Lionel Messi’s Kolkata visit

যুবভারতীতে মেসি-বিশৃঙ্খলার বিস্তারিত খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও! ‘ভুল কারণে’ খবরের শিরোনামে কলকাতা

আমেরিকার ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ থেকে শুরু করে ব্রিটেনের ‘গার্ডিয়ান’, ‘বিবিসি’ কেউ বাদ যায়নি। যুবভারতীর বিশৃঙ্খলার বর্ণনা রয়েছে স্পেন, ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমেও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৫৮
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আন্তর্জাতিক মঞ্চে মুখ পুড়ল কলকাতার। শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে লিয়োনেল মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে যে বিশৃঙ্খলা হল, বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমে তা জায়গা করে নিয়েছে।

Advertisement

আমেরিকার ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ থেকে শুরু করে ব্রিটেনের ‘গার্ডিয়ান’, ‘বিবিসি’ কেউ বাদ যায়নি। যুবভারতীর বিশৃঙ্খলার বর্ণনা রয়েছে স্পেন, ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমেও। বোঝাই যাচ্ছে, যেহেতু আন্তর্জাতিক চরিত্র মেসি এবং তিনি গোটা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয়, তাঁকে ঘিরে যে ঘটনা শনিবার কলকাতায় ঘটল, তাতে বিচলিত বিদেশি সংবাদমধ্যম।

‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ সংবাদপত্রের শিরোনাম, ‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক পরিস্থিতি এবং বিশৃঙ্খলার পর লিয়োনেল মেসির ভারত সফরের আয়োজক আটক’। ওই প্রতিবেদন যখন লেখা হয়েছে, তখনও মেসির ‘গোট ইন্ডিয়া ট্যুর’-এর আয়োজক শতদ্রু দত্ত গ্রেফতার হননি। পুলিশ তাঁকে আটক করেছিল। পরে শতদ্রু গ্রেফতার হন।

Advertisement

দীর্ঘ প্রতিবেদনে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ যুবভারতীর ঘটনার বিবরণ দিয়েছে। তারা লিখেছে, ‘‘মেসিকে স্পষ্ট ভাবে দেখাই যায়নি। যেখানে এক ঘণ্টারও বেশি সময় তাঁর যুবভারতীতে থাকার কথা ছিল, সেখানে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে দ্রুত মাঠ থেকে বার করে দেন।’’

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সাংবাদিক সম্মলনের বক্তব্যও জায়গা পেয়েছে তাদের প্রতিবেদনে। যুবভারতীর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমা চেয়ে নেওয়া এবং তদন্ত কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস যে ‘আমি কিছু বলব না’ মন্তব্য করেছেন, সেটিও লিখেছে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’।

ক্রিকেটের প্রসঙ্গও তাদের প্রতিবেদনে এনেছে আমেরিকার এই সংবাদমাধ্যম। লিখেছে, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় যথেষ্ট সংখ্যক ফুটবল সমর্থক রয়েছেন। অথচ ভারতে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট।’’

ইংল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র শিরোনাম, ‘লিওনেল মেসির ভারত সফর শুরু হল বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে’। প্রতিবেদনে তারা লিখেছে, ‘‘কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদেরা মেসিকে এতটাই ঘিরে রেখেছিলেন যে, কিছুক্ষণ পরেই তিনি বিরক্ত হয়ে যান। মাত্র ২২ মিনিট মাঠে থাকার পর নিরাপত্তার কারণে মেসিকে বাইরে নিয়ে যাওয় হয়। এতেই যুবভারতীর জনতা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। চেয়ার ও বোতল ছোড়া শুরু হয়।’’

বিবিসি-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেসির ভারত সফরে বিশৃঙ্খলার নজির কলকাতায়। কেউ কেউ ১২ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটে এসেছিলেন মেসিকে এক ঝলক দেখতে। কিন্তু গ্যালারির প্রায় কোনও জায়গা থেকেই তাঁকে দেখা যায়নি।

পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমা চাওয়ার কথাও বলা হয়েছে বিবিসি-র প্রতিবেদনে। লেখা হয়েছে, ‘এই ঘটনায় তিনি গভীর ভাবে মর্মাহত ও স্তম্ভিত’।

ব্রিটেনের সংবাদপত্র ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর মতে, অব্যবস্থার জন্যই যুবভারতীর ঘটনা ঘটেছে। তারা লিখেছে, ‘‘যুবভারতীর দর্শকেরা অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।’’ শতদ্রুর গ্রেফতার হওয়ার খবর তারাও লিখেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় যে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, সেই খবর তারা প্রতিবেদনে জানিয়েছে।

ক্লাব ফুটবলে মেসি যে দুই দেশে খেলেছেন সেই স্পেন এবং ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমেও জায়গা পেয়েছে যুবভারতীর ঘটনা। স্পেনের ক্রীড়া দৈনিক ‘মার্কা’-র শিরোনাম, ‘চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা’। তারা লিখেছে, ‘‘ইন্টার মায়ামির ফুটবলার মাঠে ঢুকেই মাত্র ২২ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে যান। অথচ সমর্থকেরা হাজার হাজার টাকা খরচ করে এসেছিলেন শুধুমাত্র তাঁকে দেখবেন বলে।’’

যুবভারতীর ঘটনায় ফ্রান্সের দৈনিক ‘লা ক্যুইপ’-এর শিরোনাম ‘ডিস্টার্বিং’। তারা লিখেছে, ‘‘প্রচারমূলক সফরে এসেছিলেন মেসি। তাঁকে ঘিরে থাকা মানুষের ভিড়ের জন্য দর্শকদের হতাশা চরমে পৌঁছয়। মাঠের অভিজ্ঞতা সমর্থকদের জন্য মর্মান্তিক।’’

অনেকেই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতা অনেক দিন পরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচনার বিষয় হল। সম্ভবত দ্বিতীয় বার। এবং সেই ভুল কারণে। যুবভারতীর ঘটনা অনেককেই মনে করিয়ে দিচ্ছে সিঙ্গুরকাণ্ড। সিঙ্গুর থেকে টাটা তাদের ন্যানো গাড়ি তৈরির কারখানা সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর এ রাজ্য তখন এ ভাবেই জায়গা পেয়েছিল ব্রিটেন-আমেরিকার সংবাদমাধ্যমে।


আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement