Lifestyle News

অবসাদের মোক্ষম ওষুধ হাঁটা, রোজ হাঁটুন

হাঁটার সঙ্গে অবসাদের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা উঠে এল নতুন এক সমীক্ষায়। শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০১৭-র থিম ছিল অবসাদ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ১২:০০
Share:

হাঁটার সঙ্গে অবসাদের পারস্পরিক সম্পর্কের কথা উঠে এল নতুন এক সমীক্ষায়। শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০১৭-র থিম ছিল অবসাদ। এ দিন ম্যাক্স বুপা ওয়াক ফর হেলথ সার্ভে-র প্রকাশিত চতুর্থ সংস্করণ বলছে, যে ভারতীয়রা নিয়মিত হাঁটেন তাদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই অনুভব করেছেন এর ফলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হয়েছে।

Advertisement

দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু ও জয়পুর। দেশের এই চার রাজ্য জুড়ে ছিল ম্যাক্স বুপার সমীক্ষা। তারা বলছে, যে কোনও বয়সেই হাঁটা স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণ করা ৪২ শতাংশ বয়স্ক ও ৫০ শতাংশ অল্পবয়সী (১৯৮২-২০০৪ সালের মধ্যে জন্মানো) জানিয়েছেন হাঁটা তাদের স্ট্রেস ও টেনশন কমাতে সাহায্য করে। এই অল্পবয়সীদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা, ৬৬ শতাংশ দিল্লির বাসিন্দা, ৫৩ শতাং‌শ মুম্বইয়ের বাসিন্দা ও ৪৮ শতাংশ জয়পুরের বাসিন্দা। এদের মধ্যে ৪০ শতাংশকেই উদ্বুদ্ধ করেছে বিভিন্ন ওয়াকিং অ্যাপস ও গ্যাজেটস। যা তাদের স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়িয়ে দিয়েছে।

এর সঙ্গেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাদের হাঁটার অভ্যাস নেই তাদের মধ্যে অবসাদে ভোগার প্রবণতা অনেক বেশি। এমনকী, যারা হাঁটেন না তাদের মধ্যে ১৫ শতাংশ অবসাদ ও উচ্চ স্ট্রেসের সমস্যায় ভোগার কথা স্বীকারও করেছেন। অন্য দিকে, যারা অবসাদের ভুগছেন এবং চিকিত্সকের পরামর্শে নিয়মিত হাঁটছেন, তাদের মধ্যে ৫৯ শতাংশ জানিয়েছেন হাঁটার সময় তারা অবসাদের কথা ভুলে যান, ৫০ শতাংশ জানিয়েছেন হাঁটা তাদের জীবনের একঘেয়েমি কাটাতে সাহায্য করে, ৩৯ শতাংশ মনে করেন হাঁটা তাদের খুশি রাখে ও ২৬ শতাংশ বলেছেন হাঁটার ফলে তাদের ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনে ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।

Advertisement

অল্পবয়সীদের (১৯৮২-২০০৪ সালের মধ্যে জন্মানো) মধ্যে ১৯ শতাংশ জানিয়েছেন হাঁটার ফলে তাদের নিজের প্রতি বিশ্বাস বেড়েছে, অন্তর্দর্শন উন্নত হয়েছে। ২১ শতাংশ বয়স্ক ব্যক্তিও এই একই প্রভাবের কথা জানিয়েছেন। নিজেকে চেনা যেমন সহজ হয়েছে তেমনই হাঁটার ফলে অবসাদে ভোগা মানুষ বাড়ির বাইরে লোকজনের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগও পেয়েছেন।

তবে সমীক্ষায় হাঁটা সম্পর্কে এর উল্টো মানসিতাও লক্ষ্য করা গিয়েছে। ৪৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন তারা সারা দিনের কাজের মধ্যে হাঁটার সময় বের করে উঠতে পারেন না। ২৯ শতাংশ জানিয়েছেন তারা হাঁটতে বেরোলে বোর হয়ে যান, ২১ শতাংশ জানিয়েছেন কেউ সঙ্গে দেওয়ার নেই বলে তারা হাঁটতে চান না, আর ২১ শতাংশ জানান হাঁটার ফলে মানসির স্বাস্থ্য উন্নত হওয়ার বিষয় তারা জানতেনই না।

ম্যাক্স বুপার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও আশিস মেরহোত্রা বলেন, আজকের ইঁদুর দৌড় ও স্ট্রেসের যুগে অবসাদ সবচেয়ে বড় সমস্যা। বর্তমান প্রজন্ম, বিশেষ করে ১৯৮২ সালের পর যারা জন্মেছে তাদের মধ্যে এই সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। যার প্রধান কারণ, কাজের চাপ ও বন্ধুর অভাব।

শুধু অবসাদ কাটানো নয়, হাঁটার আরও অনেক ভাল প্রভাবের কথাও এ দিন তুলে ধরেছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান, নিয়মিত হাঁটা আমাদের কর্মক্ষমতা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে, অনিদ্রায় ভোগার সমস্যা কমিয়ে আনতে পারে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত, সতর্কতা বাড়াতে পারে ৫৬ শতাংশ পর্যন্ত, রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে ৪৮ শতাংশ পর্যন্ত ও ৫০ শতাংশ পর্যন্ত এনার্জির মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ল্লির ৫৪ শতাংশ ও বেঙ্গালুরুর ৫৯ শতাংশ অল্পবয়সী জানিয়েছেন হাঁটার পর তারা অনেক বেশি সতর্ক অনুভব করেন, এনার্জিও অনেক বেড়ে যায়।

আরও পড়ুন: নিজেরই এই ৫ বদভ্যাস হতে পারে আপনার অবসাদের কারণ

হাঁটা নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোই এ দিন মূল লক্ষ্য ছিল বিশেষজ্ঞদের। কারণ, অংশগ্রণকারীদের ৭৫ শতাংশই জানিয়েছেন, কোনও অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়ার পরই তারা নিয়মিত হাঁটা শুরু করেছেন। দিজয়পুরের ৬৭ শতাংশ বয়স্ক মানুষ জানিয়েছেন, হাঁটার ফলে তাদের হাঁটু ও গাঁটের ব্যথা কমে গিয়েছে।

আবার অংশগ্রহণকারীদের ৬০ শতাংশই হাঁটতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন বিভিন্ন অ্যাপ ও গ্যাজেটের কারণে। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে অ্যাপের জনপ্রিয়তা বেশ বেশি। ৫৪ শতাংশ অল্পবয়সী মহিলাই জানিয়েছেন, অ্যাপ তাদের হাঁটতে উদ্বুদ্ধ করে। অ্যাপের ব্যবহার মুম্বইয়ে অল্পবয়সীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি(৭২%), এরপর রয়েছে দিল্লি(৭০%)। বয়স্কদের মধ্যে মাত্র ৫০ শতাংশ গ্যাজেট ব্যবহার করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন