একটি ট্রে আর তার সাজেই অন্দরের আয়নায় সুখের ছবি ফুটে উঠতে পারে। বিভিন্ন আকারের, বিভিন্ন ধরনের যেমন কিনতে পাওয়া যায়, তেমনই তা অনেক রকমের কাজেও লাগে। কখনও ফল সাজাতে, ফুল রাখতে, নিছকই এক কাপ কফি বা বসার ঘরের টেবল সাজাতে যোগ্য সঙ্গত করে এই পাত্রাধার।
অজস্র সম্ভার
• মোগলাই রুচি: ফিলিগ্রির কাজ করা রুপোর ট্রে বা রেকাবের মতো ছোট ছোট ট্রে কিনতে পারেন। এর মধ্যে ফল রাখলে দেখতে খুব সুন্দর লাগে। তবে খুব বেশি ফলে বোঝাই করবেন না। চেষ্টা করবেন একথোকা আঙুর বা আপেল জাতীয় ফল রাখার। বেশি জিনিসে সুন্দর কাজটাই যেন ঢাকা না পড়ে যায়। আবার এমন জিনিস রাখবেন না যাতে রুপোর রং নষ্ট হয়। এ ধরনের ট্রে-র উপরে শৌখিন ফিগারাইনস দিয়ে সাজিয়েও বসার ঘরের সেন্টার টেবলে রাখা যায়।
• রাজকীয়: রংবেরঙের রাজস্থানি কাজ করা ট্রে এমনিতেই দৃষ্টিনন্দন। এর উপরে একটা ড্রাই ফ্রুটসের ছোট বাটি আর সুগন্ধি মোমবাতি রাখলেই যথেষ্ট। তবে বেশি সাজিয়ে এর নিজস্ব সৌন্দর্য নষ্ট করবেন না। এই ধরনের ট্রে-র যত্নও ঠিক মতো নিতে হবে। ট্রে-র রং চটে গেলে তা আর ব্যবহার করা যাবে না। তাই কেনার সময়ে জেনে নিন, কী ভাবে পরিষ্কার করবেন। আর এমন কোনও জিনিসও এর উপরে রাখবেন না, যা ট্রে-র রং নষ্ট করতে পারে।
• সাদামাঠা: খয়েরি, সাদা, আকাশি, তুঁতে পালিশ করা বা পালিশবিহীন কাঠের ট্রে-ও পাওয়া যায়। এই ধরনের ট্রে একটা ব্যাকগ্রাউন্ডের মতো কাজ করে। তাই এর উপরে নানা রকম জিনিস দিয়ে সাজাতে পারেন। মিনিটবে একটা গাছ, নকশা করা কোস্টার বা টিসু বক্স রাখতে পারেন। এমন করে জিনিস রাখবেন যেন, জিনিসগুলির ফাঁক দিয়ে কাঠের রং ও টেক্সচার ধরা দেয়।
• আধুনিক: কোয়ার্কি প্রিন্ট বা বিভিন্ন জিয়োমেট্রিক আকারের ট্রে-ও কিনতে পাওয়া যায়। স্নানঘরে এ রকম একটা ট্রে-র উপরে সাবান, শ্যাম্পু, তেল আর সঙ্গে ছোট একটি ভাসে ফুল দিয়ে সাজিয়ে রাখতে পারেন। ট্রে-র ভিতরটা নোংরা হলে পরিষ্কার করে নেওয়া সুবিধে হবে। পুরো তাক পরিষ্কার করতে হবে না। তবে স্নানঘরের ট্রে যেন ওয়াশেবল হয়, খেয়াল রাখবেন। আর কাচের ট্রে-ও স্নানঘরে ব্যবহার না করাই ভাল।
• কাজে লাগার মতো: বেতের ঝুড়ির মতো ট্রে বা তালপাতার হাতে বোনা ট্রে যে কোনও কাজে ব্যবহার করতে পারেন। ফল রাখা থেকে স্নানঘরের তোয়ালেও ভাঁজ করে রাখা যায় এর উপরে। এই ট্রে জল দিয়ে ধুয়ে নেওয়াও সহজ। তবে বৈঠকখানায় এ ধরনের ট্রে ব্যবহার না করাই ভাল।
• ইচ্ছেমতো: বাড়িতে পুরনো দিনের বারকোষ বা রেকাবি থাকলে সেগুলিও বার করে ট্রে-র মতো ব্যবহার করতে পারেন। নিজের ইচ্ছে ও দরকার মতো সাজাতে পারেন। ধরুন, আপনি সেলাই করতে ভালবাসেন, বারকোষের উপরে এক দিকে কয়েকটা রঙিন সুতোর বান্ডিল আর তার পাশে একটা ফ্রেমে নকশাতোলা কাপড় আটকে সাজিয়ে রাখতে পারেন। আবার বাড়িতে পার্টি থাকলে একটা ছোট কুকির জার, কয়েকটা ডয়েলি পেপার আর ক্যান্ডির জার রাখতে পারেন। দেখতে ভাল লাগবে, কাজেও দেবে।
খেয়াল রাখবেন
• ট্রে-র আকার বিভিন্ন ধরনের হয়। বিশেষত গোলাকার ট্রে অনেকটা জায়গা নেয়। তাই কোথায় ট্রে রাখবেন, সেই অনুযায়ী আকার বাছতে হবে। ছোট জায়গার জন্য আয়তাকার বা ডিম্বাকার ট্রে বাছুন।
• খুব বেশি ফিলিগ্রির কাজ থাকলে সেই ট্রে পরিষ্কার করা কিন্তু খুব ঝামেলার। তাই সূক্ষ্ম ছিলেকাটা কাজ থাকলে পরিষ্কার করার পদ্ধতি জেনে কিনুন।
• সাবান, মোম ইত্যাদি অন্য একটি পাত্রের মধ্যে রেখে, তবেই ট্রে-র উপরে রাখুন।
• ফল বা ফুল রাখার আগে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। যদি কাঠের ট্রে হয়, তা নষ্ট হয়ে যাবে জলে।
• ট্রে কেনার আগে তা পরিষ্কার করবেন কী ভাবে, তা জেনে নিন দোকানে। না হলে খুব সুন্দর একটা ট্রে কিনলেও ব্যবহারের ভুলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ছোট-এমন কত জিনিস দিয়েই রূপকথার মতো সাজিয়ে তোলা যায় বাড়ি। নিজের মন থেকেও টুকটাক জিনিস দিয়ে সাজিয়ে ফেলতে পারেন বাহারি ট্রে।