চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে মালদহ মেডিক্যালের সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ। বুধবার মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগে আবারও হাসপাতালে ভাঙচুর। এ বার ঘটনাস্থল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। পথ দুর্ঘটনায় আহত আনিকুল শেখ (২০) নামে এক যুবককে সোমবার ভর্তি করা হয়েছিল মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বুধবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। এরপরেই মৃতের আত্মীয় ও প্রতিবেশিরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু করে বলে অভিযোগ। ঘণ্টাখানেক ধরে চলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই যুবকের বাড়ি কালিয়াচকের সুজাপুরে। ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। সোমবারই মুম্বই থেকে বাড়ি ফিরেছে তিনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ১০টা নাগাদ কালিয়াচকের সুজাপুরের হাতিমারি এলাকায় জাতীয় সড়কের উপর যাত্রী বোঝাই একটি ম্যাক্সি ট্যাক্সি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় একটি মোটরবাইকের উপর। সেই সময় মোটরবাইকে ছিলেন আনিকুল শেখ এবং তাঁর বন্ধু আসিফ ইকবাল। চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের স্থানান্তরিত করেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
বুধবার দুপুর ১২টা নাগাদ আনিকুলের মৃত্যুর পর উত্তেজনা ছড়ায় হাসপাতাল চত্বরে। মেল সার্জিক্যাল বিভাগে কর্তব্যরত নার্সদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেয় মৃতের পরিজন। সেই সময় নার্সদের হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনাস্থলে হাসপাতালের নিরাপত্তা রক্ষীরা ছুটে গেলে বিক্ষোভকারীরা নিচে নেমে সিটি স্ক্যান বিভাগে ভাঙচুর চালায়। মৃতের বাবা আসাদুল্লা শেখ বলেন, ‘‘বিনা চিকিৎসায় ছেলেটা মারা গেল। আমরা বারবার চিকিৎসক ও নার্সদের কাছে ছুটে যাওয়ায় উল্টে আমাদের গালিগালাজ করা হয়। তাঁদের উদাসীনতার জন্য এদিন আমার ছেলেকে মরতে হল।’’ কর্তব্যরত এক নার্স বলেন, ‘‘আমাদের তরফ থেকে সবরকম চেষ্টা করা হয়েছে। ওনারা আমাদের কেবিনে ঢুকে ধাক্কাধাক্কি করেন।’’ এদিনের ঘটনায় কোনও তরফ থেকেই থানায় অভিযোগ জানানো হয়নি।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার জ্যোতিষ চন্দ্র দাস বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে আমরা খতিয়ে দেখব।’’ জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হাসপাতালে একটা গোলমাল হয়েছিল। পুলিশ গেলে মিটে যায়। কোনও তরফেই অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’