সব্জি সেদ্ধ করার কোন পদ্ধতি বেশি স্বাস্থ্যকর? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
স্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া নিয়ে হিড়িক চারদিকে। তা সে তারকাদের অনুপ্রেরণাতেই হোক, বা সমাজমাধ্যমের জেরে। ফাইবার সমৃদ্ধ সব্জি খাওয়ার চল বেড়েছে। যাঁরা ডায়েট করেন, তাঁরা মশলা ছাড়া সব্জি সেদ্ধ করে খাওয়ার পক্ষপাতী। কিন্তু সেখানে প্রক্রিয়া নিয়ে বেধেছে বিবাদ। কেউ বলেন, সব্জি ভাপে সেদ্ধ করা উচিত, কেউ বলেন জলে ফুটিয়ে। সত্যিই তাই। সব্জিগুলি সেদ্ধ করাই আসল নয়, কী ভাবে সেদ্ধ হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে স্বাদ ও টেক্সচার।
দু’টি পদ্ধতিই ঝক্কিহীন। দুই ক্ষেত্রেই তেলের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যে মুহূর্তে আঁচ বাড়ানো হচ্ছে, তখন থেকেই পাল্টে যাচ্ছে প্রকৃতি। ভিন্ন ভাবে কাজ করা শুরু করছে সেগুলি। জানতে হবে, কোন পদ্ধতিতে সব্জির রং, টেক্সচার, স্বাদ, পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।
কেউ বলেন, সব্জি ভাপে সেদ্ধ করা উচিত, কেউ বলেন জলে ফুটিয়ে। ছবি: সংগৃহীত।
সব্জি ভাপানোর পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে ফুটন্ত জল থেকে উঠে আসা বাষ্পে ধীরে ধীরে সেদ্ধ হয় সব্জি। সরাসরি জলে সেদ্ধ হয় না। যেখানে জল ফুটছে, তার উপর ঝাঁঝরিতে রাখা থাকে সব্জিগুলি। বাষ্প সেগুলির স্বাভাবিক স্বাদ নষ্ট না করে সমান ভাবে সেদ্ধ করে। যেহেতু এগু্লি সরাসরি জলের সংস্পর্শে আসে না, তাই বেশির ভাগ পুষ্টি উপাদান, বিশেষ করে জলে দ্রবণীয় ভিটামিন, যেমন ভিটামিন সি এবং বি-কমপ্লেক্স সব্জির মধ্যেই থেকে যায়। এই কারণেই ভাপানো সব্জির রং উজ্জ্বল থাকে, স্বাদও আরও স্পষ্ট হয়। প্রাকৃতিক মিষ্টত্বও নষ্ট হয় না।
সব্জি ফোটানোর পদ্ধতি
জলে সব্জি ডুবিয়ে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ফোটানোর এই পদ্ধতি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সহজ। ঝক্কিহীন এই পন্থায় দ্রুত সেদ্ধ হয় সব্জিগুলি। অনেকের জন্য একসঙ্গে রান্না করার সময়ে এই পদ্ধতিই কাজে আসে। কিন্তু সমস্যা হল, জলে ফোটানোর সময়ে অনেক পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। আসলে সেগুলি জলে মিশে যায়। যদি আপনি রান্নায় সেই জল ব্যবহার করবেন বলে স্থির করেন, অথবা স্যুপ বানান, তা হলে সেই জল কাজে লেগে যাবে। পুষ্টিগুণও শরীরে পৌঁছোবে। তা ছাড়া, বেশি ক্ষণ ধরে ফোটালে টেক্সচারে পরিবর্তন আসে। তবে আলু, রাঙাআলু, বিটের মতো কিছু স্টার্চযুক্ত সব্জির ক্ষেত্রে ফুটিয়ে খাওয়াই ভাল। ফোটানোর পর সেগুলি হজম করা সহজ হয়ে যায়।়
কোনটি বেছে নেবেন?
ভাপানোর পদ্ধতি খানিক সময়সাপেক্ষ, কিন্তু ,পুষ্টি ও স্বাদের জন্য সঠিক। উল্টো দিকে, ফোটানোর পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ কিন্তু তাতে খানিক অবহেলার শিকার হয় সব্জিগুলি। কিন্তু নরম, প্রায় গলে যাওয়া সব্জি পেতে হলে ফুটিয়ে নেওয়াই ভাল। শিশুদের খাবার বানাতে হলে এই পদ্ধতিই অবলম্বন করা শ্রেয়।