বিস্কুটের অসংখ্য ছিদ্র কি একপ্রকার নকশা? ছবি: ফ্রিপিক।
মারি হোক বা ক্রিমক্যাকার— বিস্কুটের স্বাদে যতই বৈচিত্র থাক না কেন, বেশির ভাগের মধ্যে একটা সাধারণ মিল চোখে পড়বেই। তা হল— বিস্কুটের গায়ে অজস্র ছিদ্র। চোখে পড়েছে সকলেরই। তবে কেউ হয়তো ভেবেছেন এ নেহাতই নকশা। কিন্তু আসলে কি তাই!
ময়দা, জল, চিনি, ফ্যাট দিয়ে তৈরি হয় বিস্কুট। সমস্ত উপকরণ মিশিয়ে তার পর সেগুলিকে পাতলা করে গড়ে নিয়ে ট্রে-তে পর পর সাজিয়ে বেক করতে দেওয়া হয়। তা যখন বেক করার জন্য দেওয়া হয়, তখন তার মধ্যে বাতাস এবং বাষ্পও তৈরি হয়। ছিদ্র না থাকলে, সেই বাষ্প বেরোতে না পেরে ছোট ছোট বাব্ল বা বুদ্বুদ তৈরি করত। ছিদ্রগুলি তা হতে দেয় না।
বিস্কুটের এই ছিদ্রগুলিকে বলা হয় ‘ডকার হোলস’। ডকার নামক একটি যন্ত্র দিয়ে তা তৈরি করা হয়। ওই ছোট ছোট ছিদ্রগুলি তৈরি করা হয় যাতে, বেক করার সময়ে সহজে বায়ু চলাচল করতে পারে তার ভিতর দিয়ে। বিস্কুট ফেঁপে না যায়।
ছিদ্রটি কতটা দূরত্বে হবে, কোন অবস্থানে রাখতে হবে তার পিছনেও রয়েছে বিজ্ঞান। অঙ্ক কষেই ছিদ্রের সংখ্যা-দূরত্ব স্থির করা হয়, যাতে ভিতরের বাতাস বেরিয়ে যেতে পারে।
স্বাদেও প্রভাব ফেলে?
ছিদ্রগুলি বিস্কুটের স্বাদেও প্রভাব ফেলে। বিস্কুট কতটা বাদামি হবে, মুচমুচে হবে তা মেলার্ড রিঅ্যাকশন বা নির্দিষ্ট একটি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত। মেলার্ড রিঅ্যাকশনের সময় বাতাস বেরিয়ে যেতে সাহায্য করে ছিদ্রগুলি। কোনও কোনও বিস্কুট কৌটোয় অনেক দিন রাখলেও মিইয়ে যায় না। তার কারণ ওই ছিদ্রের দ্বারা আর্দ্রতারও ভারসাম্য বজায় রাখা হয়। যত ভাল ভাবে আর্দ্রতা বা ময়েশ্চার নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, বিস্কুট ততই মুচমুচে হবে।
ব্যবসায়িক বিস্কুট উৎপাদক সংস্থাগুলি আধুনিক যন্ত্রের দ্বারা এই ছিদ্রগুলি করে। সেগুলি অনেক বেশি বিজ্ঞানসম্মত ভাবে করা হয়। তবে শুধু বিস্কুট নয়, পিৎজ়া বা নির্দিষ্ট কিছু পাই বা পিঠে তৈরির ক্ষেত্রেও এমন ছিদ্র তৈরি করা হয়।
ছিদ্র না থাকলে কী হত?
ছিদ্র না থাকলে বিস্কুটে বুদ্বুদ তৈরি হত। আকার নষ্ট হয়ে যেতে পারত। মুচমুচে হত না। এমনকী স্বাদেও এর প্রভাব পড়ত। পাশাপাশি এই ছিদ্রেরও এক ধরনের নকশা রয়েছে, যা বিস্কুটের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।