Tree Doctor

ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া ছেড়ে এখন তিনি গাছের চিকিৎসক! গাছ বাঁচানোই পেশা বিজয়ের, নেশাও বটে

ছেলেবেলা থেকেই গাছপালা, পশুপাখি আকৃষ্ট করত বিজয়কে। ই়ঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময়েও নানা ছুতোয় পরিবেশরক্ষার কাজে যোগ দিতেন তিনি। কী ভাবে গাছেদের চিকিৎসক হলেন তিনি?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৩৯
Share:

ই়ঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করার সময়ও নানা ছুতোয় পরিবেশরক্ষার কাজে যোগ দিতেন বিজয়। ছবি: ফেসবুক।

বেঙ্গালুরুর পরিবেশ সুরক্ষা বিষয় যে কোনও আন্দোলনের পরিচিত মুখ বিজয় নিশান্ত। বেঙ্গালুরুতে ২০১৬ সালে প্রস্তাবিত স্টিল উড়ালপুল বিরুদ্ধে লড়াইয়েরও নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। সেই উড়ালপুল তৈরি হলে প্রচুর সংখ্যক গাছ কাটা হত আর সেই কারণেই আন্দোলন শুরু করেন বিজয়। সফলও হন তিনি। পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সচেতনতা তৈরির দায়িত্বভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বিজয়।

Advertisement

বিজয় এক জন ‘গাছের চিকিৎসক’। বিজয়ের মতে, এই পেশার সঙ্গে ভারতীয়রা তেমন একটা পরিচিত নন। ছেলেবেলা থেকেই গাছপালা, পশুপাখি আকৃষ্ট করত তাঁকে। ই়ঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করার সময়ও নানা ছুতোয় পরিবেশরক্ষার কাজে যোগ দিতেন তিনি। কিন্তু শীঘ্রই তিনি বুঝতে পারেন যে, কম্পিউটার সায়েন্স তার জন্য নয়, পড়াশোনা ছেড়ে পরিবেশ রক্ষার কাজে সম্পূর্ণ ভাবে মন দেন।

২০১০ সালে বেঙ্গালুরুতে বিজয়ের উদ্যোগেই প্রথম গাছের ডিজিটাল সেন্সাস শুরু হয়। ছবি: ফেসবুক।

সেই সময়ে বেঙ্গালুরুতে উন্নয়নমূলক বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য প্রচুর সংখ্যক গাছ কাটা হচ্ছিল। সে কারণেই বিজয় নিজে উদ্যোগী হয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করতে শুরু করেন। বেঙ্গালুরুতে গাছ নিয়ে চর্চা শুরু করার পর বিজয় মনে করেন তাঁদের নথিভুক্ত করা প্রয়োজন। ২০১০ সালে বেঙ্গালুরুতে তাঁরই উদ্যোগে প্রথম গাছের ডিজিটাল সেন্সাস শুরু হয়। গুটি কয়েক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বিজয় এলাকা অনুযায়ী গাছ নথিভুক্তকরণ, জিপিএস ম্যাপিং শুরু করেন।

Advertisement

এই কাজ করার সময়ে বিজয় বুঝতে পারেন, গাছের পরিচর্যার বিষয়ে জনসাধারণের যথেষ্ট জ্ঞান নেই। তখন ভারতে গাছের চিকিৎসকের কোনও ধারণা ছিল না। তাঁর মনে হল গাছেরও চিকিৎসার প্রয়োজন। তিনিও এই বিষয়ে আরও পড়াশোনা শুরু করলেন। বিজয় গাছের আচরণ নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সময়ে বুঝতে পারেন যে, উদ্ভিদেরাও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের সাহায্যে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে। কথা বলে। যে যন্ত্রের সাহায্যে গাছের শব্দ শোনা যায়, তা এ দেশে পাওয়া যায় না। বিদেশ থেকে মিডি নামক যন্ত্রটি এনে গাছের শব্দ রেকর্ড করতে শুরু করেন বিজয়। বিষয়টি আরও বেশি করে বুঝতে শুরু করেন।

তাঁর মতে, পরিবেশরক্ষা করার জন্য যুব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। ইতিমধ্যেই তিনি স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেছেন। ভবিষ্যতে যাতে আরও গাছের চিকিৎসক পাওয়া যায়, সে লক্ষেই এগিয়ে চলছেন বিজয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন