উদ্যোগ নেই শুয়োর সরানোর, সোয়াইন ফ্লু-র আশঙ্কা শহরে

রাজ্যে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যু খবরের মধ্যেও শিলিগুড়ি শহরে বসতি এলাকা থেকে শুয়োর সরানোর উদ্যোগ নেই। এনসেফ্যালাইটিস পরিস্থিতিতে শহরে অভিযান চালিয়ে পুরসভার তরফে যে শুয়োর ধরা হয়েছিল এবং বসতি এলাকা থেকে দূরে আলাদা জায়গায় রাখা হয়েছিল পরিস্থিতির চাপে সেগুলি ছেড়ে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ তাতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৪০
Share:

শিলিগুড়ি শহরে অবাধে ঘুরছে শুয়োর। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যে সোয়াইন ফ্লুতে আক্রান্ত এবং মৃত্যু খবরের মধ্যেও শিলিগুড়ি শহরে বসতি এলাকা থেকে শুয়োর সরানোর উদ্যোগ নেই। এনসেফ্যালাইটিস পরিস্থিতিতে শহরে অভিযান চালিয়ে পুরসভার তরফে যে শুয়োর ধরা হয়েছিল এবং বসতি এলাকা থেকে দূরে আলাদা জায়গায় রাখা হয়েছিল পরিস্থিতির চাপে সেগুলি ছেড়ে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ তাতে উদ্বেগ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যেও। টিকিয়া পাড়া, নেপালি বস্তি, চেকপোস্ট এলাকা, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে লালা লাজপত রায় সরণি, পুরসভার কুরেশি মহল্লা, বিবেকান্দ রোড, টাউন স্টেশন চত্বর-সহ বিভিন্ন জায়গাতেই দৃশ্যত শুয়োরের দাপাদাপি। একটিদে পুর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা। অপর দিকে শহরে শুয়োর পালন নিষিদ্ধ বলে প্রাণী সম্পাদ বিকাশ দফতর সে ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা নিতে রাজি নয়। এই দুয়ের চাপান উতোরে শহরে শুয়োর পালন চলছেই।

Advertisement

গত জুলাই অগস্ট মাসে উত্তরবঙ্গ জুড়ে এনসেফ্যালাইটিসের দাপট ঠেকাতে শুয়োর ধরার তোড়জোড় পড়েছিল। শিলিগুড়ি শহরেও শুয়োর ধরতে নামে পুরসভা। সে সময় শতাধিক শুয়োর ধরাও হয়। দাবিদার বিহীন প্রচুর শুয়োর ধরে শিলিগুড়ি ইস্টার্ন বাইপাসের উপকন্ঠে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের কাছে সেগুলিকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু দেখভালের সমস্যা এবং প্রাণী সম্পাদ বিকাশ দফতরের সহযোগিতা না মেলায় মাস দুয়েক আগে সেগুলিকে ছেড়ে দিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তাতে সেগুলি শহরময় ফের ছড়িয়ে পড়েছে। পুরসভার নরম মনোভাব দেখে শহরের মধ্যেই শুয়োর পালনের প্রণতা ফের বেড়েছে। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, “প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের সহায়তা না-পেলে পুরসভার পক্ষে শুয়োর ধরা এবং সেগুলিকে রাখা আমাদের পথে সমস্যর। দ্রুত তাদের সঙ্গে কথা বলে শহরে শুয়োর পালন ঠেকাতে জরুরি বৈঠক ডাকা হবে।” শহরে কোথাও শুয়োর পালন হলে তা অবৈধ ভাবে হচ্ছে বলে জানান প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের উত্তরবঙ্গের ডেপুটিডিরেক্টর অমল হালদার। তিনি বলেন, “পুর এলাকায় শুয়োর পালন নিষিদ্ধ। তা বন্ধ করার দায়িত্ব পুরসভাকেই নিতে হবে। প্রাণী সম্পাদ বিকাশ দফতর সে ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা নেবে না।”

পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের কয়েকজন আধিকারিকের কথায়, অন্তত ৮০ টির মতো শুয়োর ইস্টার্ন বাইপাসের কাছে পুরসভার জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কুকুর নির্বীজকরণের জন্য যে ঘর তৈরি হয়েছিল সেগুলিতে রাখা হয়। প্রতিদিন জন্তুগুলির খাবার জোগার করাই দায় হয়ে পড়ে। গত নভেম্বরের শেষের দিকে যে সমস্ত শুয়োরের মালিক রয়েছে তাঁদের ডেকে শুয়োরগুলির একাংশ দিয়ে দেওয়া হয়। তবে সতর্ক করা হয়েছে শুয়োর নিয়ে তাঁরা যেন বসতি এলাকায় না রাখেন। অন্যত্র পালন করেন। বাকি প্রায় ৫০টির মতো দাবিদার বিহীন শুয়োর ওই এলাকাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়। ঠিক মতো খাবার না মেলায় অন্তত ২০ টি শুয়োর মরেও গিয়েছে। তা ছাড়া শুয়োর পিছু যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা তা পুর এলাকায় দেওয়া হয়নি। কেন না শহরে এমনিতেই শুয়োর পালন নিষিদ্ধ। পরিকাঠামো না থাকায় তারা শুয়োর ধরার কাজ তাদের পক্ষে করা অনেকটাই সমস্যার বলে দাবি করেন পুর কর্তৃপক্ষ। কেন না এনসেফ্যালাইটিস পরিস্থিতি মোকাবিলায় শুয়োর ধরতে নেমে তাদের সেই ্ভিজ্ঞতা হয়েছে। জাল ছাড়া প্রশিক্ষিত কর্মী ছাড়াই শুয়োর ধরতে নেমে হিমসিম খেতে হয় পুর কর্মীদের। তা ছাড়া শুয়োর ধরে কোথায় রাখা হবে জন্তুগুলিকে তা নিয়ে প্রথমটায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement