heart

কোথায় থাকেন তার উপর নির্ভর করবে হার্টের রোগ হতে পারে কি না!

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:০২
Share:

একটানা শব্দের জের ডেকে আনছে হার্টের অসুখ। ছবি: শাটারস্টক।

কোথায় থাকেন? এ বার এই উত্তরই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে হৃদরোগের ক্ষেত্রে। সম্প্রতি শিকাগোতে অনুষ্ঠিত ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’-এর বিজ্ঞান সমাবর্তনে এমন কথাই শোনালেন গবেষকরা।

Advertisement

আমেরিকার গবেষকদের মতে, উচ্চশক্তিসম্পন্ন শব্দ শোনায় অভ্যস্ত হলে সে সব মানুষের হৃদরোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায় একলাফে অনেকটাই। কার্ডিওভাস্কুলার সংক্রান্ত সমস্যাও বেড়ে যায় অনেকটাই। গবেষকদের নির্দিষ্ট করে দেওয়া ‘ডেঞ্জার জোন’ হাইওয়ে বা বিমানবন্দর এলাকা।

এই গবেষণা জৈবিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে শব্দের নানা ভূমিকার দিকটি ভবিষ্যতে আরও খতিয়ে দেখার পথ খুলে দিল বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। গড় বয়স ৫৬, এমন ৪৯৯জন সুস্থ মানুষকে এই গবেষণার কাজে ব্যবহার করেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: মাত্রাছাড়া দূষণে কমে যাচ্ছে স্মৃতিশক্তি!

শব্দের প্রাবল্যের সঙ্গে জৈবিক ক্রিয়াকলাপ নজরে রাখতে পেট (পজিশন এমিশন টোমোগ্রাফি) ও সিটি স্ক্যান করা হয়। তাদের শরীরের বিভিন্ন কলা, মস্তিষ্ক ও রক্তবাহগুলিশব্দের প্রভাবে কেমন আচরণ করছে তা জানতেই এই পদ্ধতির শরণ নেওয়া হয়।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যে অংশকে দীর্ঘ দিন একনাগাড়ে বেশি শব্দের এলাকায় রাখা হয়েছে তাদের শরীরের অভ্যন্তরে বেশ কিছু পরিবর্তন শুরু হয়েছে।প্রভাব পড়েছে হাইপোথ্যালামাসেও। এমন এলাকায় রাখা ৫০ জনের মধ্যে ৪০ জনেরই কার্ডিওভাস্কুলার সংক্রান্ত সমস্যা শুরু হয়েছে। পরে তাদের কম শব্দের এলাকায় সরালে সে সমস্যা প্রশমিত হয়। ফলে শব্দের প্রভাবে হৃদরোগের বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তারিত ভাবে গবেষণার দিক খুঁজে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

মাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটালের গবেষক আজার রাডফারের নেতৃত্বে এই গবেষণা চলে। তাঁর মতে, তাঁদের এই গবেষণা জৈবিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে চারপাশের ঘটনাকে মেলানোর ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। একটানা শব্দে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে তৈরি হওয়া চাপ ও নানা শব্দের প্রাবল্য ও শব্দতরঙ্গে শরীরের স্নায়ু ও রক্তবাহ জালকের ক্লান্ত হয়ে যাওয়াকে এমন ঘটনার জন্য দায়ী বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন: প্রতি দিন পাতে রাখেন ডিম? জানেন কোনও ক্ষতি হচ্ছে কি না!

এই প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে সহমত শহরের চিকিৎসকরাও। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ প্রকাশ হাজরা জানালেন, ‘‘শব্দের প্রাবল্যের সঙ্গে হার্টের অসুখের সম্ভাবনা থাকা নিয়ে এর আগেও আমাদের দেশ ও বিদেশে নানা গবেষণা হয়েছে। রাডফারের দলের এই গবেষণা অতীতের সব গবেষণার উন্নত সংস্করণ।প্রতিটি শব্দের কম্পাঙ্ক ও প্রাবল্য আমাদের শরীরকে নানা ভাবে প্রভাবিত করে। তাই একটানা একঘেয়ে ভারী শব্দের মধ্যে থাকলে হার্টের রোগ হওয়া অসম্ভব নয়।’’

তবে তাঁর মতে, মাত্র ৪৯৯ জনের মধ্যে করা গবেষণা থেকে এখনই চূড়ান্ত কোনও ফলে যেমন পৌঁছনো সম্ভব নয়। আবার তেমনই ৫০ জনের মধ্যে ৪০ জনই এই অসুখের শিকার হলে তা উড়িয়েও দেওয়া যায় না। তা ছাড়া হার্টের রোগীদের ক্ষেত্রে একটু শান্ত জায়গায় থাকার পরামর্শ আমরা দিয়েই থাকি। অতিরিক্ত শব্দ কেবল কান নয়, মস্তিষ্ক বা স্নায়ুকে দুর্বল করে। শুধু ভারী শব্দই নয়, একটানা যে কোনও শব্দই ক্ষতিকর। তাই সারা ক্ষণ কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শোনাও অসুখকে ডেকে আনে। এ নিয়েও চিকিৎসকরা সচেতন করেন রোগীদের।

সুতরাং হার্টের অসুখের প্রবণতা ঠেকাতে চেষ্টা করুন কম শব্দের জায়গায় থাকতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন