পরিকাঠামোর ঘাটতি মেটানোর ব্যাপারে আগে দফায় দফায় প্রতিশ্রুতি দিয়েও অনেক মেডিক্যাল কলেজই শেষ পর্যন্ত কথা রাখতে পারেনি। তাই কেন্দ্রীয় সরকারই এ বার বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এই ব্যাপারে মুচলেকা আদায়ের রাস্তা নিয়েছে। মেডিক্যালের হারানো আসন ফেরত পাওয়ার পন্থা হিসেবেই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুচলেকা সংগ্রহ করছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সামগ্রিক ভাবে সেই প্রতিশ্রুতিপত্র মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)-র কাছে জমা দেবে তারা। সেই সঙ্গে পৃথক মুচলেকা দেবে নিজেরাও।
ডাক্তারির ছাঁটাই আসনের কে ক’টি ফেরত পেতে পারে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার বিভিন্ন রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। এ দিনই আলোচনার ভিত্তিতে কিছু কিছু আসন উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে যাবে বলে আশা করছিল অনেক কলেজ। কিন্তু সব অধ্যক্ষকে নিয়ে একত্রে কোনও বৈঠকই হল না। তার বদলে আলাদা আলাদা ভাবে কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে কথা বলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কর্তারা। কোন কলেজে পরিকাঠামোর কী কী ত্রুটি রয়েছে, কত দিনে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব ইত্যাদি জানিয়ে মুচলেকার চিঠিও জমা নেওয়া হয়। আজ, মঙ্গলবার সেই সব চিঠি এবং কেন্দ্রের তরফে একটি সামগ্রিক আবেদনপত্র এমসিআইয়ের কাছে পেশ করা হবে। কোন কলেজ ক’টি আসন ফেরত পেতে পারে বা আদৌ ফেরত পাবে কি না, মুচলেকার ভিত্তিতেই সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে এমসিআই।
এ দিন বিভিন্ন রাজ্যের মোট ৮৮টি কলেজের অধ্যক্ষেরা দিল্লি যান। কিন্তু যৌথ ভাবে আলোচনা না-করে পৃথক পৃথক বৈঠক করা হল কেন?
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তা জানান, এ ক্ষেত্রে সকলকে নিয়ে বৈঠক করে কোনও লাভ নেই। কোন কলেজ নিজেদের সমস্যা কী ভাবে মেটানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, সেটা জানানোই আসল কথা। “কলেজের সেই লিখিত প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের তরফে আমরাও এমসিআই-কে মুচলেকা দেব। অন্যান্য বারের মতো আবার যে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে না, এ বার যে সত্যি সত্যিই কাজের কাজ হবে, সেটা আমরা এমসিআই-কে জানাব,” বললেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওই কর্তা।
কিন্তু পরিকাঠামোর ব্যাপারে রাজ্যগুলির তরফে কীসের ভিত্তিতে প্রতিশ্রুতি দেবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক?
স্বাস্থ্যকর্তারা জানান, হারানো আসন ফেরত পেতে এ ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই। চলতি বছরের মধ্যেই যাতে অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়, সেই বিষয়ে রাজগুলির উপরে নজরদারি চালাবে কেন্দ্র।
শিক্ষক-চিকিৎসকের অভাব-সহ পরিকাঠামোয় বিভিন্ন ধরনের ঘাটতির কারণে গোটা দেশে প্রায় ১৫ হাজার মেডিক্যাল আসন বাতিল করে দিয়েছিল এমসিআই। তার মধ্যে এ রাজ্যের আসন ছিল ১০৫০টি। পরে সেগুলোর মধ্যে ৪০০ আসন ফেরত দেওয়া হয়। বাকি আসনগুলি ফেরানোর জন্য রাজ্যের তরফে দফায় দফায় এমসিআইয়ের কাছে দরবার করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাতে কোনও ফল হয়নি। এই পরিস্থিতিতে রাস্তা একটাই। কেন্দ্র আসন ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে এমসিআই-কে রাজি করাতে পারে অথবা এমসিআইয়ের ছাঁটাই-সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে নিজেরা আসন ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।