবকত্বের উপর। একটি নির্দিষ্ট সময়ে ধরে যদি বাড়িতে নিয়ম করে ছোটদের পড়াতে বসানো হয় এবং আয়াদের সঙ্গে ব্যস্ত রাখা যায়, তা হলে বিজ্ঞান বিষয়ে দক্ষতা বাড়ছে। অন্য দিকে পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়ের সঙ্গে সময় কাটালে গণিতের প্রতি আকর্ষণ বাড়ছে। গবেষণায় দাবি, সপ্তাহে অন্তত ১০ ঘণ্টা যদি শিশুদের ‘গ্রুপ চাইল্ডকেয়ার’-এ রাখা যায়, তা হলে লেখা, পড়া ও অঙ্কে পারদর্শিতা বাড়তে পারে।