যে পুরসভার মেয়র নিজে চিকিৎসক, সেখানকারই দু’টি ওয়ার্ডে কমপক্ষে ৫০ জন অজানা জ্বরে আক্রান্ত। অথচ, পুরসভার কোনও হেলদোল নেই। এমনকী, সে কথা জানেন না জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভার দাবি, তারা রোগ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিয়েছে। আবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর এর পুরো দায় চাপিয়েছে পুরসভার উপরেই। কিন্তু দোষারোপের পালার মধ্যে হাওড়ার ওই দুই বাসিন্দাদের রোগভোগ অবশ্য কমছে না।
হাওড়া পুরসভার ৩৪ ও ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, অজানা জ্বরে আক্রান্তদের মধ্যে ১২ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তা জানার পরেও শুক্রবার দিনভর দু’টি ওয়ার্ডেই পুরসভার কোনও প্রতিনিধি আসেননি। স্বাস্থ্য দফতর অবশ্য বিষয়টি জানার পরে একটি দলকে ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করতে পাঠায়।
পুর সূত্রের খবর, হাওড়ার ওই দু’টি এলাকায় অজানা জ্বরের প্রকোপ শুরু হয়েছে মহালয়ার দিন থেকে। আক্রান্তরা জানান, এই জ্বরের লক্ষণ হল কাঁপুনি দিয়ে প্রচণ্ড জ্বর, সারা শরীরে যন্ত্রণা, মাথা ব্যথা-গা গুলোনো। কিন্তু ওষুধ খাওয়ার পর ১০ দিন কেটে গিয়েছে। তা-ও জ্বর কমছে না।
এই জ্বরে আক্রান্ত কোনা এক্সপ্রেসের পাশে বেতড় মোড়ের কাছে সর্বমঙ্গলা কলোনির ৫০টি পরিবারের এক জন অজানা জ্বরে আক্রান্ত হলে তা সংক্রমিত হয়েছে পুরো পরিবারে। একই অবস্থা শিবপুরের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মতলা লেনে। বাসিন্দারা জানান, জ্বরে আক্রান্ত অনেকেরই শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাঁরা এখন কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
যদিও পুর স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক আশুতোষ কুণ্ডুর দাবি, “জ্বরের প্রকোপ কমাতে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে। নর্দমা পরিষ্কার হয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গির রক্ত পরীক্ষা জেলা স্বাস্থ্য দফতর করে। ওঁদের জানিয়েছি।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা দেবাশিস রায়ের পাল্টা দাবি, “এলাকাটি পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক্তিয়ারে। ওঁরা জানালে ব্যবস্থা নিতাম। পুরসভা কিছুই জানায়নি। তবু আমাদের একটি দল রক্ত-নমুনা সংগ্রহ করেছে।”