নার্সিংহোমের সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ তুলে নার্সিংহোমের সামনে দেহ ফেলে রেখে প্রায় সাত ঘণ্টা বিক্ষোভ দেখালেন পরিবারের লোকেরা। তাঁদের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসা হওয়ায় ওই মহিলাকে অন্যত্র স্থানান্তর করেও লাভ হয়নি। তবে কোনও লিখিত অভিযোগ হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কালনার বৈদ্যপুর মোড় থেকে কয়েক পা এগোলেই রেলগেটের পাশে রয়েছে একটি বেসরকারি নার্সিংহোম। ১৫ জুলাই কালনা ১ ব্লকের কাঙ্কুরিয়া পঞ্চায়েতের মুড়াগাছা গ্রামের আলিকা ইয়াসমিন (২৫) সেখানেই প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন। আলিকার বাড়ির লোকজনের দাবি, ওই দিনই অস্ত্রোপচার করে একটি মেয়ের জন্ম দেয় আলিকা। কিন্তু রাত থেকেই প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ওই হাসপাতালে ভর্তি অন্য রোগীদের থেকে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে আলিকার প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে দেখে তার পাশের শয্যার এক রোগী নার্সকে ডাকেন। খবর দেওয়া হয় চিকিৎসকেও। অভিযোগ, রাতেই বাড়ির লোকেদের না জানিয়ে জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া হয় আলিকার। পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় পরের দিন সকাল ১১টা নাগাদ আলিকাকে বর্ধমান সদরের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও রক্ত বন্ধ না হওয়ায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ছ’দিন ভেন্টিলেশনে থাকার পরে বুধবার রাতে সেখানেই মারা যায় আলিকা।
বৃহস্পতিবার কলকাতা থেকে দেহ এনে বৈদ্যপুরের ওই নার্সিংহোমের সামনে রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন আলিকার আত্মীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, নার্সিংহোম ভুল চিকিৎসা করায় কলকাতায় নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি আলিকাকে। ক্ষতিপূরণেরও দাবি করেন তাঁরা। সকাল আটটা থেকে শুরু হওয়ায় বিক্ষোভ ক্রমশ বাড়তে থাকে। কাছাকাছি কালনা-পাণ্ডুয়া রোডও অবরোধ করেন মৃতার বাড়ির লোকজন। উত্তেজনা বাড়ায় পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার। তারও ঘণ্টাখানেক পরে অবরোধ ওঠে।
তবে নার্সিংহোমের তরফে বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা বলতে চাননি। অভিযুক্ত চিকিৎসককে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। নার্সিংহোমে গিয়ে দেখা যায়, সব ক’টি লোহার গেট বন্ধ। ঘটনার জেরে আতঙ্কে রয়েছেন অন্য রোগীরা। অনেকেরই দাবি, গণ্ডগোল চলায় ঠিকমতো পরিষেবা পাননি তাঁরা। দেখা মেলেনি চিকিৎসকদের।