ধূমপান স্বাস্থ্যে পক্ষে ক্ষতিকারক। সিনেমা হল থেকে সিগারেটের প্যাকেট, এই বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ আটকে রয়েছে শুধু নিয়মেই। সতর্কীকরণে শুধু ফুসফুসের ছবি থাকলেও শরীরের এমন কোনও অঙ্গ নেই যা ধূমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। হার্ট, রক্তনালী, ফুসফুস, চোখ, মুখ, জননতন্ত্র, হাড়, ব্লাডার ও পৌষ্টিকতন্ত্র সব কিছুর উপরেই ধূমপানের প্রভাব পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর বিশ্বে তামাকের জন্য ৬০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় সরাসরি ধূমপানের কারণে। নিজেরা ধূমপান না করেও পরোক্ষ ভাবে ধূমপানের কারণে মৃত্যু হয় ৬ লক্ষেরও বেশি মানুষের। হিসেব অনুযায়ী, প্রতি ৬ সেকেন্ডে এক জন মানুষের মৃত্যুর কারণ- তামাক।
ভারতের ক্ষেত্রেও হিসেবটা যথেষ্টই ভয়াবহ। এই মুহূর্তে ভারতে ধূমপায়ীর সংখ্যা ২৭ কোটি ৪৯ লক্ষ। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোবাকো সার্ভে ইন্ডিয়ার সমীক্ষা বলছে, মোট ১৬ কোটি ৩৭ লক্ষ ভারতীয় ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করেন। ৬ কোটি ৮৯ লক্ষ ভারতীয় ধূমপায়ী। এবং ৪ কোটি ২৩ লক্ষ ভারতীয় ধূমপানের পাশাপশি ধোঁয়াবিহীন তামাকও সেবন করেন। অর্থাত্, ভারতের ৩৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক (৪৭.৯% পুরুষ ও ২০.৩% মহিলা) কোনও না কোনও ভাবে তামাক সেবন করেন। যে কোনও তামাকজাত নেশার বস্তুতে ৫০০০টি বিষাক্ত পদার্থ থাকে। যার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকারক নিকোটিন, কার্বন মনোক্সাইড ও টার।
নিকোটিনের জন্যই তামাকের প্রতি আসক্তি আসে। যে আসক্তি কোকেনে আসক্তির থেকেও ভয়াবহ। নিকোটিন মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়। মস্তিষ্কে শোষিত হওয়ার পর তা হার্ট, হরমোন ও খাদ্যনালীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
আর্থারাইটিস, কিডনির সমস্যা, চোখের সমস্যা, দাঁতের সমস্যা, ডায়াবেটিস, ইরেকটাইল ডিসফাংশনও ঘটাতে পারে অতিরিক্ত ধূমপান।
আরও পড়ুন: ধূমপান ক্ষতিকারক, ছাড়ার অঙ্গীকার করুন আজই
প্রতি বছর ৩১ মে ‘ওয়ার্ল্ড নো টোব্যাকো ডে’ পালন করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।