রঙিন মাছ বাঁচাতে দাওয়াই ঠান্ডা বোতল

শখ করে রঙিন মাছ পুষতে শুরু করেছিলেন সিউড়ির ব্যবসায়ী সমন্বয়পল্লির বাসিন্দা সুবেশ  ঘোষ। তার পরে ১১ বছর পেরিয়েছে। অ্যাকোরিয়ামের রঙিন বাসিন্দারা কেমন যেন আত্মীয় হয়ে গিয়েছে সুবেশবাবুর।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত

সিউড়ি শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৮ ০১:৩০
Share:

গরমে চিন্তা এদের নিয়েই। দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র

শখ করে রঙিন মাছ পুষতে শুরু করেছিলেন সিউড়ির ব্যবসায়ী সমন্বয়পল্লির বাসিন্দা সুবেশ ঘোষ। তার পরে ১১ বছর পেরিয়েছে। অ্যাকোরিয়ামের রঙিন বাসিন্দারা কেমন যেন আত্মীয় হয়ে গিয়েছে সুবেশবাবুর।

Advertisement

গল্পটা অনেকটা এক সিউড়ি এসপি মোড় লাগোয়া শ্রীভূমিপল্লির বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক সম্পদ দাসেরও। অ্যাকোরিয়ামের বাসিন্দাদের দেখভালে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, টানা ১০ বছর ধরে তার খেয়াল রাখেন সম্পদ ও তাঁর বাবা-মা। একই দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছেন সম্পদবাবুর স্ত্রী শিক্ষিকা চন্দ্রানীদেবীও।

কিন্তু, গরমকাল এলেই চিন্তা বাড়ত সুবেশ, সম্পদবাবুদের। বাঁচবে তো মাছগুলো। আশঙ্কা সত্যি করে একের পর এক মাছ মরলে যেন আত্মীয় বিয়োগের ব্যথাই অনুভব করতেন তাঁরা।

Advertisement

প্রচণ্ড গরমে জলের তাপমাত্রা বেড়ে শুধু পুকুরের মাছ নয়, মারা যায় বাড়ির অ্যাকোরিয়ামের মাছও। তবে জলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে একটা ছোট ও কার্যকর উপায় পেয়ে এ বার মাছের মৃত্যু রুখেছে দু’টি পরিবার। ওই পদ্ধতিতে সুফল পাচ্ছেন শহরের অনেকেই। তবে সকলেই এই কার্যকর পদ্ধতি বের করার জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছেন সিউড়িতে মীনভবনের নীচে একটি রঙিন মাছের স্টলকে।

কী সেই পদ্ধতি? সুবেশবাবুরা জানান, ডিপ ফ্রিজে রাখা জলের বোতল কিছু সময়ের জন্য অ্যাকোরিয়ামে রাখতে হবে। তাতে কমবে তাপমাত্রা। সুস্থ থাকবে মাছ।

শহরের রঙিন মাছের ব্যবসায়ীদের হিসেবে, সিউড়িতে ২ হাজার পরিবার মাছ পোষেন। গাপ্পি, মলি, বিভিন্ন প্রজাতির গোল্ডফিস, অ্যরোয়ানা, রেনবো সার্ক, অস্কার, ফাইটার, টাইগার, অ্যাঞ্জেল সিলভার, সার্ক রয়েছে সে সব মাছের তালিকায়। সেই মাছগুলিই প্রতি বার গরমে কষ্ট পেত। ক্রেতাদের স্বার্থে কার্যকর ওই টোটকার উদ্ভাবন করেন মীন ভবনের একটি স্টলের কর্ত্রী স্মৃতি বিশ্বাস।

স্মৃতিদেবী জানান, ঘরের মধ্যে জলের তাপমাত্রা পৌঁছে যাচ্ছে ৩৮-৩৯ ডিগ্রিতে। যেখানে অ্যাকোরিয়ামে মাছের জন্য আদর্শ ২৮-৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রা। অ্যাকোরিয়ামে তাপমাত্রা এতটা বেড়ে গেলে বার বার জল বদলে বা অন্য উপায়ে তা কমানো কষ্টকর ছিল। প্রাথমিক ভাবে ফ্রিজ থেকে বের করে ঠান্ডা জল ঢেলে ফল মেলেনি। হঠাৎ তাপমাত্রা কমে গিয়েও মাছ মরছিল। তখনই অ্যাকোরিয়ামে ঠান্ডা বোতল রাখার কথা মাথায় আসে।

জেলা মীন আধিকারিক (সমবায়) রণজিৎ মণ্ডল জানান, মাছেরা তাপমাত্রা বদলের সঙ্গে দেহের তাপমাত্রার ভারসাম্য করতে পারে। কিন্তু তাপের তারতম্য খুব বেড়ে গেলে সমস্যা হয়। তা এড়াতে জলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। সেটা ঠান্ডা বোতল ঢুকিয়েই হোক বা অ্যাকোরিয়ামের জল আংশিক বা পুরো বদলে দিয়ে। মাছের মৃত্যু আটাকাতে এটাই পদ্ধতি ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন