চিকিত্‌সায় গাফিলতি, অভিযোগ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে

দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়া এক রোগীর চিকিত্‌সায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিত্‌সকদের একাংশের বিরুদ্ধে। শনিবারের ঘটনা। ওই রোগীর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, গত ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের পর মহম্মদ কুদ্দুসের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিলিগুড়ি হাসপাতাল থেকে তাঁকে রেফার করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। ঠিক মতো চিকিত্‌সা না-হওয়াতেই সমস্যা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০০
Share:

দুর্ঘটনায় পা ভেঙে যাওয়া এক রোগীর চিকিত্‌সায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের চিকিত্‌সকদের একাংশের বিরুদ্ধে। শনিবারের ঘটনা। ওই রোগীর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, গত ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারের পর মহম্মদ কুদ্দুসের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিলিগুড়ি হাসপাতাল থেকে তাঁকে রেফার করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। ঠিক মতো চিকিত্‌সা না-হওয়াতেই সমস্যা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ।

Advertisement

পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, বর্তমানে অস্ত্রোপচার করা পায়ে ঘা হয়ে দুর্গন্ধ বার হচ্ছে। গত ১৩ অক্টোবর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বহির্বিভাগে দেখালে সেখানে ড্রেসিং এবং চিকিত্‌সার পর শিলিগুড়ি হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিত্‌সকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। শুক্রবার শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ, সেখানে ঠিক মতো চিকিত্‌সা হচ্ছে না। শনিবার ফের তাঁকে রেফার করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে।

হাসপাতালে ওই রোগীর অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিত্‌সক তাপস কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, “অস্ত্রোপচার ঠিক মতোই হয়েছে। তবে রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ফুসফুসের সংক্রমণ হওয়ায় উন্নত চিকিত্‌সার জন্য সে সময় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। শুক্রবার ওই রোগী ফের ভর্তি হয়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেছি। পায়ে অস্ত্রোপচারের অংশে ঘা হয়নি। গোড়ালির কাছে ঘা হয়েছে।” তিনি জানান, পায়ের ওই ঘা সারাতে কসমেটিক সার্জেন দরকার হতে পারে। ‘স্কিন গ্রাফটিং’ করার দরকার হবে।

Advertisement

হাসপাতালের অ্যানাস্থেসিস্ট সুধীন দাসের দাবি, রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। শিড়দাঁড়ায় ইঞ্জেকশন করে অজ্ঞান করা হয়েছে। তাতে ফুসফুসে প্রভাব পড়ার ব্যাপার নেই।

রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর মোটরবাইকের ধাক্কায় মহম্মদ কুদ্দুসের বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ ভেঙে গেলে ভর্তি করানো হয় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে। ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছে, যে কোনও সময় ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা এবং উন্নত চিকিত্‌সার দরকার বলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করেন চিকিত্‌সক। কুদ্দুসবাবুর স্ত্রী সবেদা বেগম এবং ভাইপো ফৈয়জ রাজার অভিযোগ, “ঠিক মতো শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা না করে অস্ত্রোপচার করাতেই ওই সমস্যা হয়েছে। চিকিত্‌সক তাঁদের অ্যানাস্থেসিস্টের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। অথচ কেউই পরিষ্কার করে কিছু বলছিলেন না। এই পরিস্থিতিতে ভর্তি করানো হয় নার্সিংহোমে। পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় নার্সিংহোম থেকে ২ অক্টোবর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। ৪ অক্টোবর সেখান থেকে ছুটি পান রোগী। এখন পায়ে গোড়ালির কাছে ঘা হয়ে দুর্গন্ধ বার হচ্ছে।”

এ দিন রোগীকে রেফার করা হলে তা নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে জরুরি বিভাগে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যুব কংগ্রেসের কর্মীদের একাংশ। হাসপাতালেই রোগীর চিকিত্‌সা ব্যবস্থার দাবি তোলেন তারা। পরে পরিবারের লোকেরা মেডিকাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সব্যসাচীদাস জানান, ওই রোগীর চিকিত্‌সার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন