Talk to Your Pet

আর অবোলা নয়, পোষ্যেরা কথা বলবে! তাদের সঙ্গে আড্ডাও দিতে পারবেন আপনি!

সুকুমার রায়ের ‘হযবরল’-য় দাঁড়কাক হাতে শ্লেট নিয়ে নামতা জিজ্ঞেস করেছিল, বাজে কথা বলে মাথা খেয়েছিল এক বেড়াল, দাড়ি নেড়ে গান ধরেছিল রামছাগল। সেই গল্প কথা হয়তো শেষমেশ সত্যি হতে চলেছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ১০:০২
Share:

ছবি : সংগৃহীত।

ধরুন রাস্তায় যাচ্ছেন, ভুল করে কোনও বেড়ালের লেজে পা দিয়ে ফেললেন। ভেবেছিলেন, একটা বিরক্তিসূচক ‘ম্যাও’ শুনেই ব্যাপারটায় ইতি পড়বে। কিন্তু তা হল না। শুনলেন বেড়াল বলছে, ‘‘হতচ্ছাড়া (কিংবা আরও কোনও খারাপ কথা)! কোন দিকে তাকিয়ে রাস্তায় হাঁটা হয়!’’

Advertisement

কিংবা ধরুন দোলের দিন রাস্তার কুকুরের গায়ে খানিক রং ছুড়ে দিয়েছেন। শুনলেন, উল্টো দিকে ছুটতে ছুটতে চারপেয়ে বলে যাচ্ছে, ‘‘বাঁদুরে রং মেখে একটু পরেই নিজে যখন কাদায় গড়াগড়ি দেবে, তখন বুঝবে রংবাজি কাকে বলে!’’

সুকুমার রায়ের ‘হযবরল’-য় দাঁড়কাক কাক্কেশ্বর কুচকুচে হাতে শ্লেট নিয়ে নামতা জিজ্ঞেস করেছিল, বাজে কথা বলে মাথা খেয়েছিল এক বেড়াল— চন্দ্রবিন্দু, দাড়ি নেড়ে গান ধরেছিল খাদ্য বিশারদ রামছাগল ব্যাকরণ শিং। সেই গল্প কথা হয়তো শেষমেশ সত্যি হতে চলেছে। কারণ লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিকস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্স একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছে, যার লক্ষ্য একটাই— না-মানুষদের সঙ্গে মানুষের ভাব বিনিময়ের সুযোগ করে দেওয়া।

Advertisement

এ ব্যাপারে গবেষণার যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ। ৪০ লক্ষ পাউন্ড দিয়ে জেরেমি কলার সেন্টার ফর অ্যানিম্যাল সেন্টিয়েন্স নামের বিশ্বের প্রথম না-মানুষদের ভাষা বোঝার বৈজ্ঞানিক গবেষণাকেন্দ্র তৈরি করেছে তারা। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে পুরোদমে গবেষণা শুরু হবে। আর সেই গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)।

কী ভাবে এটি সম্ভব হতে চলেছে?

সংবাদমাধ্যম ‘গার্ডিয়ান’-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, পোষ্যদের তো বটেই, যে কোনও পশু-পাখিরই আচরণগত বৈশিষ্ট্য জরিপ করে এটি সম্ভব করতে পারে এআই প্রযুক্তি। অন্তত তেমনই সম্ভাবনা দেখেছেন গবেষকেরা। তবে ওই আচরণগত বৈশিষ্ট্যের অর্থোদ্ধারের জন্য এআই ছাড়াও তাদের সাহায্য করবেন স্নায়ুবিজ্ঞানী, দর্শন-তাত্ত্বিক, পশুরোগ চিকিৎসক, আচরণবিধি সংক্রান্ত বিষয়ের গবেষক এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের গবেষকেরা।

কী করবেন এই গবেষকদের দল?

কুকর-বিড়াল থেকে শুরু করে পোকামাকড়, মাছ, কাঁকড়া, সাপেরও শরীরি ভাষাকে কথায় পরিণত করার চেষ্টা করবেন তাঁরা। তার জন্য তৈরি করবেন নানা ধরনের যন্ত্রপাতি। সেন্টার ফর অ্যানিম্যাল সেন্টিয়েন্স-এর অধিকর্তা প্রফেসন জোনাথন বার্চ বলছেন, ‘‘আমাদের পোষ্যরা আমাদের সঙ্গী। তাই অনেক সময়েই আমাদের ইচ্ছে হয়, ওরাও মানুষের মতো কথা বলুক, আনন্দ কিংবা দুঃখের কথা জানাক। এআই প্রযুক্তি এবং গবেষকদের সাহায্য নিয়ে আমরা ওদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করব।’’

পোষ্যের সঙ্গে ভাব বিনিময় কি সত্যি হবে?

ইতিমধ্যেই পোষ্যদের কথা বোঝার কলার এসেছে বাজারে। তবে বার্চ বলছেন, সেই সব কলার পোষ্যদের আচরণকে খুব উপর উপর বিশ্লেষণ করে। পোষ্যদের সঙ্গে ভাষা বিনিময়ের ক্ষেত্রে যার উল্টো প্রভাবও পড়তে পারে। যা ক্ষতিকর। আপাতত তাই এ কাজে নিঁখুত হওয়ার চেষ্টা করতেই শুরু হচ্ছে গবেষণা। যা হয়তো আগামী দিনে পোষ্যের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ককে অন্য স্তরে পৌঁছে দেবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement